ফলদায়ক প্রস্তুতি ম্যাচ
সোমবার বাংলাদেশ দল অনুশীলন করছিল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। কিন্তু সেখানে ছিলেন না প্রধান কোচ স্টিভ রোডস। সকাল থেকেই তিনি ছিলেন এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বিসিবি একাদশে প্রস্তুতি ম্যাচটা মন দিয়ে দেখেছেন কোচ। আলাপ-আলোচনা চালিয়েছেন নির্বাচক হাবিবুল বাশারের সঙ্গে। সন্ধ্যায় দেখা গেছে প্রস্তুতি ম্যাচের পারফরম্যান্সেই টেস্ট দলে যোগ করা হয়েছে সাদমান ইসলামকে।
টেস্টে নামার আগে প্রস্তুতি ম্যাচটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য ছিল ভীষণ দরকারি। কিন্তু এই ম্যাচ থেকে বাংলাদেশেরও যে পাওয়ার আছে টিম ম্যানেজমেন্টের তোড়জোড় দেখে তা বোঝা গেছে।
সর্বশেষ ২২ টেস্ট ইনিংসে ওপেনাররা এনে দিতে পারেননি কোন শতরানের জুটি। সর্বশেষ ১০ ইনিংসে পঞ্চাশ রানের জুটিই দেখা গেছে একবার। মিডল অর্ডারে জুতসই রান পাওয়া লিটন দাস টপ অর্ডারে গিয়ে হয়েছেন ব্যর্থ, সবশেষ ২০ ইনিংস থেকেও ফিফটি নেই ইমরুল কায়েসের।
চট্টগ্রাম টেস্টের ১৩ জনের দলে ওপেনার ছিলেন কেবল দুজন। দলে ফেরা সৌম্যের সঙ্গে লাল বলে বিবর্ণ ইমরুল দিচ্ছিলেন অস্বস্তি। এই ম্যাচে তাই চোখ ছিল কোচ, নির্বাচকদের। টপ অর্ডারের সংকটে যদি মেলে কোন সমাধান। এমন দিনেই নিজেকে মেলে ধরায় তাই একটা অন্তত সমাধানের পথ দিয়েছেন সাদমান। এটা প্রস্তুতি ম্যাচের প্রাপ্তিই বলা যায়। সৌম্যের মতো অতটা দাপুটে না হলেও শর্ট বলে বেশ সাবলীল ব্যাট করেছেন সাদমান।
টেস্ট স্কোয়াডে ডাক পাওয়া সৌম্য সরকার কেমন করেন, দেখার ছিল তাও। এক বছর পর টেস্ট দলে ফিরে দাপুটে ব্যাটিংয়েই প্রস্তুতি সেরেছেন এই ওপেনার। ৭৮ রানের ইনিংসে শুরুতে ছিলেন সতর্ক, পরে মেলেছেন ডানা। নিজের চেনা ভঙ্গিতে মেরেছেন চার-ছক্কা। সৌম্যর ব্যাটিং কোচকে নিঃসন্দেহে ভরসা জুগাবে।
টেস্টে যাদের মুখোমুখি হবেন সেই শ্যানন গ্যাবব্রিয়েল, কেমার রোচ, কেমো পলদের খেলেছেন সাবলীলভাবে। তার সামনে পাত্তা পাননি স্পিনাররাও। যদিও তার ইনিংস থেমে বাঁহাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিক্যানের বলেই।
দেখার ছিল কেমন করেন মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন দাসরা। মিঠুন দায়িত্বশীল ব্যাটিং করলেও হতাশ করেছেন লিটন। শুরুতে প্রস্তুতি ম্যাচের দলে ছিলেন না লিটন। চট্টগ্রাম টেস্টের দল থেকে তাকে বাদ দিয়ে খেলতে বলা হয়েছিল বিসিএল। চট্টগ্রাম টেস্টে শেষ মুহুর্তে বিবেচনায় থাকায় তাকে খেলানো হয় প্রস্তুতি ম্যাচ । এখানে ভালো করলে হয়ত বন্ধ হওয়া দুয়ার আবার খোলে যেত। চা-বিরতির পর ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে শ্যানন গ্যাবব্রিয়েলের স্টাম্পের বল ছেড়ে দিয়ে হয়েছেন বোল্ড।
উইকেটে তেমন কিছু ছিল না বলে পেসারদের সামলানো গেছে ভালোই। দিন শেষে মিঠুন জানিয়েছেন নিজেদের তৃপ্তির কথা, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেস বোলার তো অবশ্যই ভালো। ওদের পেস বোলিং অ্যাটাক নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। ওরা অবশ্যই বিশ্বমানের বোলার। হয়তো উইকেটের কারণে আমরা অনেক স্বচ্ছন্দে তাদের মোকাবেলা করেছি। উইকেটের ওপর অনেক কিছু নিশ্চিত করে। বোলারদের বেশি হেল্প না থাকলে বোলারদের কিছু করারও থাকে না।’
প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে সন্তুষ্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথয়েটও। তবে দুদিনের ম্যাচটা অন্তত তিনদিনের হলে বেশি তৃপ্ত হতেন তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৩০৩/৬ ইনিংস ঘোষণা
বিসিবি একাদশ ১ম ইনিংস: ৭৫ ওভারে ২৩২/৫ (সাদমান ৭৩, সৌম্য ৭৮, শান্ত ২১, মিঠুন ২৭*, জাকির ১৮, লিটন ১, মাহমুদ ২*; রোচ ১/১৮, গ্যাব্রিয়েল ২/২৪, চেইস ০/৩৫, পল ০/১৩, লুইস ০/১৯, ওয়ারিক্যান ১/৫১, ব্র্যাথওয়েট ০/১৬, বিশু ০/৪১, রেইফার ০/৮)
ফল: ড্র
Comments