সাদমানের দৃঢ়তার পর ঝলমলে সাকিব

Shadman Islam
৭৬ রানের ইনিংসের পথে সাদমান ইসলাম। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

অভিষিক্ত সাদমান ইসলামের দৃঢ়তার পর মিডল অর্ডারে মাঝারি ধস, শেষটায় এসে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের স্বস্তির ব্যাটিং। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে বাংলাদেশ রান তুলেছে কিছুটা মন্থর গতিতে। তবে স্কোরবোর্ডে উইকেট আর রানের ছবি বলছে, অবস্থান বেশ ভালোই বাংলাদেশের।

শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন শেষে ৫ উইকেটে ২৫৯ রান করেছে সাকিব আল হাসানের দল। সাদমানের ৭৬ রানের পর ৫৫ রান নিয়ে ক্রিজে আছেন সাকিব। তার সঙ্গী ৩১ রান করা মাহমুদউল্লাহ।

পঞ্চম উইকেট হিসেবে মুশফিকুর রহিম যখন আউট হন, দিনের খেলা শেষ হতে তখনো বাকি বিশ ওভারের বেশি। দিনের শেষ বা সেশনের শেষ দিকে উইকেট খোয়ানোর পুরনো রোগ পেয়ে বসা তখন খুব অস্বাভাবিক কিছু ছিল না। তবে আর কোন বিপদ ঘটতে দেননি সাকিব আর মাহমুদউল্লাহ। ষষ্ট উইকেটে ৬৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন তারা।

উইকেট টার্নিং, দুদলের মধ্যে ব্যবধানও কম। এমন অবস্থা টসটা ছিল ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রামের মতো ঢাকাতেও সেই ভাগ্য এলো বাংলাদেশের পক্ষে। অভিষিক্ত সাদমান আর সৌম্য সরকার মিলে শুরুটাও পাইয়ে দিয়েছিলেন মনমতো। প্রথম ঘণ্টা পার করে দেন অবিচ্ছিন্ন থেকে, গড়েন ৪২ রানের জুটি। ১৫ ওভার পর প্রথম উইকেটের পতন। উইকেটে টিকে থাকার নিবেদন নিয়ে খেলা সৌম্য রোস্টন চেজকে অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ দেন স্লিপে। টেস্টে ফিরে টানা তৃতীয় ইনিংসে কুড়ি পেরুতে পারলেন না তিনি।

চলতি বছর দারুণ ফর্মে থাকা মুমিনুল হকের জন্যও আরেকটি বড় ইনিংসের আদর্শ মঞ্চ তৈরি ছিল। এবার তিনি সেটা হেলায় নষ্ট করেছেন সে সুযোগ। লাঞ্চের ঠিক আগে কেমা রোচের বলে দৃষ্টিকটু শটে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন তিনি।

আরেক প্রান্তে সাদমান ছিলেন অবিচল। বলের মেধা বুঝে খেলেছেন। দ্রুত রান বাড়ানোর তাড়না তার মধ্যে ছিল কম। বরং উইকেটে টিকে থাকায় দিয়েছিলেন মন। তাতে বেশ সফলও তিনি।

মুমিনুল ফেরার পর মোহাম্মদ মিঠুনের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে গড়েন ৬৪ রানের আরেক জুটি। সিরিজ জুড়ে দেবেন্দ্র বিশুকে যম বানিয়ে ফেলা মিঠুন বাজে শট আউট হলে ভাঙে এই জুটি। বিশু পরে আউট করেছেন সাদমানকেও।

তবে আউট হওয়ার আগে বাংলাদেশের ইনিংসের মূল ভিত গড়ে দিয়ে যান সাদমানই।  অভিষেকে বাংলাদেশি ওপেনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বল খেলার রেকর্ডও হয়ে গেছে তার। এর আগে অভিষেকে জোড়া ফিফটির ম্যাচে জাভেদ ওমর এক ইনিংসে খেলেছিলেন ১৬৮বল। সাদমান তাকে ছাড়িয়ে নিজের প্রথম ইনিংসেই খেললেন ১৯৯ বল। রান করেছেন ৭৬, মেরেছেন ৬ বাউন্ডারি।

আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত কোন বোলারকেই দেননি কোন সুযোগ। দেবেন্দ্র বিশুর নিচু হওয়া বলে লাইন মিস করে এলবিডব্লিওতে শেষ হয় তার ইনিংস।

মুশফিকুর রহিম এই টেস্টে উইকেটকিপিং করবেন কিনা এই নিয়ে সংশয় থাকায় দলে নেওয়া হয়েছিল লিটন দাসকে। তবে মুশফিকের ব্যাটিং অর্ডার তবু আগায়নি। ছয়ে নেমে ক্যারিয়ারের চার হাজার রান পুরো করেই ফিরে যান তিনি। শেমরন লুইসের ভেতরে ঢোকা বলে বোল্ড হয়ে যান  টেস্টে চার হাজার রানে যাওয়া দ্বিতীয় বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান।

এরপরই জুটি বেধে দিনের বাকিটা সময় পার করে দেন সাকিব-মাহমুদউল্লাহ। উইকেট মন্থর, আছে প্রত্যাশিত টার্ন, রানও উঠছে মন্থর গতিতে। শেষ পাঁচ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় দিনে বড় সংগ্রহের দিকে যেতে হবে বাংলাদেশকে। তবে পেসারবিহীন বাংলাদেশের একাদশে যে দশজন ব্যাটসম্যান! এখনো ব্যাট করতে বাকি লিটন, মিরাজ, নাঈম। এগারো নম্বরে নামা তাইজুল ইসলামও ব্যাট হাতে বেশ পটু। বড় সংগ্রহের কথা বাংলাদেশ তাই আশা করতেই পারে।   

সংক্ষিপ্ত স্কোর: (প্রথম দিন শেষে) 

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৯০ ওভারে ২৫৯/৫ (সাদমান ৭৬, সৌম্য ১৯, মুমিনুল ২৯, মিঠুন ২৯, সাকিব ব্যাটিং ৫৫, মুশফিক ১৪, মাহমুদউল্লাহ ব্যাটিং ৩১; রোচ ১/৩৮, লুইস ১/৩৫, চেজ ১/৬১, ওয়ারিক্যান ০/৪৬, বিশু ২/৬৯, ব্র্যাথওয়েট ০/৮)।

Comments

The Daily Star  | English

BNP sticks to demand for polls by December

In a meeting with Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night, the BNP restated its demands that the next general election be held by December and the government immediately announce a roadmap to that end.

2h ago