‘জনসভা করছি না, পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে যেন যুদ্ধ করছি’

রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেছেন, ‘জনসভা করছি না, পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে যেন যুদ্ধ করছি। রাজশাহী শহরে কোনো প্রকার গণপরিবহন চলছে না। পরিবহন মালিক সমিতিকে ডেকে, হুমকি দিয়ে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।’
বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। স্টার ফাইল ছবি

নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেট, চট্টগ্রাম এবং ঢাকার পর এবার রাজশাহীতে সমাবেশ করতে যাচ্ছে নবগঠিত বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আগামীকাল (৯ নভেম্বর) নগরীর মাদ্রাসা মাঠে বিকেল ৩টায় এই সমাবেশ হওয়ার কথা রয়েছে। সমাবেশে যোগ দিতে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা হবেন। তবে এর আগে রোডমার্চ করে তাদের সমাবেশে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও অনিবার্য কারণবশত তা স্থগিত করা হয়।

রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলম বলেন, ‘নগরীর মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা আবেদন করেছিল। কিন্তু সেখানে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার কেন্দ্র থাকায় তাদের গণকপাড়া মোড়ে (প্রেসক্লাবের সামনে) সমাবেশ করতে বলা হয়। কিন্তু এতেও তারা আপত্তি জানানোর পর, অবশেষে তাদের পছন্দমতো জায়গাতেই সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’

আমাদের রাজশাহী সংবাদদাতা জানিয়েছেন, আগামীকালের সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজশাহী নগরী জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে পুলিশ। শহরের মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি, টহল টিমের তৎপরতা দেখা গেছে। এদিকে, কোনো কর্মসূচি বা পূর্বঘোষণা ছাড়াই ধর্মঘট পালন করছে আন্তঃবিভাগ বাস শ্রমিকেরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। এছাড়া, গতরাতে রাজশাহী জেলায় পুলিশ মোট সাত জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে গ্রেপ্তার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় বিএনপির অনেক নেতাকর্মীই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলেও জানান তিনি।

গ্রেপ্তারকৃতদের ব্যাপারে পুলিশ বলছে, পুরনো এবং নতুন নাশকতা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেন, ‘জনসভা করছি না, পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে যেন যুদ্ধ করছি। রাজশাহী শহরে কোনো প্রকার গণপরিবহন চলছে না। পরিবহন মালিক সমিতিকে ডেকে, হুমকি দিয়ে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।’

‘গতরাতে আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। অনেককে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করার কি অধিকার আমাদের নেই, আমরা কি এ দেশের নাগরিক নই, আমরা কি পাকিস্তান-ভারতে বসবাস করছি?’ অভিযোগ করেন তিনি।

এতো সমস্যার সম্মুখীন হয়েও সমাবেশ সফল হওয়ার আশা জানিয়ে বুলবুল বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ সফল হবে, কারণ- জনগণ এই সরকারকে আর দেখতে চায় না। শেখ হাসিনার গণতন্ত্রে আর তাদের বিশ্বাস নেই। সব বাধা ডিঙিয়ে সমগ্র রাজশাহীবাসী স্বতস্ফূর্তভাবে এই সমাবেশে অংশ নেবে।’

এর আগে, সমাবেশের অনুমতি পাওয়া না পাওয়া, গ্রেপ্তার আতঙ্ক ও নানা বাধা-বিপত্তির মধ্যেই সিলেটের বন্দরবাজার এলাকায় রেজিস্ট্রি মাঠে ২৪ অক্টোবর প্রথম রাজনৈতিক সমাবেশ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এর পর, গত ২৭ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকায় বিএনপির দলীয় কার্যালয় নসিমন ভবনের সামনের নূর আহম্মদ সড়কে দ্বিতীয় সমাবেশ করে তারা। সবশেষ গত ৬ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ ও সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত করার জন্যে জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের পরামর্শও দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

1h ago