‘বাল্যবিবাহ নিরোধ নামক কুফরি আইন প্রত্যাহার করে...এসব এনজিও নিষিদ্ধ করতে হবে’
বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য মাঝেমধ্যেই আলোচনায় আসে। আজ (২১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন করেছে আওয়ামী ওলামা লীগসহ সমমনা ১৩ দল। সেখানে তারা দেশে বাল্যবিয়ে নিরোধে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিষিদ্ধ করা, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন না করাসহ ১৩ দফা দাবি জানিয়েছে।
মানবন্ধনে তারা বলেন, “বাংলাদেশে বিবাহ বা বাল্যবিবাহ নিয়ে এদেশের জনগণ বা সরকারের কোন মাথাব্যথা না থাকলেও পবিত্র দ্বীন ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী পশ্চিমা এনজিওগুলোর মাথাব্যথা বেশী। বিশ্বব্যাপী মুসলিম জনসংখ্যা হ্রাসে তারা কথিত সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী, মিডিয়া, সরকারের কর্তাব্যক্তিদের পেছনে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। সভা সেমিনার, সিম্পোজিয়ামে নিয়ে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে বলাচ্ছে, মিডিয়ায় লিখাচ্ছে ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। বিনিময়ে নগদ খাম ধরিয়ে দিচ্ছে। দেশের পারিবারিক মূল্যবোধ ও সামাজিক বন্ধন ধ্বংস, এইডস ছড়ানো, জনসংখ্যা হ্রাস, দেশদ্রোহী হাজারো তৎপরতার সাথে জড়িত এসব এনজিও।”
তারা আরও বলেন, “এসবের মধ্যে রয়েছে, আন্তর্জাতিক সংস্থা টেরেডেস হোমস নেদারল্যান্ডস, নিউইয়র্ক ভিত্তিক প্রোটেকটিং হিউম্যান রাইটস (পিএইচআর), যুক্তরাজ্যভিত্তিক সেভ দ্য চিলড্রেন, ইহুদী স্বার্থ সংরক্ষণকারী ইউনিসেফ, কুখ্যাত ইহুদী জর্জ সরোসের অর্থায়নে পরিচালিত ব্র্যাক। বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ এবং দেশ ও মুসলিম বিরোধী চক্রান্তে লিপ্ত এসব এনজিওদের নিষিদ্ধ করতে হবে। অবিলম্বে বাল্যবিবাহ নিরোধ নামক কুফরি আইন প্রত্যাহার করে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অবমাননার কারণে তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে।”
এ বিষয়গুলো নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের সঙ্গে আওয়ামী ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব কাজী মাওলানা মো. আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরীর কথা হয়।
আলহাজ্ব কাজী মাওলানা মো. আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী বলেন, “যেহেতু বাল্যবিবাহ একটি খাস সুন্নত এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাল্যবিয়ে চালুর জন্য একটি আইন করার প্রস্তাব করতে চেয়েছিলেন কিন্তু এনজিওদের জন্য পারেননি। আজকে দেখা যাচ্ছে যে, অবৈধ মেলামেশা, বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম, ধর্ষণ হচ্ছে, ১৫-১৬ বছর বয়সে কুমারী মা হয়ে যাচ্ছে। আমরা এসব প্রতিরোধে একটি আইন করার জন্য বলেছি। এছাড়াও, লেখনীর মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষ নবীর প্রতি মানহানিকর বক্তব্য লিখছে। তাই আমরা বলেছি যে, একটি আইন করলে আওয়ামী লীগ যেনো আজীবন ক্ষমতায় থাকে দেশের আলেম-ওলামা ও পীর-মাশায়েখগণ সেই দোয়া করবে।”
বাল্যবিয়ে নিরোধে কারা কাজ করছে, তাদের সঙ্গে আপনাদের কথা হয়েছে কখনো?
ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “সুলতানা কামালসহ বিভিন্ন এনজিওরা আছে না, ওরা। এই ধরেন ইউনিসেফ আছে, ওরাসহ বিভিন্ন আরকি। এনজিও, সরকার ও নারীবাদীরা অবৈধ কুমারী মাতা হতে সমর্থন করছে। অনেকেই তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলছে না। এই জন্যই আমরা এইগুলি বলেছি। সে জন্য একটি আইন করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছি।”
সরকার কি আপনাদের দাবিগুলো মেনে নেবে বলে মনে হয়?
মাওলানা আবুল হাসান শেখ বলেন, “এই ধরেন ৫-৬ বছর ধরে আমাদের প্রত্যেকটি দাবি মেনে নিয়েছে সরকার। শিক্ষানীতি নিয়ে এই দেশে আমরাই সর্বপ্রথম দাবি করেছিলাম, প্রধানমন্ত্রী মেনে নিয়েছেন। এসকে সিনহার পদত্যাগ চেয়েছিলাম সর্বপ্রথম আমি। এবারও আমরা ১৩টি দাবি দিয়েছি। সরকারের লোকজন, এনএসআই, ডিজি, ডিজিএফআই, এসবি সবাই বলছে যে ভালো কাজ। আমাদের সব দাবি আস্তে আস্তে কার্যকর হবে। ইনশাআল্লাহ।”
Comments