জিতেই চলেছে মুশফিকের চিটাগং

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি তুলে নিলেন ইয়াসির রাব্বি। টানা দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি অধিনায়ক মুশফিকুর রহীমেরও। শেষদিকে ঝড় তুললেন প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা দাশুন শানাকা। ঝড় তুললেন নজিবুল্লাহ জাদরানও। তাতে মিলল বিপিএলের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড সংগ্রহ। সে লক্ষ্য তাড়ায় কুলিয়ে উঠতে পারেনি ছন্দের খোঁজে থাকা খুলনা টাইটান্স। ২৬ রানের হার মানতে হয় দলটিকে।

চলতি অভিষেক ম্যাচেই শক্তিশালী রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল চিটাগং ভাইকিংস। সাদামাটা দল নিয়ে শুরুতে আত্মবিশ্বাসে চুড়ায় থাকা দলটি সেই থেকেই ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলে চলেছে। এদিন খুলনাকে হারিয়ে আসরের চতুর্থ জয় তুলে নিল দলটি। হেরেছে মাত্র একটি। অপর দিকে সাত ম্যাচে ছয়টিতে হেরে গ্রুপ থেকে বিদায় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেল খুলনার।

২১৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা খুলনার শুরুটা ছিল ভয়াবহ। দলীয় ১৮ রানেই হারিয়ে ফেলে টপ অর্ডারের তিনটি উইকেট। যার মধ্যে রয়েছে ইনফর্ম ব্যাটসম্যান জুনায়েদ সিদ্দিকির উইকেটও। ফলে শুরুতেই বড় চাপে পড়ে যায় দলটি। তবে চতুর্থ উইকেটে ব্রান্ডন টেইলরের সঙ্গে ৬৮ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে সে চাপ সামলে নেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

তবে এ জুটি ভাঙতেই আবার সব উলটপালট। স্কোরবোর্ডে আর ২৩ রান যোগ করতে এ দুই সেট ব্যাটসম্যান তো আউট হনই, সঙ্গে হারায় আরও এক উইকেট। এরপর ডেভিড ওয়েজির সঙ্গে দারুণ প্রতিরোধ গড়েন ব্যাটসম্যান বনে যাওয়া তাইজুল ইসলাম। সপ্তম উইকেটে ৬৩ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। এ দুই ব্যাটসম্যানের লড়াই কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে।

চলতি আসরে প্রথম হাফসেঞ্চুরি তুলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫০ রানের ইনিংস খেলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।  ২৬ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন তিনি। শেষ দিকে ঝড় তুলে ২০ বলে ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৪০ রান করেন ওয়েজি। এছাড়া টেইলর ২৮ রান করেন। অপরাজিত ২২ রান করেন তাইজুল। চিটাগংয়ের পক্ষে ৩৩ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন আবু জায়েদ রাহী। ২টি করে উইকেট পান খালেদ আহমেদ ও ক্যামেরুন ডেলপোর্ট।

টসটা জিতে নিয়েছিল খুলনাই। শিশিরের কথা ভেবে ব্যাটিং স্বর্গে ফিল্ডিং বেছে নিলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। আর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী চিটাগং। দলের সব ব্যাটসম্যানই কমবেশি তোপ দাগিয়েছেন। শুরুটা করেন মোহাম্মদ শাহজাদ। তবে বড় সংগ্রহের ভিত গড়েন দুই স্থানীয় খেলোয়াড় অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম ও ইয়াসির আলি রাব্বি।

দুই ব্যাটসম্যানই তুলে নিয়েছেন ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরি। তৃতীয় উইকেটে গড়েছেন ৮৩ রানের দারুণ এক জুটি। তবে শেষ দিকে নজিবুল্লাহ জাদরান ও দাশুন শানাকার ঝড়ো গতির জুটির অবদানও কম নয়। মাত্র ১৪ বলে এ দুই ব্যাটসম্যান গড়েছেন ৪৪ রানের জুটি। শুভাশিস রায়ের করা শেষ ওভারে ২৩ সংগ্রহ করেন তারা। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২১৪ রান করে দলটি।

অথচ দিনের শুরুটা দেখে শুনেই করেছিলেন দুই ওপেনার শাহজাদ ও ক্যামেরুন ডেলপোর্ট। প্রথম ৩ ওভারে আসে মাত্র ১৩ রান। এরপরের ওভারে আক্রমণ করতে গিয়ে বিদায় নেন ডেলপোর্ট। তবে অপর প্রান্তে তোপ দাগাতে থাকেন শাহজাদ। ১৭ বলে সমান ৩টি করে চার ও ছক্কায় খেলেন ৩৩ রানের ইনিংস। ইয়াসিরের সঙ্গে গড়েন ৩৯ রানের জুটি।

ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি তুলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন ইয়াসির। ৩৬ বলের এ ইনিংসে ৫টি চার ও ৩টি চার মারেন এ ব্যাটসম্যান। অধিনায়ক মুশফিক খেলেন ৫২ রানের ইনিংস। ৩৩ বলে ৮টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন তিনি। মাত্র ১৭ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৪২ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেছেন শ্রীলঙ্কান তারকা দাশুন শানাকা। ৫ বলে ১৬ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন নজিবুল্লাহ। খুলনার পক্ষে ২৬ রানের খরচায় ২টি উইকেট নিয়েছেন ডেভিড ওয়েজি। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

চিটাগং ভাইকিংস: ২০ ওভারে ২১৪/৪ (শাহজাদ ৩৩, ডেলপোর্ট ১৩, ইয়াসির ৫৪, মুশফিক ৫২, শানাকা ৪২*, নজিবুল্লাহ ১৬*; শুভাশিস ০/৩৮, মালিঙ্গা ০/৪৪, শরিফুল ১/৪৭, তাইজুল ১/৪৫, ওয়েজি ২/২৬, মাহমুদউল্লাহ ০/১৩)।

খুলনা টাইটান্স: ২০ ওভারে ১৮৮/৮ (স্টার্লিং ০, জুনায়েদ ১২, আল-আমিন ৫, টেইলর ২৮, মাহমুদউল্লাহ ৫০, আরিফুল ১১, ওয়াজে ৪০, তাইজুল ২২*, শরিফুল ৯, মালিঙ্গা ৫*; রাহী ৩/৩৩, খালেদ ২/২৯, সানজামুল ০/৪৬, শানাকা ০/৩২, নাঈম ১/২২, ডেলপোর্ট ২/২৫)।

ফলাফল: চিটাগং ভাইকিংস / রানে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English

Public gatherings banned in key Dhaka areas from tomorrow: ISPR

Restrictions imposed to maintain order near Chief Adviser’s Office, military zones

46m ago