মেহেদীর স্পিনে সিলেটকে নিজ মাঠে গুঁড়িয়ে দিল কুমিল্লা
মেহেদী হাসানের স্পিনে শুরুতেই বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিল সিলেট সিক্সার্স। পড়েছিল চরম বিব্রতকর পরিস্থিতির সামনে। সেখান থেকে অলক কাপালীর ব্যাটে কিছুটা রক্ষা পেলেও লড়াই করার মতো রান জমা হয়নি বোর্ডে। অল্প রান তাই অনায়াসে পেরিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
মঙ্গলবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিলেটের করা ৬৯ রান ৫৩ বল হাতে রেখেই ৮ উইকেটে পেরিয়ে গেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
জেতার লক্ষ্য মাত্র ৬৯। কেবল দাঁড়িয়ে থাকলেই চলে। কিন্তু ওই রান তুলতে শুরুতে কাঁপাকাঁপি অবস্থা হয় কুমিল্লার। বোর্ডে রান উঠার আগেই এনামুল হককে রান আউট করে ফেরান আফিফ। সোহেল তানভীরের বলে এলবডব্লিও হওয়া তামিমও ফেরেন কোন রান না করেই। তার এলবিডব্লিও নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন ছিল, কিন্তু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য এই ম্যাচে ছিল না ডিআরএস।
তৃতীয় উইকেটে ওই ভীতিকর অবস্থা অবশ্য সরান এবারের বিপিএলে প্রথমবার নামা শামসুর রহমান ও অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। এই দুজনকে আর ধন্দে ফেলতে পারেনি সিলেটের বোলাররা। তাদের অবিচ্ছিন্ন ৫৯ রানের জুটিতেই শেষ হয়েছে ম্যাচ। অভিজ্ঞ শামসুর দলকে জিতিয়ে অপরাজিত থাকেন ৩৪ রানে, ইমরুল করেন ৩০ রান।
এর আগে পুরো সময়টাই ছিল বোলারদের রাজত্ব। বিশেষ করে অফ স্পিনার মেহেদী হাসান স্পিন ভেল্কিতে চিনিয়েছেন নিজেকে।
দিনের প্রথম ম্যাচেই টের পাওয়া গিয়েছিল মন্থর এই উইকেটে আছে স্পিনারদের লোভ জাগানিয়া টার্ন। কিন্তু টস হেরে ব্যাট করতে নামা সিলেট সিক্সার্সের এই অবস্থা হবে কে ভেবেছিল। প্রথম ম্যাচে গ্যালারি ছিল ফাঁকা। স্থানীয় দলের খেলা বলেই সন্ধ্যায় গ্যালারির বেশিরভাগ ভরে উঠেছিল। কিন্তু নড়েচড়ে বসার আগেই হতাশায় চুল ছেড়ার দশা তাদের।
মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের প্রথম ওভার মেডেন হওয়ার পর দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এলেন অফ স্পিনার মেহেদী হাসান। ওই ওভারেই টপাটপ নাই আন্দ্রে ফ্লেচার, ডেভিড ওয়ার্নার, আফিফ হোসেন। প্রথম দুজন লাইন মিস করে বোল্ড, পরের জন এলবডব্লিও। হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে পরের ওভারে কুপোকাত নিকোলাস পুরানও। এক ওভার মাঝে রেখে উইকেট বিলান লিটন দাস আর সাব্বির রহমান। ৪৬ বলের মধ্যে ২২ রান তুলতেই নেই ৭ উইকেট। খেলা তখনই অনেকটা শেষ।
যেকোন ধরনের টি-টোয়েন্টিতে সর্বনিম্ন ৩০ রানের গুটিয়ে যাওয়ার চরম বিব্রতকর পরিস্থিতির সামনে তখন সিলেট। সেখান থেকে দলকে উদ্ধারকর্তা সিলেটের লোকাল হিরো অভিজ্ঞ অলক কাপালী। এক প্রান্তে আগলে রেখেছেন তিনিই। বাকিরা সবাই আউট হলেও তিনি থেকে যান অপরাজিত। দলের ৬৮ রানের মধ্যে ৩৩ রানই তাই তার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিলেট সিক্সার্স : ১৪.৫ ওভারে ৬৮ (ওয়ার্নার ০, ফ্লেচার ৪, লিটন ৬, আফিফ ০, পুরান ০, সাব্বির ৬, অলক ৩৩, তানভীর ৫, তাসকিন ৪, নাবিল ০, আল-আমিন ৫ ; সাইফুদ্দিন ১/১৮, মেহেদী ৪/২২, ওয়াহাব ৩/১৫, ডসন ২/৪, আফ্রিদি ০/৮)
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১১. ১ ওভারে ৬৯/২ (এনামুল ০, তামিম ০, শামসুর ৩৪* , ইমরুল ৩০* ; তানভীর ১/১০, আফিফ ০/১০, নাবিল ০/১৫, তাসকিন ০/৮, অলক ০/১২, আল-আমিন ০/১০)
ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ৮ উইকেটে জয়ী।
Comments