জিতেই চলেছে ঢাকা

ছবি: ফিরোজ আহমেদ।

একাই বুক চিতিয়ে লড়াই করলেন নিকোলাস পুরান। ৯ ছক্কার ঝড়ো এক ইনিংস খেলেও নায়ক হতে পারলেন না সতীর্থদের ব্যর্থতায়। আর ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি তুলেই নায়ক রনি তালুকদার। তার ব্যাটে তার ব্যাটে চড়ে ১৭৪ রানের বড় লক্ষ্যই সিলেট সিক্সার্সকে দিল ঢাকা ডায়নামাইটস। এরপর বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং। তাতে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) টানা চতুর্থ জয় পেয়েছে ঢাকা। সিলেটকে ৩২ রানে হারিয়েছে দলটি।

ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন পুরান। শুরুতে কিছুটা দেখে শুনে খেললেও ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। খেলেন ৪৭ বলে ৭২ রানের ইনিংস। আউট হয়েছেন রুবেল হোসেনের একটি বাউন্সার খেলতে গিয়ে। এর আগে তার বলেই টানা দুটি বিশাল ছয় মেরেছিলেন তিনি। কিন্তু তার এ ইনিংস হারের ব্যবধানই কমিয়েছে।

কারণ লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই ধুঁকেছে দল। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই নেই চার উইকেট। ডেভিড ওয়ার্নার, আফিফ হোসেন, লিটন দাস ও নাসির হোসেন সাজঘরে। শেষ হতে না হতে গেল আরও একটি। এবার তাদের সঙ্গে যোগ দিলেন সাব্বির রহমান। দলীয় ৩৭ রানেই শেষ টপ অর্ডারের পাঁচ উইকেট। ১৭৩ রানের লক্ষ্য তখন যেন পাহাড়সম। এরপর বাকী ব্যাটসম্যানরাও নামতে পারেননি উদ্ধার কাজে। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়েছেই। অষ্টম উইকেট জুটিতে তাসকিন আহমেদের সঙ্গে গড়া ৫০ রানের জুটিই ছিল সর্বোচ্চ।

পুরান ছাড়া দুই অঙ্কের কোটা স্পর্শ করতে পেরেছেন কেবল দুই ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭ রান করেছেন তাসকিন। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ৪১ রানের বেশি করতে পারেনি দলটি। ঢাকার পক্ষে ২২ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নিয়েছেন রুবেল। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন সাকিব আল হাসান ও শুভাগত হোম।

কাইরন পোলার্ড ও আন্দ্রে রাসেল। দুই ক্যারিবিয়ান দৈত্য। চার ছক্কার ফুলঝুরি ছুটিয়ে যখন তখন পারেন ম্যাচের মোর ঘুড়িয়ে দিতে। আর স্থানীয় শুভাগত হোমও পারেন বিধ্বংসী ইনিংস খেলতে। আর এ তিন ব্যাটসম্যানকেই কিনা এক ওভারে ফিরিয়ে দিলেন তাসকিন আহমেদ। আর তাতেই দুইশর বেশি রান করার পথে থাকা ঢাকাকে আটকে রাখা গেল ১৭৩ রানে। চলতি আসরে এর আগের খেলা তিনটি ম্যাচেই ১৮০ এর বেশি রান করেছিল ঢাকা।

তাসকিনের গল্পের আগের গল্পটা অবশ্য আরেক স্থানীয় খেলোয়াড় রনি তালুকদারের। আফিফ হোসেনের ওভারের প্রথম চার বলে টানা চারটি বাউন্ডারি। যার তিনটি চার ও একটি ছক্কা। পঞ্চম বলেই ছক্কা পেয়েই গিয়েছিলেন। কিন্তু উল্টো আউট হয়ে গেলেন ওই ক্যারিবিয়ান তারকা নিকোলাস পুরানের দুর্দান্ত এক ক্যাচে। বাউন্ডারি লাইনে লাফিয়ে উঠে দারুণ এক লুফে নেন পুরান। তবে এর আগেই ক্যারিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টি ফিফটিতে বড় সংগ্রহের ভিতটা গড়ে দিয়ে যান রনি।

দলীয় ৪ রানে জাজাইয়ের উইকেট হারানোর পর সুনীল নারিনের সঙ্গে দলের হাল ধরেন রনি। গড়েন ৬৭ রানের জুটি। এরপর নারিন আউট হয়ে গেলে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সঙ্গে করেন ৩৫ রানের জুটি। কিন্তু রনি আউট হওয়ার পর তাসকিনের তোপে পথ হারায় ডায়নামাইটস। তবে অষ্টম উইকেটে অভিষিক্ত নাঈম শেখের সঙ্গে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহানের অবিচ্ছিন্ন ৪৮ রানের জুটিতে ৭ উইকেটে ১৭৩ রানের লড়াকু সংগ্রহই পায় ঢাকা।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন রনি। ৩৪ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় এ রান করেছেন এ ব্যাটসম্যান। সুনীল নারিন ২৫ ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ২৩ রান করেছেন। এছাড়া শেষ দিকে দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান নাঈম ২৫ ও সোহান ১৮ রানের দুটি কার্যকরী ইনিংস খেলেন। সিলেটের পক্ষে ৩৮ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পেয়েছেন তাসকিন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ঢাকা ডায়নামাইটস: ২০ ওভারে ১৭৩/৭ (জাজাই ৪, নারিন ২৫, রনি ৫৮, সাকিব ২৩, পোলার্ড ৩, রাসেল ৫, সোহান ১৮*, নাঈম ২৫*; তানভির ১/২১, তাসকিন ৩/৩৮, আল-আমিন ১/২৬, নাসির ০/১১, কাপালী ১/১৩, লামিচানে ০/৩৩, আফিফ ১/২৫)।

সিলেট সিক্সার্স: ২০ ওভারে ১৪১/৯ (ওয়ার্নার ৭, লিটন ৯, আফিফ ৪, নাসির ১, সাব্বির ১২, পুরান ৭২, কাপালী ২, তানভির৭, তাসকিন ১৮*, লামিচানে ১, আল-আমিন ১*; সাকিব ২/৩৪, শুভাগত ২/২৮, নারিন ১/১৩, রাসেল ০/২১, রুবেল ৩/২২, আলিস ১/১৪, পোলার্ড ০/৭)।

ফলাফল: ঢাকা ডায়নামাইটস ৩২ রানে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English
problems in filing complaints in police stations

No scope to verify authenticity when cases are filed: IGP

Instructions have already been issued to ensure that no one is arrested in a harassing manner, he says

2h ago