মেধাবী শিক্ষার্থীর ‘আত্মহত্যা’, পরিবারের অভিযোগ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি (জিইবি) বিভাগের শিক্ষার্থী তাইফুর রহমান প্রতীকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ১৪ জানুয়ারি বিকালে সিলেট শহরের কাজলশাহ এলাকার একটি বাসা থেকে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী প্রতীকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম মিয়া দ্য ডেইলি স্টারের সিলেট প্রতিনিধিকে বলেন, প্রাথমিক লক্ষণগুলোতে দেখা যাচ্ছে প্রতীক আত্মহত্যা করেছেন। তার মরদেহ এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।
তবে এই শিক্ষার্থীর ‘আত্মহত্যার’ জন্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিইবি বিভাগের শিক্ষকদের দায়ী করা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে।
নিহতের বড় বোন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের শিক্ষক শান্তা তাওহিদা ভাইয়ের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গতকাল তার ফেসবুকে একাধিক পোস্ট লিখেছেন। একটি পোস্টে তিনি লিখেন, “শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগকে আমি ছাড়বো না, অনার্স এ প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া ছেলেটাকে বিভিন্ন ইস্যু বানায়ে মাস্টার্স এ সুপারভাইজার দেয় নাই। বিভিন্ন কোর্সে নম্বর কম দিয়েছে! আমার ভাইটা টিচার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলো এটাই তার অপরাধ... গত ছয়মাস ধরে ডিপার্টমেন্ট তিলেতিলে মেরে ফেলেছে আমার ভাইকে... আমার কলিজার টুকরা কষ্ট সহ্য না পেরে কাল সুইসাইড করেছে…।”
অপর এক পোস্টে তিনি সাতজনের নাম উল্লেখ করে বলেছেন, “তারা যেনো কোনোভাবে দেশ ছাড়তে না পারে!” এই সাতজনের মধ্যে একজনকে মূল হোতা হিসেবেও উল্লেখ করেন তিনি।
আরেক পোস্টে শান্তা লিখেন, “আমার ভাইটারে গত মাসেও আমি জিজ্ঞেস করেছি আমি কি তোর বিভাগের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মামলা করবো? আমার ভাই বলছে- আপু আমি জিআরআই দিয়েছি, আমি ইউকে চলে যাব, আমার তো রেফারেন্স লাগবে! শিক্ষকরা ভয় দেখাইছে কিছু করলে রেফারেন্স লেটার দিবে না...”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেন, “আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। আমরা দেখবো ব্যাপারটি। এটি কেনো হয়েছে, কেনো আত্মহত্যা করলো আমাদের তরফ থেকে গুরুত্ব দিয়ে ব্যাপারটি দেখছি।”
এই মৃত্যুর জন্যে সাতজনকে অভিযুক্ত করে শিক্ষার্থীর বড় বোন শান্তা তাওহিদা ফেসবুকে যে পোস্ট দিয়েছেন তা উল্লেখ করে উপাচার্যের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তালিকা কে দিয়েছে তা আমি দেখি নাই।… সেটা কে করেছে না করেছে আমি জানি না। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবো না।”
তদন্ত কমিটি আজ (১৫ জানুয়ারি) গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে উপাচার্য আরও বলেন, “ভালোভাবে, গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টা দেখে তারা যতো দ্রুত সম্ভব আমাদেরকে রিপোর্ট দিবেন।”
শাবিপ্রবি’র প্রোক্টর জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই মৃত্যু কারণ খতিয়ে দেখতে নিহতের পরিবারের পাশে থাকবে।”
Comments