ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় সিরিজ হারল বাংলাদেশ

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

১৯১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় কি দারুণ সূচনাই না করল বাংলাদেশ । তামিম ইকবালের উইকেট হারালেও লিটনের ব্যাটে চার ওভারেই আসে ৬২ রান। কিন্তু এরপরই গেল সব পাল্টে। টপাটপ উইকেট হারিয়ে ১৮ বল বাকী থাকতেই গুটিয়ে গেল ১৪০ রানে। ফলে ৫০ রানের হার নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। ১-২ ব্যবধানে সিরিজ হারল টাইগাররা।

দারুণ শুরু পর বিতর্কিত দুটি নো বল ডাকলেন আম্পায়ার। উত্তেজিত হয়ে পড়েন উইন্ডিজের খেলোয়াড়রা। ম্যাচও আটকে থাকল প্রায় মিনিট ১৫। হয়তো তাতেই যেন মোমেন্টাম হারায় টাইগাররা। অথবা তেতে ওঠে ক্যারিবিয়ানরা। রুদ্রমূর্তি ধারণ করলেন কিমো পল। একাই তুলে নেন পাঁচ উইকেট। অথচ এর আগে ২ উইকেটের বেশি পাননি কখনোই।

টাইগারদের হারটা হতে পারতো আরও বড়। ১০ নম্বর ব্যাটসম্যান আবু হায়দার রনির ব্যাট থেকে আসে হার না মানা ২২ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

উইন্ডিজ: ১৯.২ ওভারে ১৯০ (লুইস ৮৯, হোপ ২৩, পল ২, পাওয়েল ১৯, হেটমায়ার ০, পুরান ২৯, ব্র্যাথওয়েট ৮, রাদারফোর্ড ২, অ্যালান ৮, কট্রেল ২*, টমাস ০; মোস্তাফিজ ৩/৩৩, সাইফুদ্দিন ০/৩৬, রনি ০/৩৯, মিরাজ ০/২৬, সাকিব ৩/৩৭, মাহমুদউল্লাহ ৩/১৮)।

বাংলাদেশ: ১৭ ওভারে ১৪০ (তামিম ৮, লিটন ৪৩, সৌম্য ৯, সাকিব, মুশফিক ১, মাহমুদউল্লাহ ১১, মিরাজ ১৯, আরিফুল ০, সাইফুদ্দিন ৫, রনি ২২*, মোস্তাফিজ ৭ ; কট্রেল ১/৩২, টমাস ০/৫৬, অ্যালান ২/১৯, পল ৫/১৫, ব্র্যাথওয়েট ১/১৫)।

ফলাফল: উইন্ডিজ ৫০ রানে জয়ী।

সিরিজ: উইন্ডিজ ২-১ ব্যবধানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: এভিন লুইস।

ম্যান অব দ্য সিরিজ: সাকিব আল হাসান।

কট্রেলের শিকার মিরাজ

টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পর শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসান মিরাজই দলকে টানছিলেন। কিন্তু থেমেছেন ১৯ রান করে। শেল্ডন কট্রেলের বলে পুল করতে গেলে ব্যাটের উপরের কানায় লাগায় শর্ট থার্ডম্যানে ধরা পড়েন ফ্যাবিয়েন অ্যালেনের হাতে। ১২৯ রানে নবম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

পলের পঞ্চম শিকার সাইফউদ্দিন

টিকলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনও। টপ অর্ডারের ব্যর্থতার দিনে হতাশ করলেন এ অলরাউন্ডারও। কিমো পলের বাউন্সারে পুল করতে গিয়েছিলেন তিনি। ঠিকভাবে করতে না পারায় ধরা পড়েন উইকেটরক্ষক শেই হোপের হাতে। ৭ বলে ১টি চারের সাহায্যে ৫ রান করেছেন সাইফউদ্দিন। ৯৬ রানে অষ্টম উইকেট হারাল বাংলাদেশ। একই সঙ্গে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেটে শিকারের স্বাদ পেলেন পল।

বাজে শটে আরিফুলের বিদায়

উইকেটে নেমে প্রথম বলেই ঠিক কি করতে গিয়েছিলেন নিজেই বলতে পারবেন না আরিফুল হক। হয়তো অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে অনুসরণ করতে চেয়েছিলেন। তিনিও যে প্রথম বলে আগ্রাসী হতে গিয়ে উইকেট খুইয়েছেন। ঠিক তেমনই করলেন আরিফুল। পার্থক্য সাকিব লংঅফে আউট হলেও আরিফুল আউট হয়েছেন মিডউইকেটে। ৮৯ রানে সপ্তম উইকেটও হারাল বাংলাদেশ।

ইনিংস লম্বা করতে পারলেন না লিটন

উইকেটে দারুণ সেট হয়ে গিয়েছিলেন লিটন দাস। অপর প্রান্তে নিয়মিত উইকেট পড়ায় তার উপর প্রত্যাশাও ছিল বেশি। কিন্তু হতাশ করেছেন এ ওপেনার। কিমো পলের বলে মিডঅফে ধরা পড়েছেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের হাতে। ২৫ বলে সমান ৩টি করে চার ও ছক্কায় ৪৩ রান করেছেন লিটন। ৮৯ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারাল বাংলাদেশ।

মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে বাড়ল বিপদ

একটি বিতর্কিত নোবলেই যেন বদলে দিল সব। দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা টাইগারদের মোমেন্টাম গেল ঘুরে। ১ রান তুলতে ৩টি উইকেট হারায় তারা। ফলে দারুণ চাপে পরে যায় টাইগাররা। এরপর সে চাপ সামলে উঠতে না উঠতেই আউট হলেন মাহমুদউল্লাহও।

কিমো পলের বলে মিডঅফের সীমানার উপর দিয়ে মাঠ পার করার উদ্দেশ্য ছিল মাহমুদউল্লাহর। কিন্তু ঠিকভাবে করতে না পারায় মিডঅফে ধরা পড়েন অধিনায়ক কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের হাতে। ৯ বলে ২টি চারের সাহায্যে ১১ রান করেছেন মাহমুদউল্লাহ। ৮০ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

হতাশ করলেন মুশফিক

দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে বড় চাপে পরেছিলে বাংলাদেশ। উদ্ধারকাজে মুশফিকুর রহীমের দিকেই তাকিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু হতাশ করেছেন তিনি। কিমো পলের বলে ঠিকভাবে খেলতে না পারায় ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ফ্যাবিয়েন অ্যালেনের হাতে ধরা পরে সাজঘরমুখী হয়েছেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। ৫ বলে ১ রান করেছেন তিনি। ৬৬ রানে চতুর্থ উইকেট হারাল বাংলাদেশ।

উইকেট ছুড়ে এলেন সাকিব

সৌম্যর বিদায়ের পর মাঠে নেমেছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। কিন্তু সদ্য উইকেট হারানো সৌম্যর আউটের প্রতিবিম্বই যেন আঁকলেন অধিনায়ক। প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লংঅনে ধরা পড়লেন কট্রেলের হাতে। ফলে পরপর দুই বলে উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছে বাংলাদেশ। ৬৫ রানে তৃতীয় উইকেটও হারাল টাইগাররা।

টিকলেন না সৌম্য

বিতর্কিত নোবলে আউট হননি লিটন। পরের বলে ফ্রিহিটে ঠিকই ছক্কা হাকিয়েছিল উইন্ডিজ। কিন্তু খুব বেশিক্ষণ টিকলেন না এ ব্যাটসম্যান। ফ্যাবিয়েন অ্যালেনের বলে আরও একটি ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লংঅনে ধরা পড়েছেন শেল্ডন কট্রেলের হাতে। ১০ বলে ১টি ছক্কায় ৯ রান করেছেন সৌম্য। ৬৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারাল বাংলাদেশ।

বিতর্কিত নোবল নিয়ে উত্তেজনা

ওশেন টমাসের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লংঅফে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন লিটন  দাস। আউট ভেবে ঠিকভাবে রান নেওয়ার জন্য দৌড়ও দেননি তিনি। যখন দেখলেন আম্পায়ার নো বল ডেকেছেন তখনই দৌড় দেন রান নিতে। রানআউট হননি। অইদিকে রিপ্লেতে দেখা যায় নোবলও হয়নি। কিন্তু আম্পায়ার নিজের সিদ্ধান্তেই থাকেন। বাধ্য হয়ে রিভিউ নিতে যান কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। কিন্তু সেখানেই আপত্তি তোলেন আম্পায়ার। ফলে এ নিয়ে তুমুল উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খেলতেই আপত্তি জানায় উইন্ডিজ। পরে ম্যাচ রেফারির হস্তক্ষেপে মাঠে ফেরে সফরকারীরা।

তবে শুধু এ বলই নয়, এর আগেও একটি বলে এমনই একটি নো বল ডেকেছিলেন আম্পায়ার। সফরকারীদের ক্ষোভ ছিল তখনও। তবে সে যাত্রা একটি ফ্রিহিটে শেষ হলেও এবার উইকেট পতন নিয়েই সৃষ্টি হয় যতো উত্তেজনা।

বাংলাদেশের পঞ্চাশ

রান তাড়ায় শুরুতে তামিম ইকবালকে হারালেও লিটন দাসের ঝড়ে ঠিকই কক্ষপথে রয়েছে বাংলাদেশ। দারুণ ব্যাট করে চার-ছয়ে ঝড় তুলেছেন লিটন। ৩.৫ ওভারে (২৭ বলে) বাংলাদেশ পেরিয়ে যায় পঞ্চাশ।

রানআউট হয়ে সাজঘরে তামিম

ওশেন টমাসের বলে দারুণ এক ফ্লিকে স্কয়ার লেগে ঠেলে তিন রান নিতে গিয়েছিলেন লিটন দাস। তবে দৌড়ে কিছুটা মন্থর ছিলেন তামিম। শেষ দিকে ডাইভও দেননি। ফলে রানআউটে কাটা করেন এ ওপেনার। অথচ উইকেটে ঢুকেছেন ভেবে ব্যাটিংয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। পরে থার্ডআম্পায়ের সিদ্ধান্তে মাথা নিচু করেই মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। ৬ বলে ১টি ছক্কায় ৮ রান করেছেন তামিম। দলীয় ২২ রানে প্রথম উইকেট হারালো বাংলাদেশ।

দুশোর নিচে লক্ষ্য পেল বাংলাদেশ

উইকেটটা আগে ভেঙেছেন কি না এই নিয়ে ছিল দ্বিধা। তবে ঠিকভাবেই উইকেট ভেঙ্গেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ফলে রানআউট হলেন ওশেন টমাস। উইন্ডিজও হারালো তাদের শেষ উইকেট। রানের পাহাড় গড়ার ইঙ্গিত দিয়ে শেষ পর্যন্ত ১৯০ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। ফলে সিরিজ জয়ের জন্য ১৯১ রানের লক্ষ্য পেল বাংলাদেশ।

এদিন ইনিংসের শুরুটা দুর্দান্তই করেছিল ক্যারিবিয়ানরা। অথচ এই দলটিই কিনা ৭.১ ওভারে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে করেছিল একশ রান। পরে টাইগারদের দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে দলটি। তাতে চার বল বাকী থাকতেই অলআউট হয়ে যায় অতিথিরা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

উইন্ডিজ: ১৯.২ ওভারে ১৯০ (লুইস ৮৯, হোপ ২৩, পল ২, পাওয়েল ১৯, হেটমায়ার ০, পুরান ২৯, ব্র্যাথওয়েট ৮, রাদারফোর্ড ২, অ্যালেন ৮, কট্রেল ২*, টমাস ০; মোস্তাফিজ ৩/৩৩, সাইফুদ্দিন ০/৩৬, রনি ০/৩৯, মিরাজ ০/২৬, সাকিব ৩/৩৭, মাহমুদউল্লাহ ৩/১৮)।

সাকিবের তৃতীয় শিকার অভিষিক্ত রাদারফোর্ড

আক্রমণাত্মক ব্যাট করার ক্ষমতার কারণেই অভিষেকের আগেই পেয়েছেন বিশ্বের সেরা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আইপিএলে খেলার সুযোগ। অভিষেকটা রাঙাতে পারলেন না শেরফান রাদারফোর্ড। সাকিব আল হাসানের বলে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েছেন তিনি। ৬ বলে করেছেন ২ রান। ১৯০ রানে নবম উইকেট হারাল ক্যারিবিয়ানরা।

অ্যালেনকে ফেরালেন সাকিব

সাকিব আল হাসানের বলে এগিয়ে গিয়ে ছক্কা হাঁকানোই উদ্দেশ্য ছিল ফ্যাবিয়েন অ্যালেনের। তবে ব্যাটে বলে না হওয়ায় পড়লেন স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে। ফলে দলীয় ১৮৮ রানে অষ্টম উইকেট হারাল উইন্ডিজ। ৭ বলে ১টি চারের সাহায্যে ৮ রান করেছেন অ্যালেন।

ক্যারিবিয়ান অধিনায়ককেও ফেরালেন মোস্তাফিজ

ওভারের প্রথম বলে ফিরিয়েছিলেন নিকোলাস পুরানকে। আর পঞ্চম বলে পেলেন অধিনায়ক কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের উইকেট। তার বল ছক্কা হাঁকাতে গিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক। ব্যাটের কানায় লেগে চলে চতুর্থ স্লিপ ও গ্যালির মাঝে দাঁড়ানো মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে। ৭ বলে ১টি চারে ৮ রান করেছেন ব্র্যাথওয়েট। ১৭৮ রানে সপ্তম উইকেট হারাল সফরকারীরা।

পুরানকে ফিরিয়েছেন মোস্তাফিজ

অবশেষে কিছুটা ভাগ্যের ছোঁয়া পেলেন আবু হায়দার রনি। বল হাতে বেদম পিটুনি খাওয়ার পর উইন্ডিজের বিধ্বংসী ওপেনার এভিন লুইসের সহজ ম্যাচ ছেড়েছিলেন। তবে এবার ঠিকই ধরে নিলেন নিকোলাস পুরানের ক্যাচ। মোস্তাফিজের শর্ট বলে খেলতে গেলে ব্যাটের কানায় লাগে পুরানের। ফলে থার্ডম্যানে ক্যাচ হয়ে ফিরলেন এ ক্যারিবিয়ান। ২৪ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ২৯ রান করেছেন তিনি। ১৭৬ রানে পড়ল উইন্ডিজের ষষ্ঠ উইকেট।  

পাওয়েলকে ফিরিয়ে মাহমুদউল্লাহ তৃতীয় শিকার

নিজের প্রথম ওভারে উইন্ডিজ শিবিরে জোড়া আঘাত হেনেছেন। পরের ওভারে দিয়েছেন মাত্র ৫ রান। তৃতীয় ওভারে আবারো টাইগারদের উল্লাসে ভাসালেন মাহমুদউল্লাহ। এবার ফেরালেন রভম্যান পাওয়েলকে। তার খাট লেংথের বলে পুল করতে গিয়ে মিডউইকেটে ধরা পড়েছেন লিটন দাসের হাতে। ১৬ বলে ১টি চার ও ছক্কায় ১৯ রান করেছেন পাওয়েল। ১৫৯ রানে পড়ল উইন্ডিজের পঞ্চম উইকেট।

হেটমায়ারকে ফেরালেন মাহমুদউল্লাহ

আগের বলেই ফিরিয়েছেন বিপদজনক লুইসকে। পরের বলে শিমরন হেটমায়ারকে ফিরিয়ে দারুণভাবে টাইগারদের ম্যাচে ফিরিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেছেন তিনি। অফস্পিনে যে এ ব্যাটসম্যানের বিশাল দুর্বলতা তা আরও একবার প্রমাণ হলো। ১ বলে রানের খাতা খুলতে পারেননি এ ব্যাটসম্যান। ১২২ রানে চতুর্থ উইকেট হারাল সফরকারীরা।

বিপদজনক লুইসকে অবশেষে ফেরালো টাইগাররা

শুরু থেকেই ঝড়ো গতিতে ব্যাটিং করে উইন্ডিজ ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন এভিন লুইস। নিজেও এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। হাফসেঞ্চুরির আগে জীবনও পেলেন। তবে দেরিতে হলেও তাকে ফিরিয়েছেন টাইগাররা। বল হাতে নিয়েই তাকে ফিরিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তার বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে গেছেন এ ওপেনার। মাত্র ৩৬ বলে খেলেছেন ৮৯ রানের ইনিংস। তাতে ৬টি চার ও ৮টি ছক্কা মেরেছেন তিনি। ১২২ রানে পড়ল উইন্ডিজের তৃতীয় উইকেট।

ঝড়ো গতিতে উইন্ডিজের একশ

এক প্রান্তে উইকেট নিতে পারলেও অপর প্রান্তে সাবলীল ব্যাট চালিয়ে যাচ্ছেন এভিন লুইস। রীতিমতো ঝর তুলে উইন্ডিজকে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তার আগ্রাসনে মাত্র ৭.১ ওভারে (৪৩ বলে) এসেছে তাদের দলীয় সেঞ্চুরি। তাতে লুইসের অবদান ৬৯ রান।

পলকে ফেরালেন মোস্তাফিজ

ব্যাটিং অর্ডারে কিছু উন্নতি পেয়ে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন কিমো পল। কিন্তু সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। তাকে ফিরিয়েছেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। তার বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে আরিফুল হকের হাতে ধরা পড়েছেন এ অলরাউন্ডার। ৩ বলে ২ রান করেছেন তিনি। ৯০ রানে পড়ল উইন্ডিজের দ্বিতীয় উইকেট।

হোপকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন সাকিব

আগের বলেই একটি চার মেরেছিলেন শেই হোপ। তার দুই বল আগে দারুণ একটি ছক্কা। তবে তার শোধটা নিতে খুব বেশি দেরি করেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। দারুণ এক ডেলিভারিতে হোপকে বোল্ড করে দিয়েছেন এ অলরাউন্ডার। ১২ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৩ রান করেছেন হোপ। ফলে ৭৬ রানে উইন্ডিজের প্রথম উইকেটের পতন হলো।

লুইসের আগ্রাসী হাফসেঞ্চুরি

শুরু থেকেই টাইগার বোলারদের উপর চড়াও হয়েছেন ক্যারিবিয়ান ওপেনার এভিন লুইস। তার উপর আগের ওভারেই মিরাজের বলে রনির হাতে পেয়েছেন সহজ জীবন। আর তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে তুলে নিয়েছেন নিজের হাফসেঞ্চুরি। মাত্র ১৮ বলে নিজের হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করতে ৩টি চার ও ৫টি ছক্কা মেরেছেন এ ওপেনার।

ঝড়ো গতিতে উইন্ডিজের ফিফটি

শুরু থেকেই দারুণ আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করছেন এভিন লুইস। যার ফলে মাত্র ৩.১ ওভারেই (১৯ বলে) দলীয় হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছে উইন্ডিজ। এর মধ্যে লুইসই করেছেন ৩৮ রান। ফলে দুর্দান্ত সূচনা পেয়েছে সফরকারীরা। চার ওভারেই তাদের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ৬৩ রান।

বিপদজনক লুইসকে জীবন দিলেন রনি

দিনটা হয়তো আবু হায়দার রনির নয়। আগের ওভারেই বেদম পিটুনি খেয়ে এক ওভারেই দিয়েছেন ২৭ রান। পরের ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে লুইসকে সহজ জীবন দিলেন তিনি। মিরাজের বলে স্লগ সুইপ করতে চেয়েছিলেন লুইস। তার শট সরাসরি চলে যায় মিডউইকেটে দাঁড়ানো রনির হাতে। কিন্তু সে ক্যাচ লফে নিতে পারেননি এ পেসার। এ সময় ৪৮ রানে ব্যাট করছিলেন লুইস।

উইন্ডিজের উড়ন্ত সূচনা

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট মানেই চার ছক্কার খেলা। আর সে কাজটা খুব ভালোই করছে উইন্ডিজ। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে উড়ন্ত সূচনাই পেয়েছে দলটি। এক প্রান্তে মারদাঙ্গা ব্যাটিং করছেন এভিন লুইস। তবে দারুণ ছন্দে থাকা শেই হোপ অবশ্য আজ কিছুটা শান্ত।

এক ওভারে ২৭ রান

প্রথম ওভারে ২টি চারে ১০ রান দিয়েছিলেন আবু হায়দার রনি। তবে তার ওভারে বেদল পিটুনি খেলেন। ৪টি বিশাল ছয়ে ২৭ রান এসেছে এ ওভার। প্রথম তিন বলে তিনটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন লুইস। তাতে শঙ্কা জেগেছিল আরও ভয়ংকর কিছুর।

অপরিবর্তিত বাংলাদেশ

উইন্ডিজ একাদশে পরিবর্তন আসলেও বদল আসেনি বাংলাদেশ দলে। আগের দুই ম্যাচের একাদশ নিয়েই মাঠে নেমেছে তারা। গুঞ্জন ছিল সাইফউদ্দিনের জায়গায় ফিরতে পারেন রুবেল হোসেন। তবে শেষ পর্যন্ত তরুণ অলরাউন্ডারেই আস্থা রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট।

বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, আরিফুল হক, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, আবু হায়দার রনি ও মোস্তাফিজুর রহমান।

উইন্ডিজ একাদশে রাদারফোর্ড

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখনও অভিষেক হয়নি শেরফান রাদারফোর্ডের। তবে আগেই আলোচনায় ছিলেন এ তরুণ। আইপিএলের নিলামে কদিন আগেই দল পেয়েছেন। মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচে অভিষেক হলো ২০ বছর বয়সী এ অলরাউন্ডারের। আর তাকে জায়গা দিতে একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন ড্যারেন ব্রাভো।

উইন্ডিজ একাদশ: এভিন লুইস, শেই হোপ, শেরফান রাদারফোর্ড, শিমরন হেটমায়ার, নিকোলাস পুরান, রভম্যান পাওয়েল, কার্লোস ব্র্যাথওয়েট, ফ্যাবিয়ান অ্যালেন, কিমো পল, শেল্ডন কট্রেল ও ওশেন টমাস।

টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছে বাংলাদেশ

আগের দুই ম্যাচে হারলেও গুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচে টস জিতে নিয়েছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। শিশিরের কথা মাথায় রেখে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বিকাল ৫টায়।

প্রথমবারের মতো তিন সিরিজে জয়ের হাতছানি

প্রথম টি-টোয়েন্টিতে উইন্ডিজের বিপক্ষে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে উলটো দাপটের সঙ্গে জয় তুলে সমতায় ফিরেছে টাইগাররা। তাই তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি হয়েছে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে। আর এ ম্যাচে জিতলে প্রথমবারের মতো এক সফরের তিনটি সিরিজেই জয়ের রেকর্ড গড়বে বাংলাদেশ।

 

Comments

The Daily Star  | English

Students to resist AL event today

The student movement against discrimination will hold a mass gathering at Zero Point in the capital’s Gulistan today, demanding trial of the Awami League.

3h ago