আওয়ামী লীগের বিতর্কিত কয়েকজন

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংসদীয় আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গতকাল পর্যন্ত দলের পক্ষ থেকে ২৪৮ জনকে মনোনয়নপত্র দেওয়া হয়েছে। সরকারের গত মেয়াদে এবং তার আগেও এমপি-মন্ত্রী থেকে যারা বিতর্কিত হয়েছেন, তাদের নামও রয়েছে এই তালিকায়।
(বাম দিক থেকে) আওয়ামী লীগ নেতা শাজাহান খান, শামীম ওসমান ও নিজাম হাজারী। ফাইল ছবি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংসদীয় আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গতকাল পর্যন্ত দলের পক্ষ থেকে ২৪৮ জনকে মনোনয়নপত্র দেওয়া হয়েছে। আজ (২৬ নভেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের নাম ঘোষণা করা হবে।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রার্থীদের হাতে মনোনয়নপত্র তুলে দেন। সরকারের গত মেয়াদে এবং তার আগেও এমপি-মন্ত্রী থেকে যারা বিতর্কিত হয়েছেন, তাদের নামও রয়েছে তালিকায়।

নিজ দপ্তরের পাশাপাশি সড়ক খাতেও নানা ঘটনায় বিতর্কিত শাজাহান খানকে মাদারীপুর-২ আসনের জন্য মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। অতীতেও বিভিন্ন সময় অভিযোগ উঠেছে, তার কারণে পরিবহনখাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না। সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী হলেও শ্রমিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি তিনি।ফলে এক পক্ষের স্বার্থ রক্ষায় প্রায়ই তিনি সরকারি নীতিমালার বিরোধিতা করেন। তার শ্রমিক সংগঠন আদালতের রায় এবং সম্প্রতি পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইন বাতিল চেয়ে রাস্তায় নেমে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করেছে।

কেবল সংগঠনের দায় নয়, শাজাহান খান নিজেও বিভিন্ন ঘটনায় বিতর্কিত মন্তব্য করে বহুবার সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন।

নানা বিতর্কের পরও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন শামীম ওসমান। কথিত আছে, ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তার নিয়ন্ত্রণেই ছিল ওই সংসদীয় এলাকা। তখন থেকেই তাকে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের গডফাদার বলা হয়। নারায়ণগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য সারাহ বেগম কবরী এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে বারবার আলোচনায় এসেছেন এই রাজনীতিক। ত্বকী হত্যাকে কেন্দ্র করেও তিনি ও তার পরিবার বারবার আলোচনায় এসেছেন।

চলতি বছরের জানুয়ারিতেও অভিযোগ ওঠে, আইভী এবং তার সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয় শামীম ওসমানের নির্দেশে। যদিও শামীম ওসমান ওই হামলায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

দীর্ঘ সময় ধরে নিজ দলের নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না নিজাম হাজারীর। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের একাংশের অভিযোগ, গত বছরের নভেম্বর মাসে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলা চালান নিজাম হাজারী। যদিও তিনি সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন। কেবল তাই নয়, এখনও গুঞ্জন রয়েছে- ২০১৪ সালের মে মাসে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একরামুল হক হত্যায় তার হাত ছিল।

ঠাকুরগাঁও-২ আসন  থেকে পরপর ছয়বার নির্বাচিত সাংসদ মো. দবিরুল ইসলাম এবং তার ছেলের বিরুদ্ধে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হিন্দু পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। দ্য ন্যাশনাল সিটিজেন কোঅর্ডিনেশন সেল-এর তদন্তে উঠে আসে, জমি দখলের উদ্দেশ্যে দবিরুলের ছেলে মাজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল হিন্দুদের ওপর হামলা চালায়। ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে কমিটি জানায়, ‘ওই ঘটনায় দবিরুল সরাসরি জড়িত ছিলেন’।

র‌্যাবের হাতে আটক হওয়ার পর এক সন্ত্রাসীকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের বিরুদ্ধে। ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে ওই ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন। যদিও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা শিমুলের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলেন।

ওই বছর পৌরসভা নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে শিমুলের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের নজরে আসার পর তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে একটি অনুষ্ঠানে তিনি জানান, উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান এবং ভাইস-চেয়ারম্যান প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে তিনি কীভাবে ভোট জালিয়াতি করেন।

হলমার্ক অর্থ কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১২ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাইমুম সরওয়ার কমলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ওই ঘটনার পর ২০১৬ সালে হিমছড়িতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অবৈধ পণ্য জব্দ করলে, তার নেতৃত্বে পণ্যগুলো ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করায় কমল এবং তার সমর্থকরা এক বন কর্মকর্তার ওপর চড়াও হন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করে ফের আলোচনায় আসেন তিনি।

কক্সবাজার-৩ আসন থেকে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

8h ago