মানুষ আমার পক্ষে আছে: রেজা কিবরিয়া
হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত গণফোরামের প্রার্থী রেজা কিবরিয়ার বাড়িতে আসামি ধরার নামে তল্লাশি চালাতে গিয়ে গ্রামবাসীর ধাওয়া খেয়েছে পুলিশ। গতকাল বুধবার বিকেলে নবীগঞ্জ উপজেলার জলালসাপ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রের বরাতে আমাদের হবিগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, গতকাল বিকেলে রেজা কিবরিয়ার বাড়িতে তল্লাশি চালাতে অবস্থান নেয় পুলিশ। এসময় গ্রামের মসজিদের মাইকে প্রচার করা হয়, ‘পুলিশ ও অপরিচিত লোকজন রেজার বাড়িতে আক্রমণ চালাচ্ছে।’ এ খবর পেয়ে শত-শত গ্রামবাসী লাঠিসোটা নিয়ে রেজার বাড়ির দিকে ছুটে আসলে পিছু হটে গোপলারবাজার ফাঁড়িতে অবস্থান নেয় পুলিশ। সূত্র জানায়, ওই সময় রেজা কিবরিয়া নবীগঞ্জে গণসংযোগে ব্যস্ত ছিলেন। এ ঘটনায় পুরো গ্রাম জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে আজ (২৭ ডিসেম্বর) দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে রেজা কিবরিয়া বলেন, “আমি বাড়িতে ছিলাম না। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ১২ জন পুলিশের একটি দল আমার বাড়ির পেছনের দরজার তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে বিভিন্ন ঘরে তল্লাশি শুরু করে। এ সময় তারা আমার খাটের নীচে কি যেন খোঁজার চেষ্টা করে। কিন্তু, সেখানে কিছু না পেয়ে তারা আমার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং কিছু কাগজ-পত্র নিয়ে যায়।”
পুলিশকে গ্রামবাসীর ধাওয়া প্রসঙ্গে রেজা কিবরিয়া বলেন, “আমার অবর্তমানে বাড়িতে পুলিশের তল্লাশির খবর পেয়ে ৪০০-৫০০ গ্রামবাসী ছুটে আসেন। এর আগেও আসামি ধরার নামে আমার বাড়িতে তল্লাশি করে পুলিশ। আমাকে বিনা কারণে প্রতিনিয়ত হয়রানি করা হচ্ছে, তা বুঝতে পেরেই এর প্রতিবাদে গ্রামবাসী পুলিশকে ধাওয়া দেয়।”
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার এসআই শামছুল ইসলাম বলেন, “রেজা কিবরিয়ার বাড়িতে নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি মুজিবুর রহমান সেফু অবস্থান করছেন এমন খবরে পুলিশ অভিযান চালায়। তখন মসজিদের মাইকে অপপ্রচারের মাধ্যমে গ্রামবাসীকে বিভ্রান্ত করে পুলিশের কাজে বাঁধা দেওয়া হয়। আসামি না পেয়ে আমরা চলে আসি।”
প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে রেজা কিবরিয়া বলেন, “আমার বাড়ি তল্লাশির ব্যাপারে পুলিশের কাছে সার্চ ওয়ারেন্ট আছে কি-না জানতে চাইলে তারা কোনো কাগজ দেখাতে পারেনি। অথচ তারা প্রথমে বলেছিলেন যে, আমার বাড়িতে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি আছে।”
রেজা কিবরিয়া আরও অভিযোগ, একইদিন বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে কাজিরবাজার থেকে গণসংযোগ করে ফেরার পথে ব্রিজের কাছে পুলিশ তার গাড়িবহর থামায়। এ সময় তাকে বহনকারী গাড়িসহ দুটি গাড়ি ছেড়ে দিলেও বাকি চারটি মাইক্রোবাস এবং আটটি মোটর সাইকেল আরোহী ৩২ জনকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। এদের মধ্যে সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও, বাকি ২৫ জনের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই বলে দাবি করেন তিনি। আটককৃতদের মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তিন জনকে এক মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, “মানুষ বুঝতে পারছে যে, এবারের নির্বাচন স্বাভাবিকভাবে হচ্ছে না। আমি কোথাও প্রচারণা চালাতে পারছি না। সরকারি দল ও পুলিশ আমাদের বিরুদ্ধে অবিচার করে বোধহয় ভালোই করছে। দেশের জনগণ তাদের বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছে।”
নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে রেজা কিবরিয়া বলেন, “আমার প্রচারণা অত্যন্ত সফল হচ্ছে। তা দেখে সরকারি দল আতঙ্কিত হয়ে মামলা দিচ্ছে। মামলার কোন হিসেব নেই। জানি নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। যদি ৫০ শতাংশও সুষ্ঠু হয় তাহলেই আমিই জয়ী হব। আওয়ামী লীগ নগ্ন কারচুপি করেও জয়ী হতে পারবে না। কারণ- মানুষ আমার পক্ষে আছে।”
Comments