ফিল্ডিংয়ে হিরোদের ‘ঘাটতি, বাধা সংস্কৃতিও

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে অভিষেক হয় পেসার খালেদ আহমেদের। খালেদ শুরু থেকেই নজর কেড়েছিলেন আগ্রাসী বোলিং দিয়ে। কিন্তু গোটা ম্যাচ উইকেটশূন্যই থাকতে হয়েছে তাকে। অথচ একটু ভালো ফিল্ডিং হলেও নামের পাশে অন্তত তিন উইকেট থাকতে পারত তার।
 Ryan Cook
বাংলাদেশের ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক। ছবি: বিসিবি

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে অভিষেক হয় পেসার খালেদ আহমেদের। খালেদ শুরু থেকেই নজর কেড়েছিলেন আগ্রাসী বোলিং দিয়ে। কিন্তু গোটা ম্যাচ উইকেটশূন্যই থাকতে হয়েছে তাকে। অথচ একটু ভালো ফিল্ডিং হলেও নামের পাশে অন্তত তিন উইকেট থাকতে পারত তার।

খালেদের ঘটনা কেবল একটা মাত্র উদাহরণ। মিরপুরের দুই ইনিংস মিলিয়ে বাংলাদেশ মোট ক্যাচ ফেলেছে নয়টি। শুধু ওই টেস্টই নয়। প্রায় প্রতি টেস্টেই বাংলাদেশের বড় ভোগান্তির নাম ফিল্ডিং, বিশেষ করে স্লিপ ফিল্ডিং। স্লিপে ক্যাচ পড়া যেন হরহামেশা ঘটনা। অনেক সময়েই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেয় হাত ফসকে বেরিয়ে যাওয়া ওইসব ক্যাচ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের আগে ফিল্ডিং তাই বড় উদ্বেগেরই নাম। নন। সোমবার অনুশীলনের ফাঁকে ফিল্ডিং নিয়ে সংকট-সম্ভাবনার গল্প শুনিয়েছেন ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক।

বিশ্বে ফিল্ডিংয়ের জন্য বরাবরই প্রথম সারির দল দক্ষিণ আফ্রিকা। একজন দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে কুক জানেন বাংলাদেশের সঙ্গে কোথায় পার্থক্য প্রোটিয়াদের। তার মতে মাঠের উপস্থিতিতে, চেষ্টায় কোন ত্রুটি নেই। বাংলাদেশের ঘাটতি  অন্য জায়গায়, ‘বাংলাদেশের ফিল্ডিংয়ের শরীরী ভাষা, মনোভাব নিয়ে আমি খুশি। খেলোয়াড়দের অগ্রগতিও দারুণ। ফিল্ডিংয়ে মনোভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে কোন পার্থক্য নেই। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুসরণ করার মতো অনেকেই আছেন। জন্টি রোডস, হার্শেল গিভস। তারা অনুপ্রেরণা দিতে পারতেন।’

‘আমার এখানে ওই (অনুসরনীয় হিরো) ঘাটতি আছে। তবে অবশ্য তারা (বাংলাদেশ) নিজেদের একটা মান তৈরি করতে পারবে এবং সেটা বিশ্বমানেরই হবে । এতে কোন সন্দেহ নেই যে তাদের সেই সামর্থ্য আছে।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেট টেস্টেও একাধিক ক্যাচ পড়েছে। ঢাকায় তো হাত ফসকেছে অনেক ক্যাচই। এমন অবস্থা স্বীকার করে নিয়েও আশাবাদী কুক,  ‘প্রথম টেস্টে ৯১ শতাংশ ক্যাচ আমরা নিতে পেরেছি। যেটা আসলে দারুণ। অনেকটা বিশ্বমানেরই । পরের টেস্টে বেশ কিছু ক্যাচ পড়েছে। সবাই এটা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করছে। নিশ্চিত করছে যেন এরকম আর না হয়।’

বেশিরভাগ ক্যাচই পড়েছে স্লিপ বা গালিতে। এসব জায়গায় ক্যাচ নিতে দরকার দারুণ রিফ্লেক্স আর গভীর মনঃসংযোগ। তবে এই রিফ্লেক্স আর মনঃসংযোগ গড়ে উঠে অভ্যস্ত একটা সংস্কৃতির কারণেই, এই জায়গাতেই ফিল্ডারদের দোষ না দিয়ে সিস্টেমের দিকে ইঙ্গিত কুকের,  ‘এটার ঐতিহ্য লাগে (স্লিপে ক্যাচ নেওয়া)। দক্ষিণ আফ্রিকায় আপনি ছোটবেলা থেকে চার স্লিপ আর গালি নিয়ে খেলে খেলে ধাতস্থ হবেন। কিন্তু এখানে যেসব পিচে খেলা হয় তা সম্ভব (সংস্কৃতি গড়ে উঠা) নয়।’

 

 

Comments