‘প্রয়োজনে পদত্যাগ করবে স্কুলের পরিচালনা কমিটি’
ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালনা কমিটির সদস্যরা বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও এর শিক্ষার্থীদের স্বার্থে প্রয়োজন হলে তারা পদত্যাগ করবেন।
স্কুলটির নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষক বরখাস্ত ও শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের বিক্ষোভে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আজ পরিচালনা কমিটির দিক থেকে এমন বক্তব্য এলো।
স্কুলটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার আজ স্কুল প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির ব্যাপারে অবগত রয়েছি। পরিচালনা কমিটির এখন কেউ পদত্যাগ করতে চাইলে করতে পারেন। পরিচালনা কমিটির পরবর্তী বৈঠকে আমি অন্য সদস্যদের এই কথা জানিয়ে দেব।
তিনি বলেন, ‘আমরা মর্মাহত। আমরা এ ঘটনায় জন্য অরিত্রীর বাবা-মায়ের কাছে ক্ষমা চাই।’
স্কুলের পরীক্ষা স্থগিত থাকার ব্যাপারে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসতে হবে। কিন্তু এর পরও তারা পরীক্ষা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পরিচালনা কমিটিই এ ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
অরিত্রী আত্মহত্যা করার পর থেকে দোষী শিক্ষকদের শাস্তি ও পরিচালনা কমিটির সদস্যদের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করছে তার সহপাঠী, অন্যান্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
এদিকে অরিত্রীর আত্মহত্যার ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌসসহ স্কুলটির প্রভাতী শাখার প্রধান জীনাত আরা ও শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনাকে বরখাস্ত করেছে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালনা কমিটি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গতকাল তাদের বরখাস্ত করা হয়।
সেই সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই তিন জন শিক্ষকেরই এমপিও বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গতকাল মন্ত্রণালয়ে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
গত সোমবার শান্তিনগরের বাসা থেকে অরিত্রীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর থেকে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা বিক্ষোভ করছেন।
যা ঘটেছিলো ৩ ডিসেম্বর
৩ ডিসেম্বর বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালে নকল করার অভিযোগে শিক্ষকদের দ্বারা অপমানিত হওয়ার পর সেদিনই অরিত্রী বাসায় ফিরে আত্মহত্যা করে।
তার বাবা জানান, তাদেরকে স্কুলে ডেকে নিয়ে বলা হয়, পরীক্ষার সময় তাদের মেয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেছিল। এ কারণে সে আর পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। এমনকি, তাকে ‘টিসি’ দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শান্তিনগরের বাসায় ফিরে অরিত্রী তার ঘরের দরজা বন্ধ করে গলায় স্কার্ফ পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করে।
পরিবারের সদস্যরা দরজা ভেঙ্গে অরিত্রীকে উদ্ধার করে প্রথমে নিকটস্থ হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা বিকাল ৪টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
Comments