ঝড় না তুলেও জেতালেন গেইল

chris gayle
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

অ্যালেক্স হেলস যখন হাফসেঞ্চুরি স্পর্শ করলেন গেইল তখন ব্যাট করছেন ৪ রানে। খেলা না দেখলে নির্ঘাত ভাবতেই হতো হয়তো স্কোরকার্ডে ভুল। কিন্তু বাস্তবতা এটাই। ক্যারিবিয়ান দৈত্যকে ছাপিয়ে শুরুতে আলো কাড়েন এ ইংলিশ ওপেনারই। হেলস মারছিলেন, গেইল তখন নীরব দর্শক। এরপর ঝড় তুললেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। একই ভূমিকায় গেইল। দেখে শুনে খেললেন এ ক্যারিবিয়ান। দলের জয়ের ভিত গড়েই আউট হলেন। তাতে খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে রংপুরের জয়টি আসে ৬ উইকেটের বিনিময়ে।

হেলস আউট হওয়ার পর থেকেই প্রেক্ষাপট বদলাতে শুরু করেন গেইল। ডেভিড ওয়েজির করা পরের ওভারে ব্যাটের কানায় লেগে অল্পের জন্য বোল্ড হওয়া থেকে বাঁচলেন তিনি। কিন্তু মিলে গেল চার রান। পরের ওভারে ইয়াসির শাহর বলে টানা দুই ছক্কা। তখন অনেকেই ভেবেছিলেন গেইল শো বুঝি শুরু হলো। অবশ্য সে ওভারেই রংপুর শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন ইয়াসির। ভাঙেন ৭৮ রানের জুটি।

উইকেট তখন নামেন বিশ্বনন্দিত তারকা এবি ডি ভিলিয়ার্স। গেইল তখন ২৩ রানে ব্যাট করছেন। এরপর এক প্রান্তে ঝড় তুললেন এ প্রোটিয়া। এবারও নীরব দর্শক গেইল। মাহমুদউল্লাহর বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়ার আগে ৪১ রানের ইনিংস খেললেন ভিলিয়ার্স। এর মাঝে কেবল ২টি রান নিয়েছেন গেইল। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৪৩ রান।

তবে গেইলের তাণ্ডব শুরু হয় ভিলিয়ার্স আউট বেশ কিছুক্ষণ পর। মাহমুদউল্লাহ এক ওভারে তিনটি ছক্কা হাঁকিয়ে। করেন চলতি বিপিএলের প্রথম হাফসেঞ্চুরি। অবশ্য এরপর খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেন গেইল। তবে তাতে জয় পেতে সমস্যায় পরতে হয়নি রংপুরকে। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা রুশো ফিনিশিংয়ে ৩ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় দলটি।

দুই ওপেনারই এদিন ৫৫ রানের ইনিংস করে খেলেছেন। তবে কিছুটা আগ্রাসী ছিলেন হেলস। ২৯ বলে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে নিজের ইনিংস সাজান হেলস। আর গেইলের রান আসে ৪০ বল মোকাবেলা করে। ২টি চার ও ৫টি ছক্কা মেরেছেন এ ক্যারিবিয়ান। ভিলিয়ার্স ২৫ বল মোকাবেলা করে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় করেছেন ৪২ রান। 

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা এদিনও ভালো করতে পারেনি খুলনা। দলীয় ২৯ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলে দলটি। তবে তৃতীয় উইকেটে ব্রান্ডন টেইলরের সঙ্গে নাজমুল হোসেন শান্তর ৪৯ রানের জুটিতে প্রাথমিক চাপ সামলে নেয় দলটি। এরপর তেইলর আউট হয়ে গেলে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৫৬ রানের আরও একটি দারুণ জুটি গড়েন শান্ত।

তবে এ জুটি ভাঙার পর দ্রুতই তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে খুলনা। তখন শঙ্কা জাগে এ ম্যাচেও হয়তো সাদামাটা সংগ্রহ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হবে দলটিকে। কিন্তু শেষ দিকে দক্ষিণ আফ্রিকান তারকা ডেভিড ওয়েজির ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৬ উইকেটে ১৮১ রানের লড়াকু সংগ্রহই পায় দলটি।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৮ রানের ইনিংস খেলেছেন শান্ত। ৩৫ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন এ তরুণ। মাত্র ১৫ বলে টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৫ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন ওয়েজি। এছাড়া টেইলর ৩২ ও মাহমুদউল্লাহ ২৯ রান করেছেন। রংপুরের পক্ষে ৩২ রানের খরচায় ৪টি উইকেট নিয়ে সেরা বোলার ফরহাদ রেজা।

আট ম্যাচে এটা রংপুরের চতুর্থ জয়। ৪টি জয় নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে এলো দলটি। অপরদিকে আট ম্যাচে এটা খুলনার সপ্তম পরাজয়। তাতে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় কার্যত নিশ্চিত হয়ে গেল মাহমুদউল্লাহর দলের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

খুলনা টাইটান্স: ২০ ওভারে ১৮১/৬ (আল-আমিন ৪, জুনায়েদ ১৩, টেইলর ৩২, শান্ত ৪৮, মাহমুদউল্লাহ ২৯, ওয়েজি ৩৫*, আরিফুল ৬, ইয়াসির ৫*; মাশরাফি ১/১৭, গাজী ০/৩০, রেজা ৪/৩২, ০/৪০, নাজমুল ০/৩৭, গেইল ১/২৩)।

রংপুর রাইডার্স: ১৯.৩ ওভারে ১৮৪/৪ (গেইল ৫৫, হেলস ৫৫, ভিলিয়ার্স ৪১, মিঠুন ১৫, রুশো ১০*, নাহিদুল ১; শুভাশিস ০/৩০, জুনায়েদ ১/৩৭, ওয়েজি ০/৩১, তাইজুল ০/১০, ইয়াসির ২/৪৭, মাহমুদউল্লাহ ১/২৮)।

ফলাফল: রংপুর রাইডার্স ৬ উইকেটে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia calls for unity

‘Seize the moment to anchor democracy’

Urging people to remain united, BNP Chairperson Khaleda Zia has said the country must quickly seize the opportunity to institutionalise the democratic system.

6h ago