‘আমাদের কাছে মনোনয়ন বাণিজ্যের কোনো অভিযোগ নেই’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টির (জাপা) বিরুদ্ধে ‘মনোনয়ন বাণিজ্যের’ অভিযোগ উঠেছে। দলটির নেতা-কর্মীদের অভিযোগ- জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অনেকে অভিযোগ করেছেন, দলের চেয়ারম্যান এরশাদের কথা বলে তিনি টাকা নিয়েছেন। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
এদিকে, গতকাল হেলিকপ্টার ব্যবহার করে নিজের নির্বাচনী এলাকায় (পটুয়াখালী-১) যান জাপা মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। এটিকে নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনের কাছে রুহুল আমিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির নেতা-কর্মীরা।
এ বিষয়গুলি নিয়ে আজ (২৮ নভেম্বর) দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম এবং নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন আহমদের কথা হয়।
নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, “মনোনয়ন বাণিজ্য ফৌজদারি অপরাধ। এই অভিযোগে রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে। জাতীয় পার্টি এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে কী না, তা আমরা এখনও জানি না। এক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করতে পারেন। কারো কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরই কেবল আমরা এ নিয়ে কিছু করতে পারবো।”
তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের ইনভেস্টিগেটিভ অথরিটি নেই। গণমাধ্যমের খবরে বিষয়টি উঠে এলে আমরা তা দেখবো। যেহেতু এটি ফৌজদারি অপরাধ, সরকার যদি মনে করে সেখানে কোনো ক্রিমিনাল অপশন রয়েছে, সেক্ষেত্রে তারা এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে, আদালতের কাছে বিচার চাইতে পারে।”
জাপার এক প্রার্থীর হেলিকপ্টার ব্যবহারের অভিযোগ উঠে আসা প্রসঙ্গে রফিকুল ইসলাম বলেন, “দেশের কোন প্রান্তে কে কখন হেলিকপ্টার ব্যবহার করছেন, তার খোঁজ রাখা তো আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে, যিনি ব্যবহার করেছেন, কী উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছেন, তিনি প্রার্থী কী না বা প্রার্থী হবেন কী না, সেগুলো জানতে হবে। নির্বাচন কমিশনের ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি আছে। রিটার্নিং কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে খোঁজ রাখছেন। অভিযোগ পেলে তারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।”
মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ বলেন, “আমাদের কাছে মনোনয়ন বাণিজ্যের কোনো অভিযোগও নেই, এ ব্যাপারে আমাদের মন্তব্যও নেই। আগে তো অভিযোগ পেতে হবে। কে কাকে টাকা দিচ্ছে, কত টাকা দিচ্ছে, আমাদের কাছে তো তার ডকুমেন্ট দিতে হবে।”
“নির্বাচন কমিশন তো একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। ফলে এ ব্যাপারে আমাদের আগে থেকে কোনো বক্তব্য নেই। কেউ যদি সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্তসহ অভিযোগ করেন, সেক্ষেত্রে কমিশন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবে। অভিযোগ আসতে হবে। হাওয়ার উপর ভিত্তি করে তো আর মনোনয়ন বাণিজ্যের তদন্ত করা যাবে না,” মন্তব্য নির্বাচন কমিশন সচিবের।
তিনি বলেন, “দলীয় প্রধান ছাড়া কেউ হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে পারেন না। যদি ব্যবহার করা হয়, ওখানে আমাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা, ডিসি, ম্যাজিস্ট্রেটরা আছেন, তারা ব্যবস্থা নিতে পারবেন। সেই ক্ষমতা আমরা তাদের দিয়ে দিয়েছি। সবকিছু তো আর আমরা হেডকোয়ার্টার থেকে দেখতে পারবো না। এ ব্যাপারে আইন করাই আছে। ঘটনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের প্রতিবার নির্দেশনা দেওয়ার প্রয়োজন নেই।”
Comments