সাকিবের কাছেই হারল সিলেট
বল হাতে দারুণ করলেও ব্যাট হাতে তেমন সুবিধা করে উঠতে পারছিলেন না ঢাকা ডায়নামাইটস অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। উইকেটে সেট হয়েও লম্বা হচ্ছে না তার ইনিংস। তবে অবশেষে জ্বলে উঠলেন অধিনায়ক। তাতে ম্লান করে দিলেন প্রতিপক্ষ সিলেট সিক্সার্স অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের ফিফটি। সাকিবের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সিলেটকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে বিপিএলের চতুর্থ আসরের চ্যাম্পিয়নরা।
টসটা এদিন জিতেছিল সিলেটই। আর প্রথম ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৮ রানে করে দলটি। জবাবে শুরুতে সংগ্রাম করলেও অধিনায়ক সাকিবের ব্যাটে জয় পেতে সমস্যা হয়নি ঢাকার। ১৮ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় দলটি। ম্যাচসেরা সাকিব বলে ২টি উইকেট নেওয়ার পর খেলেন অপরাজিত ৬১ রানের ইনিংস। ছয় ম্যাচে এটা তাদের পঞ্চম জয়। অপরদিকে ছয় ম্যাচে এটা সিলেটের চতুর্থ হার।
আগের ম্যাচের দারুণ ওপেনিং জুটি দেখেই হয়তো এ ম্যাচেও ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন লিটন দাস ও সাব্বির রহমান। তবে আগের ম্যাচের মতো উড়ন্ত সূচনা এনে দিতে পারেননি। তবে খুব একটা খারাপও করেননি তারা। ৩৮ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটসম্যান। কিন্তু জুটি ভাঙতেই আউট দুই ওপেনার। ফলে কিছুটা চাপে পড়ে যায় সিলেট।
তবে তৃতীয় উইকেটে তরুণ আফিফ হোসেনের সঙ্গে ৪৩ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে সে চাপ সামলে নেন ডেভিড ওয়ার্নার। কিন্তু জুটি ভাঙতেই ৮ রানের ব্যবধানে তিনটি উইকেট হারায় সিলেট। ফলে ৮৬ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে আবারো চাপে পড়ে যায় দলটি।
তবে ষষ্ঠ উইকেটে তরুণ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জাকের আলির সঙ্গে ৬৩ রানের জুটি গড়ে আবারো চাপ সামলে নেন অধিনায়ক ওয়ার্নার। এরপর অধিনায়ক আউট হয়ে গেলে শেষ দিকে দ্রুত রান তুলতে পারেনি আর কোন ব্যাটসম্যান। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৮ রান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় সিলেটকে।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন ওয়ার্নার। ৪৩ বলে ৮টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন অধিনায়ক। ১৪ বলে ২৭ রান করেন লিটন। শেষ দিকে ১৮ বলে ২৫ রানের কার্যকরী এক ইনিংস খেলেন জাকের। ঢাকার পক্ষে ৪২ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পেয়েছেন অ্যান্ড্রু বার্চ। ২টি উইকেট পেয়েছেন সাকিব।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি ঢাকার। দলীয় ২৩ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে জোড়া ধাক্কা খায় দলটি। এরপর দলীয় ৩৭ রানে হারায় আরও একটি উইকেট। ফলে ১৫৯ রানের লক্ষ্যে শুরুতেই বড় চাপে পড়ে যায় দলটি। তবে চতুর্থ উইকেটে আফগানি তরুণ দারউইস রাসুলিকে নিয়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক সাকিব। গড়েন ৭৫ রানের দারুণ এক জুটি। মূলত এ জুটিতেই জয়ের ভিত পেয়ে যায় দলটি।
এরপর রাসুলি আউট হলেও জয় পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি ঢাকাকে। উল্টো উইকেটে নেমেই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন আন্দ্রে রাসেল। মাত্র ২১ বলে খেলেন ৪০ রানের ইনিংস। সাকিবের সঙ্গে তার অবিচ্ছিন্ন ৫১ রানের জুটিতে সহজেই মিলে যায় দলের জয়। তবে ঢাকার ইনিংসের চালিকাশক্তি ছিলেন সাকিব। হার না মানা ৬১ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেই মাঠ ছেড়েছেন তিনি। ৪১ বলের ইনিংসে খেলেছেন ৮টি চার ও ২টি ছক্কা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিলেট সিক্সার্স: ২০ ওভারে ১৫৮/৮ (লিটন ২৭, সাব্বির ১১, আফিফ ১৯, ওয়ার্নার ৬৩, কাপালী ০, পুরান ৬, জাকের ২৫, তাসকিন ১, লামিচানে ০*; রাসেল ১/২০, বার্চ ৩/৪২, সাকিব ২/৩৪, নারিন ১/৩২, আলিস ০/২, রুবেল ১/২৪)।
ঢাকা ডায়নামাইট: ১৭ ওভারে ১৬৩/৪ (মিজানুর ১, নারিন ২০, রনি ১৩, সাকিব ৬১*, রাসুলি ১৯, রাসেল ৪০*; তাসকিন ১/৩২, ইরফান ২/৩৮, লামিচানে ১/২৭, আল-আমিন ০/৩০, কাপালী ০/৩১)।
ফলাফল: ঢাকা ডায়মানাইটস ৬ উইকেটে জয়ী।
Comments