তাইজুল, মাহমুদউল্লাহর ঝলকে খুলনার প্রথম হাসি

Mahmudullah
দলের জয়ে বল হাতে বড় অবদান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

প্রথম চার ম্যাচ হেরে আত্মবিশ্বাস তলানিতে নিয়ে সিলেট এসেছিল খুলনা টাইটান্স। ভেন্যু বদলে অবস্থার পরিবর্তনের আশায় থাকা দলটি অবশেষে পেয়েছে উৎসবের উপলক্ষ। মন্থর ও টার্নিং উইকেটে রাজশাহী কিংসকে খুব অল্প রানের লক্ষ্য দিয়েও স্পিনারদের মুন্সিয়ানায় জিতেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এ বছরের বিপিএলের এটাই ছিল প্রথম ম্যাচ। অথচ মঙ্গলবার প্রথম ম্যাচের গ্যালারি থাকল অনেকটাই ফাঁকা। সেখানে খেলাও হয়েছে ম্যাড়ম্যাড়ে। টি-টোয়েন্টির চেনা ধামাকার দেখা মেলেনি, রান পেতে খাটুনি গেছে দুদলের ব্যাটসম্যানদেরই। আগে ব্যাট করে ১২৮ রান করা খুলনাকে জবাব দিতে নেমে শেষ ওভারে রাজশাহী অলআউট হয় ১০৩ রানে। দলের ২৫ রানের জয়ে ১০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে তাইজুল  ইসলাম আর ১২ রানে ২ উইকেট নিয়ে মাহমুদউল্লাহই খুলনার জয়ের মূল দুই নায়ক।

এই নিয়ে চার ম্যাচ হারার পর জিতল খুলনা। আর পাঁচ ম্যাচ খেলে রাজশাহীর ঝুলিতে জমা পড়ল তৃতীয় হার। 

উইকেট মন্থর, বল আসছে ধীরে। তবু লক্ষ্যটা ছিল বেশ নাগালের মধ্যেই। একটা জুতসই শুরু পেলেই জেতার পথ তৈরি হওয়ার কথা রাজশাহীর। কিন্তু শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে মেহেদী হাসান মিরাজদের ইনিংস।

দলের ১ রানেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লরি ইভান্স। ওয়ানডাউনে নেমেই ছক্কায় শুরু করা মিরাজ চনমনে ব্যাট করছিলেন। মুমিনুলের সঙ্গে গড়ে তুলেন জুটিও। তবে জুটিতে ২৯ রান উঠানোর পরই সব এলোমেলো। মাহমুদউল্লাহর বলে এলবিডব্লিও হয়ে থামেন মুমিনুল, ২ রান পরই ছন্দে মিরাজ ক্যাচ দেন তাইজুলের বলে।

এরকম উইকেটে ব্যাট করা সৌম্যের ব্যাটিং ধরনের জন্য আদর্শ নয়। তবে বিরূপ পরিস্থিতিতেই তো দেখাতে হবে নিজের সামর্থ্য। তাইজুলের বলে সৌম্য সেখানে ব্যর্থ হলে বিপদ চারগুণ হয়ে যায় রাজশাহীর। ৩২ রানেই যে হারায় ৪ উইকেট।

আগের ম্যাচে ৪২ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা হওয়া জাকির হাসানও বিলিয়ে দেন নিজের উইকেট। পারেননি রায়ান টেস ডসকেটও। মন্থর উইকেটে বল টার্ন করা শুরু করলে যেমন খেলতে হয় তার ধারেকাছেও যেতে পারেনি রাজশাহী।

শেষ দিকে খেলায় ছিল না কোন উত্তাপ। রাজশীর লোয়ার অর্ডার কেবল চেষ্টা করেছে ব্যবধান কমানর।

দুপুরে টস জিতে সিলেটের টার্নিং পিচে আগে ব্যাটিং নিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। আইরিশ পল স্টার্লিংকে বসিয়ে ডেভিড ভিসেকে খেলানোয় এই ম্যাচে তাদের ওপেনিংয়ে আসে বদল। জহুরুল ইসলাম-জুনায়েদ সিদ্দিকী অবশ্য ভালো শুরু আনতে পারেননি।

চার-ছয়ে ঝড় তুলার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন জহুরুল। কিন্তু ইশুরু উদানার বলে সে ঝড় থেমেছে ১৩ রানেই। পুরো টুর্নামেন্টেই বিশের ঘরে রান করেই কুপোকাত হওয়া জুনায়েদ এদিন ১৪ রানেই থামান ইনিংস।

সময় নিয়ে থিতু হওয়ার চেষ্টা করা ডেভিড মালানও টিকতে পারেননি। পাওয়ার প্লের প্রথম ছয় ওভারে ৪২ তুললেও উইকেট পতনের ধারা আটকায়নি। ওয়ানডাউনে নামা ডেভিড মালান সময় নিয়ে থিতু হতে চেয়েছিলেন, পারেননি। উলটো ২১ বল খেলে ১৫ করায় দলের উপর বাড়ে চাপ।

সেই চাপ থেকে বেরুতে পারেননি মাহমুদউল্লাহরা। অধিনায়ক নিজে দুই অঙ্কে যাওয়ার আগে ফেরেন বাজে শটে। বরাবরের মতই ব্যর্থ নাজমুল হোসেন শান্ত এবার রান আউটে কাটা পড়েন ১১ রান করে। এমন পরিস্থিতিতে খেলার গতি যিনি বদলে দিতে পারতেন সেই কার্লোস ব্র্যাথওয়েটও করেন হতাশ। আরাফাত সানির স্পিন বুঝতে না পেরে এলবিডব্লিও হয়ে ৮ রানেই শেষ হয় তার দৌড়।

পরে আরিফুল হক আর ডেভিড ভিসে মিলে কিছুটা রান বাড়িয়েছেন। তবু সংগ্রহটা হয়নি জুতসই। কিন্তু মন্থর আর টার্নিং উইকেটে স্পিনারদের বল গ্রিপ করাই ওই রানই হয়ে যায় বিশাল।

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

খুলনা টাইটান্স: ২০ ওভারে ১২৮/৯ (জহুরুল ১৩ , জুনায়েদ ১৪, মালান ১৫, মাহমুদউল্লাহ ৯, শান্ত ১১, ব্র্যাথওয়েট ৮, আরিফুল ২৬, ভিসে ১৩, তাইজুল , জুনায়েদ খান ১,* শরিফুল ২*; কামরুল ০/১৬, উদানা ২/৩৬, মিরাজ ২/২১, মোস্তাফিজ ১/২১, সানি ২/২৫, সৌম্য ০/৬)

রাজশাহী কিংস: ১৯.৫ ওভারে ১০৩ (মুমিনুল ৭, ইভান্স ০, মিরাজ ২৩,  সৌম্য ২, রায়ান টেন ১৩, জাকির ৭, জঙ্কার ১৫, উদানা ৬ , সানি ১৫ , কামরুল ১৩ , মোস্তাফিজ ০* ; জুনায়েদ খান ৩/২৬, ভিসে ১/২৮, তাইজুল ৩/১০, মাহমুদউল্লাহ ২/১২ ,মালান ০/২১)

ফল: খুলনা টাইটান্স ২৫ রানে জয়ী।

 

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Large-scale Chinese investment can be game changer for Bangladesh: Yunus

The daylong conference is jointly organised by Bangladesh Economic Zones Authority and Bangladesh Investment Development Authority

2h ago