এমন ওপেনারকেই তো ‘খুঁজছিল’ বাংলাদেশ

টেস্টে এমন একজন ওপেনারকে কতদিন ধরে যে খুঁজছিল বাংলাদেশ! সাদমান ইসলামের ব্যাটিং দেখলে হয়তো তেমনটি মনে হবে যে কারো। তাড়াহুড়ো নেই, এলোপাথাড়ি শট নেই। নিখুঁত ঝুঁকিহীনভাবে খেলে যাওয়া ঘণ্টার পর ঘণ্টা। সাদমান অভিষেকেই সেটা করে দেখিয়েছেন। ইনিংসে তার ৭৬ রানের চেয়ে তাই প্রায় দুশো বল খেলার তথ্যেই চোখ পড়বে আগে। বাঁহাতি তরুণ দেখিয়েছেন নিবেদন, দিয়েছেন আস্থা।
Shadman Islam
সাদমান ইসলাম, ফাইল ছবি: ফিরোজ আহমেদ

টেস্টে এমন একজন ওপেনারকে কতদিন ধরে যে খুঁজছিল বাংলাদেশ! সাদমান ইসলামের ব্যাটিং দেখলে হয়তো তেমনটি মনে হবে যে কারো। তাড়াহুড়ো নেই, এলোপাথাড়ি শট নেই। নিখুঁত ঝুঁকিহীনভাবে খেলে যাওয়া ঘণ্টার পর ঘণ্টা। সাদমান অভিষেকেই সেটা করে দেখিয়েছেন। ইনিংসে তার ৭৬ রানের চেয়ে তাই প্রায় দুশো বল খেলার তথ্যেই চোখ পড়বে আগে। বাঁহাতি তরুণ দেখিয়েছেন নিবেদন, দিয়েছেন আস্থা।

১৯৯ বলে ৭৬ রান করেছেন। অভিষেকে বাংলাদেশের টেস্ট ওপেনারদের মধ্যে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তবে বল খেলায় এটিই প্রথম। নিজের অভিষেকে এখানে ছাপিয়ে গেছেন জাভেদ ওমরকে। ২০০১ সালে বুলাওয়েতে জাভেদের খেলা ১৬৮ বল পেছনে ফেলে সাদমান খেলেছেন ১৯৯ বল।

অথচ অন্য ওপেনাররা ব্যর্থ না হলে টেস্ট ক্যাম্পই এখনো মাথায় উঠার কথা ছিল না তার। দলের সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল চোটে। তাই জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকেই ওপেনিংয়ে ভুগছিল বাংলাদেশ। তামিমের যোগ্য সঙ্গীর জন্য সংকট অবশ্য আরও আগের। জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রথম টেস্ট। ওপেনিংয়ে নেমে ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, সৌম্য সরকার কেউই ভরসা যোগাতে পারেননি। মিরপুরেই তাই সুযোগ ঘটে সাদমানের। প্রথম সুযোগেই দিতে পেরেছেন সামর্থ্যের জানান। 

বয়সভিত্তিক, ‘এ’ দল, এইচপি সব ধাপ পেরিয়ে সাদমানের ক্যারিয়ার এগিয়েছে ধীরে ধীরে। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্মার হয়েও টেস্টে সুযোগটা খুব হুটহাট আসেনি। এই দেরিও তার জন্য যেন আশীর্বাদ। ঘরোয়া ক্রিকেটের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চাপের গরমিল পরিণত মাথাতেই খুব আমলে না নিয়ে থাকতে পেরেছেন স্বাভাবিক।

প্রথম দিনের খেলা শেষে বলে গেলেন অন্তত মাথার ভেতর ঘরোয়া ক্রিকেটের মতই নিয়েছিলেন টেস্টকেও, ‘আমি যেরকম ব্যাটিং করি আমি চিন্তা করেছি যে, বল আসবে...(বল বুঝে খেলা)। আমি যেভাবে ঘরোয়া  ক্রিকেটে খেলি ঠিক সেভাবে এখানে খেলতে। আর কিছু আমি চিন্তা করিনি।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রামে প্রস্তুতি ম্যাচের ফিফটি তার ক্যারিয়ারের মোড় ঘোরানো। চট্টগ্রামে ওই ইনিংস দিয়েই হুট করে ডাক পড়ে স্কোয়াডে।  সেই ম্যাচের অভিজ্ঞতা কাজে দিয়েছে এই টেস্টেও, কেমার রোচদের কীভাবে খেলবেন ছক করে হয়েছেন সফল ‘প্রস্তুতি ম্যাচের অভিজ্ঞতা কাজে দিয়েছে। আমার ওদের বোলার সম্পর্কে জানা ছিল। আমি যেভাবে পরিকল্পনা করেছিলাম শেষ ম্যাচে (প্রস্তুতি ম্যাচে),  ওই পরিকল্পনা এখানে কাজে লেগেছে।’

সাদমানের সামনে অবশ্য ছিল আরও বড় কিছুর সুযোগও। মাত্র চতুর্থ বাংলাদেশি হিসেবে টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরি পেতে পারতেন। অভিষেকে সেঞ্চুরি হাতছাড়ার আফসোস আছে, তবে হতাশা নেই। ব্যক্তিগত অর্জন, আক্ষেপ ছাপিয়েও ‘টিমম্যান’ হিসেবে আগে ভাবছেন দলের কথাই, ‘চেষ্টা করেছি। দলের জন্য যতটুকু দেওয়ার দরকার ছিল আমি সেরকম ব্যাটিং করেছি। হয়তো পুরোটা করতে পারিনি। যেরকম দরকার ছিল শেষ করতে পারিনি। আমার মনে হয় আরেকটু দিতে পারতাম দলকে।’

 

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

5h ago