জিম্বাবুয়ের প্রতিরোধের পর শেষ বিকেলের আলো
সফরকারীদের উপর বিশাল রানের বোঝা চাপিয়ে তৃতীয় দিনে উইকেট থেকে টার্ন-বাউন্সের আশায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মিরপুরের উইকেটে দেখা গেল না তেমন কিছু। বরং সারাদিনই প্রতিরোধ দেখালেন জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা। পাঁচ বছর পর টেস্টে সেঞ্চুরি করা ব্র্যান্ডন টেইলর আর পিটার মুরের ব্যাটে শেষ সেশন পর্যন্ত লড়াই জারি রেখেছিল জিম্বাবুয়ে। শেষ বিকেলে সেই প্রতিরোধ ভাঙেন দুই স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ আর তাইজুল ইসলাম।
আগের দিন নিয়েছিলেন একটি, এদিন আরও চার উইকেট নিয়ে তাইজুল ঢুকে গেছেন সাকিব আল হাসান আর এনামুল জুনিয়রের সঙ্গে। তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে টানা তিন ইনিংসে পাঁচ উইকেট পেয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৩০৪ রানে নবম উইকেট হারানোর পর দিনের খেলা শেষ হয়ে যায়। চোটের কারণে ছিটকে পড়া টেন্ডাই চাতারা আর ব্যাট করতে নামতে পারেননি। তবে বাংলাদেশ ফলোঅন করাবে নাকি আবার ব্যাট করতে নামবে এই সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষায় রেখেছে।
জিম্বাবুয়ের থেকে ২১৮ রানে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশের হাতেই মিরপুর টেস্টের নাটাই। শেষ দুইদিনে উইকেট থেকে আরও টার্ন পাওয়ার কথা স্পিনারদের। তা হলে এই ম্যাচ থেকে ফল বের করা অসুবিধার হওয়ার কথা নয় বাংলাদেশের।
সকালে নাইটওয়াচম্যান ডোনাল্ড ত্রিরিপানোকে নিয়ে নেমে পথম ঘন্টায় কোন উইকেট হারাতে দেননি ব্রায়ান চারি। তবে এই সময়ে চলেছে খালেদ আহমেদের সঙ্গে তার লড়াই। আগের দিন খালেদের বাউন্সার ডাক করতে গিয়ে হেলমেটে নিয়েছিলেন চারি। এদিন একই দৃশ্য দেখা গেল আরও গোটা তিনেক।
কিছুটা হকচকিয়ে যাওয়া চারি খালেদের বলে স্কয়ার লেগে তার ক্যাচ দিয়েছিলেন, ফেলে দেন তাইজুল ইসলাম। নিজের অভিষেকে দুর্ভাগাই বলতে হবে খালেদ। দুই দিনে তার বলে ক্যাচ পড়েছে দুটি। তাইজুলের দিনের শেষ দিকে অবশ্য দুর্দান্ত এক ক্যাচে পুষিয়ে দিয়েছেন বাকিটা।
প্রথম সেশনে খালেদের তোপে চারিকে মনে হচ্ছিল বেশ কাবু। পরে অবশ্য সামলে নিয়ে সেই খালদকেই পুলে সীমানা ছাড়া করেছেন। শুরুর আড়ষ্টতা কাটিয়ে বাড়াচ্ছিলেন রান। এরমধ্যে অবশ্য নাইটওয়াচম্যান ত্রিরিপানোর বাধা ফেলেছেন তাইজুল।
দিনের সেরা বোলার নিয়েছেন আরও তিন উইকেট। শেন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা দুজনেই তাইজুলের ঘুর্ণিতে খুইয়েছেন স্টাম্প। রেজিস চাকাভাকে ফিরিয়ে তাইজুল ইনিংসও মুড়ে দিয়েছেন। এর আগে টেইলর-মুরের
তবে ষষ্ঠ উইকেটে ব্র্যান্ডন টেইলরের সঙ্গে পিটার মুরের ২২২ বলে ১৩৯ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল জিম্বাবুয়ে। তাদের শক্ত বাধন কোন বোলার দিয়েই যখন আলগা করা যাচ্ছিল না তখনই ডাক পড়ে অনিয়মিত বোলার আরিফুল হকের। নিজের প্রথম ওভারেই এই অলরান্ডার এনে দেন সাফল্য। তার ভেতরে ঢোকা বলে এলবিডব্লিও হয়ে প্রথম সেঞ্চুরির আশা শেষ হয় পিটার মুরের।
মুর হাতছাড়া করলেও টেইলরই ঠিকই পৌঁছান তিন অঙ্কে। টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে দিচ্ছিলেন ফলোঅন এড়ানোর আশা। তিন বলের মধ্যে টেইলর আর মাভুটাকে আউট করে সেই আশা নিভু নিভু করে দেন মিরাজ।
দিনের খেলা যখন শেষ হচ্ছে এই টেস্টে জিম্বাবুয়ের সম্ভাবনাও অনেকটা নিভু নিভু। এই অবস্থা থেকে ফিরতে তাদের করতে দারুণ কিছু।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৫২২/৬ (ডিক্লে)
জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস: ৩০৪/৯ (১০৫.২)(মাসাকাদজা ১৪, চারি ৫৩, টিরিপানো ৮, টেইলর ১১০ , উইলিয়ামস ১১, রাজা ০, মুর ৮৩, চাকাভা ১০, মাভুটা ০, জার্ভিস ৯*, চাতারা (অবসেন্ট হার্ট) ; মোস্তাফিজ ০/৫৮, খালেদ ০/৪৮, তাইজুল ৫/১০৭, মিরাজ ৩/৬১, মাহমুদউল্লাহ ০/১৪, আরিফুল ১/১০)।
Comments