ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে: সুলতানা কামাল

জনগণের কাছে দলগুলোর আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্যে দলগুলোকে ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে দেখাতে হবে উল্লেখ করে সুলতানা কামাল বলেন, “(রাজনৈতিক দলগুলোর) শুধু কথার ওপরে মানুষ খুব বেশি আস্থা রাখতে পারবে না। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, অনেক সময় ইশতেহারগুলো মানুষের মন জয় করার জন্যে করা হয়ে থাকে। এবং বলার জন্যে বলা হয়ে থাকে।”

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী বিএনপি গত ১৮ ডিসেম্বর তাদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছে। সেসব ইশতেহারে দেওয়া বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি নিয়ে ডেইলি স্টারের বিশেষ আয়োজন ‘নির্বাচন সংলাপ’-এ কথা বলেছেন বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল।

জনগণের কাছে দলগুলোর আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্যে দলগুলোকে ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে দেখাতে হবে উল্লেখ করে সুলতানা কামাল বলেন, “(রাজনৈতিক দলগুলোর) শুধু কথার ওপরে মানুষ খুব বেশি আস্থা রাখতে পারবে না। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, অনেক সময় ইশতেহারগুলো মানুষের মন জয় করার জন্যে করা হয়ে থাকে। এবং বলার জন্যে বলা হয়ে থাকে।”

আক্ষেপ প্রকাশ অরে তিনি বলেন, “আজ পর্যন্ত আমরা কি এমন একটি সংসদ তৈরি করতে পেরেছি কিংবা আমাদের নাগরিক সমাজ থেকে কি সেরকম প্রক্রিয়া তৈরি করতে পেরেছে যে তারা যে কথাগুলো বলে ক্ষমতায় গেছেন এবং শেষে নিজেরাই মানছেন না- সেটার জন্যে কোনো জবাবদিহি আদায় করতে পেরেছি?”

তিনি মনে করেন, নির্বাচনের আগে প্রক্রিয়ারগুলোর মধ্যে স্বচ্ছতা নিয়ে আসার একটি ব্যাপার রয়েছে। “যারা এখন বিরোধী দলে বা বেকায়দার মধ্যে রয়েছেন তাদের ওপর তেমন দায় দায়িত্ব বর্তায় না। কিন্তু, নির্বাচন কমিশন তো একটা প্রতিষ্ঠান, সেই প্রতিষ্ঠানটার কথাও তো এখানে রয়েছে। গণতন্ত্রের শুরুটাই তো হয় মানুষের ভোটাধিকারের মধ্য দিয়ে। সেই ভোটাধিকারটাই যদি আমরা নিশ্চিত, নিরাপদ, এবং স্বচ্ছ করতে না পারি, উন্মুক্ত করতে না পারি- সত্যিকার অর্থে মানুষ তার নিজের ভোটটা নিজে দিতে পেরেছে, জনমতের প্রতিফলন সেখানে ঘটাতে পেরেছে বা তার প্রতিনিধিকে সে আসলেই নির্বাচিত করতে পেরেছে- সেই ব্যাপারটিই যদি নিশ্চিত না হয় তাহলে পরবর্তী বিষয়গুলো যে স্বচ্ছ হবে, পরিষ্কার হবে এবং যে কথাগুলো তারা বলছেন যেগুলো রাখার মতো একটা জায়গায় তারা দাঁড়াবেন এবং আমরা জবাবদিহি আদায় করতে পারবো- সেটা কি করে আমরা বিশ্বাস করব।”

নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করা কি শুধু নির্বাচন কমিশনের একার ওপর বর্তায়?- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এবার আমরা এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। যেখানে সরকার বহাল রয়েছে, সংসদ বহাল রয়েছে মন্ত্রীরা মন্ত্রীদের মতো আছেন। প্রতিদিন তারা একটা বিশেষ সুবিধার মধ্য দিয়ে তাদের ছবি, তাদের কথা, তাদের বক্তব্য নির্বিঘ্নে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারছেন। অন্য পক্ষ, তাদের সঙ্গে আমাদের মতের মিল থাকুক না থাকুক সেটা ভিন্ন প্রশ্ন- কিন্তু তারা তো সেভাবে পাচ্ছেন না।”

“পারা এবং না পারার মধ্যে যে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে- প্রথমেই যদি এতো বৈষম্য, এতো অন্যার্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় পরবর্তী সময়ে আমরা তাদের কাছ থেকে ন্যার্যতা কিভাবে আশা করবো?”- মন্তব্য সুলতানা কামালের।

উল্লেখ্য, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, সমসাময়িক রাজনীতি, ঘটনা-দুর্ঘটনা ও তার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ নিয়ে চলছে দ্য ডেইলি স্টারের বিশেষ আয়োজন নির্বাচন সংলাপ ২০১৮। অনুষ্ঠানে আজ (২০ ডিসেম্বর) উপস্থিত ছিলেন সুলতানা কামাল। উপস্থাপনায় ছিলেন দ্য ডেইলি স্টারের প্ল্যানিং এডিটর শাখাওয়াত লিটন।

বিস্তারিত দেখতে ক্লিক করুন ভিডিওটিতে

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago