কিপিং করা মুশফিকের কাছে ব্যাটিংয়েরই একটা ‘প্রক্রিয়া’
টেস্টে মুশফিকুর রহিমের উইকেটকিপিং করা নিয়ে কতো সমালোচনা, কতো প্রশ্ন। দলের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান, মিডল অর্ডারের মূল ভরসা। তিনি কেন কিপিং করে বাড়তি বোঝা নেবেন? মুশফিকও নাছোড়বান্দা, উইকেটকিপিং তিনি করবেনই। জিম্বাবুয়ে সিরিজ দিয়েই ছয় টেস্ট পর ফেরেন কিপিংয়ে। এবারও ৫৮৯ মিনিট ব্যাটিং করার পর পরই নেমে গেলেন গ্লাভস হাতে। কিপিং মনের ভেতর এমনভাবে গেঁথে নিয়েছেন, এটা তার কাছে মনে হচ্ছে ব্যাটিংয়েরই একটা প্রক্রিয়া।
২০১৩ সালে গলে প্রথম টেস্ট ডাবল সেঞ্চুরির করার ম্যাচেও কিপিং করেছেন মুশফিক। পাঁচ বছর পর আজ আরেক ডাবল সেঞ্চুরিতেও উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান তিনি। টেস্টে উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলে দু’টি ডাবল সেঞ্চুরি নেই বিশ্বের আর কারো।
এমন রেকর্ডের পর নিশ্চিতভাবেই টেস্টে তার উইকেটকিপিং করার যুক্তি হয়েছে জোরালো। মানসিক স্বস্তি পাওয়া মুশফিকের কথাবার্তাও মিলল সে প্রমাণ, ‘কিপিং যেটা বলি আমাকে অনেক বেশি সাহায্য করে। এমন নয় কিপিং করলে আমি প্রতি ম্যাচেই একশ বা দুইশ করব। কিন্তু কিপিংটা একটা প্রক্রিয়া এবং আমি এই প্রক্রিয়ায় অনেক বেশি বিশ্বাসী। আমার মনে হয় এটা অনেক সাহায্য করে। এখন টিম ম্যানেজমেন্ট যেটা চাইবে সেটা তো তাদের ব্যাপার। সেভাবে অবদান রাখতে চেষ্টা করি।’
৪২১ বল খেলেছেন। টেস্টে এক ইনিংসে এত বেশ বল বাংলাদেশের আর কেউ খেলেনি। ৫৮৯ মিনিট ক্রিজে থাকাও রেকর্ড। দুই দিনের ছয় সেশনের কোনো না কোনো সময় ব্যাটিং করতে হয়েছে তাকে। এত দীর্ঘসময় ব্যাটিং করার পর কোথায় বিশ্রাম নেবেন, নেমে গেছেন গ্লাভস হাতে। তার কাছে ক্লান্তির চেয়ে কাজ করে চ্যালেঞ্জ জেতার তাদিগ। সবাই খেলবে আর তিনি ড্রেসিং রুমে ঝিম মেরে বসে থাকবেন এমনটা যেন হওয়ারই নয়, ‘ অনেক সময় কিপিং করে বা ব্যাটিং করে ওয়ার্কলোড বেশি হয়ে যায়। কিন্তু আমার জন্য এটা চ্যালেঞ্জ, এবং আমি চ্যালেঞ্জ উপভোগ করি। আমি চাই না যে ড্রেসিংরুমে বসে থাকি। আমি যতক্ষণ মাঠে থাকব আমি যেন দলের জন্য কিছু করতে পারি, নইলে খারাপ লাগে। সামনে এই দায়িত্ব আমাকে দিলে আমার মনে হয় আমি ভালো ফল দিতে পারব।’
লম্বা ইনিংস খেলেই গ্লাভস হাতে নেমে পড়ার আরেকটি কারণও আছে মুশফিকের। সাহায্য করতে চেয়েছিলেন নাকি বোলারদেরও, ‘কিপিং করেছি কারণ কোন উইকেটে ছিলাম এই ফিডব্যাক যেন আমি আমার বোলারদের দিতে পারি। আমি যত সহজে বুঝতে পারব অন্যরা পারবে না।’
‘এরকম একটা হয়েছিল, তাইজুল যখন একটা প্রান্ত থেকে বল করছিল আমি বললাম যেন অন্যদিক থেকে করে। কারণ শন উইলিয়ামস যখন অন্য দিক থেকে বল করছিল বল একটু উঠছিল নামছিল। ওই এন্ড থেকে লেফট আর্ম স্পিন ডিফিকাল্ট হবে। মাসাকাদজা কিন্তু ওই এন্ড থেকে আউট হয়।’
Comments