ফ্রাইলিঙ্ক জাদুতে সাকিবের ঢাকাকেও হারাল চিটাগং

এ যেন জাদু হাতে নিয়েই মাঠে নামেন রবি ফ্রাইলিঙ্ক। বল কি ব্যাট। দুই বিভাগেই অনন্য এ অলরাউন্ডার। প্রয়োজনীয় সময়ে এনে দেন ব্রেকথ্রু। আর ব্যাট হাতে দলের খুব প্রয়োজনীয় সময়ে মারমুখী ব্যাটিং। তার আরও একটি নিদর্শন দেখল এদিন ঢাকা ডায়নামাইটস। চিটাগং ভাইকিংসকে এনে দিয়েছেন রোমাঞ্চকর এক জয়। ৩ উইকেটের জয় নিয়ে ঢাকার সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে উঠে এলো চিটাগং।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ।

এ যেন জাদু হাতে নিয়েই মাঠে নামেন রবি ফ্রাইলিঙ্ক। বল কি ব্যাট। দুই বিভাগেই অনন্য এ অলরাউন্ডার। প্রয়োজনীয় সময়ে এনে দেন ব্রেকথ্রু। আর ব্যাট হাতে দলের খুব প্রয়োজনীয় সময়ে মারমুখী ব্যাটিং। তার আরও একটি নিদর্শন দেখল এদিন ঢাকা ডায়নামাইটস। চিটাগং ভাইকিংসকে এনে দিয়েছেন রোমাঞ্চকর এক জয়। ৩ উইকেটের জয় নিয়ে ঢাকার সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে উঠে এলো চিটাগং।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৬ রানের। প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে ফ্রাইলিঙ্ককে স্ট্রাইক দেন সানজামুল ইসলাম। পরের বলে দারুণ এক ছয়। তৃতীয় বলে পেলেন দুই রান। এরপর আবার ছয়। তখন সমীকরণ দাঁড়ায় ২ বলে ১ রান। কিন্তু ফ্রাইলিঙ্ক যে তখন দারুণ ছন্দে। ছক্কা হাঁকিয়েই এক বল বাকী থাকতে জয় নিশ্চিত করেন তিনি।

তবে লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি চিটাগংয়ের। ঢাকার মতো রানের খাতা খোলার আগে উইকেট হারায় তারাও। শূন্য হাতেই মোহাম্মদ শাহজাদকে ফেরান আন্দ্রে রাসেল। তাতেই শুরুতেই মেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস। তবে দ্বিতীয় উইকেটেই ইয়াসির আলিকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন ক্যামেরুন ডেলপোর্ট। ৩২ রানের জুটিও গড়েছিলেন তারা। কিন্তু এরপরই ঘূর্ণির মায়াজাল বিছান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

সেট এ দুই ব্যাটসম্যানকে তো ফেরানই, ফেরান আগের ম্যাচে ঝড় তোলা দাশুন শানাকাকেও। ফলে দলীয় ৬৩ রানে চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় চিটাগং। এরপর ছন্দের খোঁজে থাকা মোসাদ্দেক হোসেনকে নিয়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ৩২ রানের জুটি গড়ে সে চাপ সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দলীয় ৯৫ রানে মুশফিকের বিদায়ে বিপদেই থাকে দলটি।

তবে এক প্রান্তে চিটাগংয়ের আশা জিইয়ে টিকে ছিলেন মোসাদ্দেক। ধীরে ধীরে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগিয়েও গিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯তম ওভারে রানআউট হন তিনি। তখনও জয় থেকে ২১ রান দূরে চিটাগং। হারই দেখছিল দলটি। কিন্তু শেষ দিকে সব কিছু বদলে দিলেন ওই ফ্রাইলিঙ্ক। শেষ ওভারের তিন ছক্কায় ৩ উইকেটের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে দলটি।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৩ রানের ইনিংস খেলেছেন মোসাদ্দেক। ৩০ রান আসে ডেলপোর্টের ব্যাট থেকে। ২২ রান করেন মুশফিক। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে ফ্রাইলিঙ্কের ১০ বলে খেলা ২৫ রানের ইনিংসই ম্যাচের সেরা। ঢাকার পক্ষে দারুণ বোলিং করেছেন সাকিব। মাত্র ১৬ রানের বিনিময়ে পেয়েছেন ৪টি উইকেট।

এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করে উঠতে পারেনি ঢাকা। শুরুতেই তোপ দাগান দারুণ ছন্দে থাকা রবি ফ্রাইলিঙ্ক। খালি হাতে ফেরান রনি তালুকদারকে। আর বড় ক্ষতি করার আগেই বিপদজনক সুনীল নারিনকে ফেরান। এরপর নবম ওভারে বল হাতে নিয়েই দুই বিদেশি হেইনো কুন ও ডারইউশ রাসুলি এক ওভারেই বিদায় করেন আবু জায়েদ রাহী। ফলে বেশ বড় চাপেই পড়ে যায় দলটি।

৫৬ রানে চার উইকেট হারানো দলটির উদ্ধারকাজ নুরুল হাসান সোহানকে নিয়ে শুরু করেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ৩৯ রানের জুটিও গড়েছিলেন। কিন্তু পার্টটাইম স্পিনার ক্যামেরুন ডেলপোর্টই বদলে দেন ম্যাচের চিত্র। ১৫তম ওভারে ফেরান এ দুই সেট ব্যাটসম্যানকে। ফলে বড় বিপদেই পড়ে যায় দলটি।

তবে শেষ দিকে শুভাগত হোম দারুণ লড়াই করেন। ১৬ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তাতে ঢাকা পায় লড়াই করার পুঁজি। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৯ রান করে দলটি। সর্বোচ্চ ৩৪ রান আসে অধিনায়ক সাকিবের ব্যাট থেকে। এছাড়া ২৭ রানের ইনিংস খেলেন নুরুল হাসান সোহান।

চিটাগংয়ের পক্ষে ২৫ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নিয়ে দিনের সেরা বোলার ক্যামেরুন ডেলপোর্ট। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন রবি ফ্রাইলিঙ্ক ও আবু জায়েদ রাহী।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ঢাকা ডায়নামাইটস: ২০ ওভারে ১৩৯/৯ (রনি ০, নারিন ১৮, কুন ১৮, সাকিব ৩৪, ডারউইশ ০, সোহান ২৭, রাসেল ১, শুভাগত ২৮, নাঈম ৬, মোহর ০*, ফ্রাইলিঙ্ক ২/১৯, নাঈম ০/২৭, খালেদ ১/২৭, রাহী ২/২৭, মোসাদ্দেক ০/১১, ডেলপোর্ট ৩/২৫)।

চিটাগং ভাইকিংস: ১৯.৫ ওভারে ১৪৫/৭ (শাহজাদ ০, ডেলপোর্ট ৩০, ইয়াসির ১৫, মুশফিক ২২, শানাকা ২, মোসাদ্দেক , নাঈম ৪, ফ্রাইলিঙ্ক ২৫*, সানজামুল ২*; রাসেল ১/২৫, শুভাগত ০/১৬, সাকিব ৪/১৬, নারিন ০/২৬, রুবেল ১/২৪, মোহর ০/৩৭)।

ফলাফল: চিটাগং ভাইকিংস ৩ উইকেটে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago