শুনানি স্থগিতের পর ব্রিফিংয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী

‘খালেদা জিয়া কারাগারে, তিনি কিভাবে আচরণ-বিধি লঙ্ঘন করলেন?’

৮ ডিসেম্বর ২০১৮, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র নিয়ে নির্বাচন কমিশনের আপিল শুনানির পর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি: আরাফাত সেতু

রিটার্নিং কর্মকর্তারা খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন নির্বাচনী অপরাধের অভিযোগে। কিন্তু, তার সাজা হয়েছে দুর্নীতি মামলায়, নির্বাচনী অপরাধে নয়- একথা বলেছেন খালেদার আইনজীবীরা।

নির্বাচন কমিশনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্রের আপিল শুনানি চলাকালে তার আইনজীবীরা ইসি কমিশনারদের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন, খালেদা জিয়া কারাগারে, তিনি কিভাবে আচরণ-বিধি লঙ্ঘন করলেন বা নির্বাচনী অপরাধ করলেন? আর এই কারণে কিভাবে খালেদার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়?

আজ (৮ ডিসেম্বর) খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেছেন অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন এবং মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ আরও কয়েকজন আইনজীবী।

তারা বলেন, আমাদের আইনগত ভিত্তি হচ্ছে- রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়নপত্র বাতিলের আদেশে যা বলেছেন- তা হলো নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে যদি কেউ অপরাধ করেন, যেমন- মনোনয়নপত্র দাখিলের পর কেউ প্রচারণা শুরু করলো বা কাউকে মারধর করলো বা ভোটকেন্দ্রে কোনো বাধা সৃষ্টি করলো। অর্থাৎ, নির্বাচনের আচরণ-বিধি লঙ্খন করলো।

তারা জানান, খালেদা জিয়ার সাজার কোনো প্রসঙ্গে কথা বলা হয়নি। এখানে বলা হয়েছে- নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়। খালেদা জিয়া বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। সেখানে থেকে তিনি কিভাবে নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন করবেন?- সেই বিষয়টি আমরা এখানে এনেছি।

আইনজীবীরা বলেন, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়া তিনটি আসন থেকে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা ১২/১ (ঘ) অনুসারে মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে। এই ধারা নির্বাচনী অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত।

খালেদার মনোনয়নপত্র বাতিলের কারণ হিসেবে রিটার্নিং কর্মকর্তা যা দেখিয়েছেন তা অনুসারে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল সঠিক হয়নি। সে কারণে কমিশনের কাছে আপিল করা হয়েছে। আইনজীবীরা আরও বলেন, আমরা কমিশনের কাছে আইনের বিভিন্ন দিকগুলো বিস্তারিত তুলে ধরেছি। কমিশন আমাদের বক্তব্য শুনেছে। তা শুনে তারা অন্যান্য আবেদনের মতো এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। তারা বলেছেন- এ বিষয়ে বিকাল ৫টায় তাদের মতামত জানাবেন।

তারা বলেন, প্রত্যেকটি নাগরিকের অধিকার রয়েছে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার। সেই ক্ষেত্রে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার কোনো সুযোগ নেই। তারপরও, আইনগতভাবে খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অধিকার রাখে। যে আদেশ রিটার্নিং কর্মকর্তারা দিয়েছেন আইনের দৃষ্টিতে তা বৈধ নয়। আমরা মনে করি নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করে যথাযথ আদেশ দিবেন। এবং রিটার্নিং কর্মকর্তারা যে আদেশ দিয়েছেন কমিশন তা বাতিল করবে। আমরা আশা করি, আগামী নির্বাচনে খালেদা জিয়া অংশ নিবেন।

কোন কোন অপরাধের কারণে একজন ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না?- এখনো নির্বাচনের প্রচারণা হয় নাই। তাই এ সংক্রান্ত অপরাধের কোনো সুযোগ নাই। এখনো খালেদা জিয়া মার্কা নিয়ে রাস্তায় নামে নাই। কাজেই তিনি এমন কোনো অন্যায় বা অপরাধ করেন নাই যেখানে নির্বাচন সংক্রান্ত বিধান দিয়ে খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করা যায়, যোগ করেন খালেদার আইনজীবীরা।

তাদের মতে, রিটার্নিং কর্মকর্তা যে আদেশ দিয়েছেন এখন তার ওপরেই কমিশন আদেশ দিতে পারবে। এর বাইরে যাওয়ার আইনগত কোনো সুযোগ নাই।

Comments

The Daily Star  | English

Smaller in size, larger in intent

Finance Adviser Salehuddin Ahmed has offered both empathy and arithmetic in his budget speech, laying out a vision that puts people, not just projects, at the heart of economic policy.

10h ago