স্বর্ণের হোটেল!

emirates palace
‘আমিরাত প্যালেস’ হোটেলের ভেতরের নকশা। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে অবস্থিত শিখ ধর্মাম্বলীদের প্রধান তীর্থস্থান হিসেবে খ্যাত ‘স্বর্ণ মন্দির’-এর কথা প্রায় সবাই জানেন। কিন্তু, জানেন কি- সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি রাজ্যের ‘স্বর্ণের’ হোটেলের কথা?

আমিরাতের শাসকদের বিলাসবহুল জীবনযাপন ও বিশ্বখ্যাত ইমারত গড়ার কাহিনি জগতজুড়ে সুপরিচিত। তাদের রয়েছে ১৬০-তলার বিশ্বের সর্বোচ্চ অট্টালিকা ‘বুর্জ খলিফা’, ৫৩-তলা উঁচু বিলাসবহুল হোটেল ‘বুর্জ আল আরব’, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শপিং সেন্টার ‘দুবাই মল’, সাগরে কৃত্রিম দ্বীপের ‘পাম আইল্যান্ড’ ইত্যাদি।

emirates palace
‘আমিরাত প্যালেস’ হোটেলের ভেতরের অংশ। ছবি: সংগৃহীত

তেমনি একটি অনন্য স্থাপত্যকৃর্তি ‘আমিরাত প্যালেস’। নাম শুনে একে একটি প্রাসাদ মনে হলেও আসলে এটি একটি বিলাসবহুল পাঁচতারা হোটেল। ২০০৫ সালে ৩ বিলিয়ন ডলার খরচ করে বিশ্বের এই সবচেয়ে দামি হোটেলটি তৈরি করা হয়।

সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, হোটেলের লবি, রুম এবং হলওয়েতে রয়েছে এক হাজার স্বরভস্কি ঝাড়বাতি। যার আলোকচ্ছটা ঠিকরে পড়ে প্রাসাদের সোনা-মোড়া সিলিংয়ে। এই সিলিং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন ভারতের কেরালা রাজ্যের প্রকৌশলী মনোজ কুরিয়াকোসে।

মনোজ ও তার দলের সদস্যদের কাজ হলো হোটেলের ২ হাজার বর্গ মিটারের সিলিংটিকে ২২ ক্যারটের সোনার পাত দিয়ে সাজিয়ে রাখা। কিন্তু, সমস্যা হলো এসব পাত বদলাতে হয় প্রতিনিয়ত।

emirates palace
‘আমিরাত প্যালেস’ হোটেলের লবি। ছবি: সংগৃহীত

বিলাসিতার মূল্য

‘আমিরাত প্যালেস’-কে এই সোনার সিলিংয়ের বিলাসিতার মূল্য দিতে হয় বেশ। কেননা, এক বর্গমিটার সিলিংয়ে বসাতে হয় ৫০টি সোনার পাত। মনোজকে প্রতিদিনই পাল্টাতে হয় চার থেকে ছয় বর্গমিটারের সোনার পাত। এর মানে, বছরে সোনার পাত বদলাতে খরচ করতে হয় প্রায় ১৩ লাখ ডলার।

মনোজ গণমাধ্যমকে বলেন, “আপনি সিলিংয়ে যাই দেখছেন তাতে রয়েছে সোনার পাত।” খাঁটি সোনার এই পাতগুলো আনা হয় ইতালি থেকে। তারপর, সেই পাতগুলোকে পিটিয়ে পাতলা ফিনফিনে করে সেগুলোর পিঠে বিশেষ রাসায়নিক পদার্থ লাগিয়ে তা সিলিংয়ের গায়ে সেঁটে দেওয়া হয়।

emirates palace
‘আমিরাত প্যালেস’ হোটেলের ভেতরের অংশ। ছবি: সংগৃহীত

সোনার পাত বানানোর কৌশল

মনোজের দলের সদস্যরা এসব সোনার পাতগুলো বানাতে বেশ পরিশ্রম করেন। “আমরা এই স্পর্শকাতর পাতগুলোর আকৃতি আঙ্গুল দিয়ে ধীরে ধীরে সাজিয়ে নেই। এগুলো খুবই পাতলা এবং ভঙ্গুর। পাতগুলো হাত দিয়ে তোলার সময় একটু বেখেয়ালি হয়ে গেলেই তা মুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়বে।”

“নকশার কাজ শেষ হওয়ার পর অপর একটি দল সেই পাতগুলোর ওপর চূড়ান্ত প্রলেপ বসিয়ে দেয় যাতে সেগুলো সিলিং থেকে খসে না পড়ে,” যোগ করেন মনোজ।

emirates palace
‘আমিরাত প্যালেস’ হোটেলের সামনের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

হোটেলে আগত অতিথিরা তাদের সেই স্বর্ণের কাজের অভিনবত্ব দেখে মুগ্ধ হন উল্লেখ করে মনোজ বলেন, “অতিথিরা সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে থমকে দাঁড়িয়ে যান। আমাদের নানান প্রশ্ন করেন। বিভিন্ন রকমের তথ্য জানতে চান।”

এই হোটেল এলাকাটি পূর্ব-পশ্চিমে এক কিলোমিটারের বেশি বিস্তৃত। পৃথিবীর আর কোনো হোটেলের সিলিংয়ের এতো পরিমাণের সোনার পাত লাগানো নেই বলেও জানান মনোজ।

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia calls for unity

‘Seize the moment to anchor democracy’

Urging people to remain united, BNP Chairperson Khaleda Zia has said the country must quickly seize the opportunity to institutionalise the democratic system.

6h ago