তাবলিগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত দেড় শতাধিক
বিশ্ব ইজতেমায় আধিপত্যকে কেন্দ্র করে তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা এই সংঘর্ষে আরও প্রায় দেড় শতাধিক লোক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে আজ (১ ডিসেম্বর) সকালের দিকে তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।
দ্য ডেইলি স্টারকে টঙ্গী পূর্ব থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন জানান, নিহত ব্যক্তির নাম ইসমাইল মন্ডল (৬৫)। তিনি মুন্সিগঞ্জের রামপাল ইউনিয়নের বাসিন্দা।
এ ঘটনায় অন্তত ১৩৮ জন ব্যক্তিকে টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আশিস কুমার বণিকের বরাতে আমাদের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার জানান, আহতদের মধ্যে ২৬ জনের অবস্থা গুরুতর। তাদের ঢাকা মেডিকেলসহ অন্যান্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহতদের বেশিরভাগই মাথায় আঘাত পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন আশিস কুমার বণিক।
পুলিশ বলছে, ফজরের নামাজের সময় দিল্লির মওলানা সাদের সমর্থকরা ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করতে গেলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। গত বুধবার থেকে মওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ওই জায়গা দখলে নিয়ে রেখেছিল।
এদিকে, ভোর থেকে তাবলিগ জামাতের একপক্ষ বিমানবন্দরের সামনের সড়কের একপাশে অবস্থান নেওয়ার পর থেকেই মহাখালী থেকে উত্তরা পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
রাজধানীর অতিগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটিতে দীর্ঘসময় যান চলাচল বন্ধ থাকায় অনেক যাত্রীই শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদের নির্ধারিত ফ্লাইট ধরতে পারেননি। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক কিছু এয়ারলাইনসের ফ্লাইট দেরিতে ছাড়লেও সব যাত্রী উপস্থিত হতে পারেননি বলেও জানা গেছে।
তাবলিগের বর্তমান আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভী দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু। গত বিশ্ব ইজতেমার সময়ও এ নিয়ে তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছিল। এর পর গত এপ্রিল মাসে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল।
সাদ সমর্থক ও বিরোধী এই দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে আগামী জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব ইজতেমা স্থগিত করা হয়েছে, এমন খবর গণমাধ্যমে এসেছিল। গত ১৫ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় তাবলীগ জামায়াতের বিবদমান দুই পক্ষ, পুলিশের আইজি, ধর্ম সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
এর পরদিনই অবশ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছিল, বিশ্ব ইজতেমা স্থগিত নয়, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পরামর্শক্রমে পরে তারিখ ঘোষণা করা হবে।
Comments