মুশফিক-মোসাদ্দেকের ঝলকে শীর্ষে চিটাগং

লরি ইভান্স টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জ্বলে উঠেছিলেন। দলকে পাইয়ে দিয়েছিলেন লড়ার মতো পূঁজি। তবে মুশফিকুর রহিম আর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ব্যাটে সেই রান অনায়াসে পেরিয়েছে চিটাগং ভাইকিংস।

বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট পেয়ে ১৫৭ রান করেছিল রাজশাহী কিংস। ২ বল হাতে রেখে ওই রান তুলে  ৬ উইকেটে জিতেছে চিটাগং। এই  টুর্নামেন্টে মাঝারি দল নিয়েও দুর্বার খেলতে থাকা ভাইকিংসের সপ্তম ম্যাচে এটি ৬ষ্ঠ জয়। এতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষেও উঠে গেছে মুশফিকুর রহিমের দল। অন্য দিকে নয় ম্যাচের পাঁচটা হেরে সেরা চারের লড়াইয়ে কিছুটা পিছিয়ে গেল রাজশাহী।

দলকে জেতাতে ২ ছক্কা আর চার বাউন্ডারিতে ২৬ বলে ৪৩ করে অপরাজিত থাকেন মোসাদ্দেক। অন্য দিকে অধিনায়ক মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ৪৬ বলে ৬৪  রান করে।

১৫৮ রান তাড়ায় চিটাগংয়ের শুরুটা যেভাবে হয়েছিল তাতে ছিল না অনায়াসে জেতার আভাস। একেবারে শুরুতেই ক্যামেরন ডেলপোর্টকে হারায় চিটাগং। অধিনায়ক মিরাজের স্পিনে এলবডব্লিও হয়ে ফেরত যান তিনি। তিনে নামা ইয়াসিরও এই ম্যাচে পারেননি। আরাফাত সানির বলে অস্থিরতা তাকে বের করে নিয়ে আসে ক্রিজের বাইরে। ছোটখাটো ঝড় তুলে ফেরেন মোহাম্মদ শেহজাদ।

৩০ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম আর নাজিবুল্লাহ জাদরান। তবে তাদের রান তোলার গতি ছিল কিছুটা মন্থর। ৩৬ বলে ৪১ রানের জুটির পর রান রেট বাড়ানোর তাড়ায় কাটা পড়েন জাদরান। সানির বলে ১৯ বলে ২৩ রান করা জাদরানের ক্যাচ বাউন্ডারি লাইনে জমান ক্রিশ্চিয়ান ইয়ঙ্কার।

জিততে শেষ ৯ ওভারে তখনো দরকার ৮৬ রান। সেটা সহজ হয়ে যায় মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দারুণ ব্যাটিংয়ে। মুশফিকের সঙ্গে যোগ দিয়ে চার-ছয়ে ঝড় তুলে রান-বলের ব্যবধান কমিয়ে ম্যাচ নিয়ে আসেন ভাইকিংসের হাতের মুঠোয়। ক্রিজে এসেই দারুণ সব শট খেলতে থাকেন মোসাদ্দেক। লঙ অফের উপর দিয়ে উড়ান ছক্কা। কব্জির ব্যবহারে ছিল চোখ জুড়ানো কাভার ড্রাইভ। শুরুতে সময় নিয়ে খেলা মুশফিকও সময়ের সঙ্গেই মেলেন ডানা। তাদের দুজনের জুটি ৮৮ রানে অবিচ্ছিন্ন থেকে ম্যাচ জিতিয়ে দেয় ভাইকিংসকে। 

এর আগে রাজশাহী এগিয়েছে লরি ইভান্সের ব্যাটে আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা ইভান্স এদিনও রাখেন ছন্দ। শেষ দিকে জ্বলে উঠলেন ক্রিশ্চিয়ান ইয়ঙ্কার। দুই বিদেশির ব্যাটের দাপটে মন্থর শুরুর পরও দেড়শো পেরিয়ে যায় রাজশাহী কিংসের ইনিংস।

টস হেরে এদিন ব্যাটিং পাওয়া রাজশাহীর একাদশে ফিরেছিলেন সৌম্য সরকার। আগের দুই ম্যাচে একাদশে সৌম্য কেন নেই এই প্রশ্ন বড় হয়েছিল। একাদশে ফিরে নিজের সামর্থ্যের ছাপ রাখার দরকার ছিল সৌম্যের। কিন্তু শুরুতেই তিনি ফেরেন বাজে শটে।

রবি ফ্রাইলিঙ্ককে উড়াতে গিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। ওয়ানডাউনে নেমে মার্শাল আইয়ুব এদিনও রান পাননি। রান পাননি জাকির হাসানও। তবে আবারও জমে উঠেছিল ইভান্স-টেন ডসকেটের জুটি। চতুর্থ উইকেটে দুজনে তুলেন ৫৪ রান। বল-রান সমান করে ব্যাট করতে থাকা ইভান্সও তখন ছিলেন রয়েসয়ে। টেন ডসকেটে আর জাকির দ্রুত বিদায় নেওয়ার পর ইয়ঙ্কয়ারের সঙে আরও ৪৭ রান যোগ করে ফেরেন ইভান্স।

৫৬ বলে ৮ চার আর দুই ছক্কায় থামেন ৭৪ রান করে। মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে বাকিটা সেরেছেন ইয়ঙ্কার। ২০ বলের ইনিংসে তিন চার আর ২ ছক্কায় করেন ৩৬ রান।

তবে এমন উইকেটে এই রান যে যথেষ্ট নয় পরে দেখিয়ে দেন মুশফিক-মোসাদ্দেক।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজশাহী কিংস:  ২০ ওভারেব ১৫৭/৫  (ইভান্স ৭৪, সৌম্য ৩, মার্শাল ১, টেন ডসকেট ২৮, জাকির ৫, ইয়ঙ্কার ৩৬*, মিরাজ ১০* ; ফ্রাইলিঙ্ক ১/৩১, নাঈম ০/১৬, খালেদ ২/৩০ , সানজামুল ১/১৯, রাহি ১/৪৩, ডেলপোর্ট ০/১৮)

চিটাগং ভাইকিংস: ১৯.৪ ওভারে ১৫৯/৪ (শেহজাদ ২৫,  ডেলপোর্ট ১, ইয়াসির ৩ , মুশফিক ৬৪* , জাদরান  ২৩, মোসাদ্দেক ৪৩* ; কামরুল ০/৩৯, মিরাজ ১/২৫ ,সানি ৩/২২, মোস্তাফিজ ০/৩২, কাইস ০/২১, সৌম্য ০/২০)

ফল: চিটাগং ভাইকিংস ৬ উইকেটে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English

Eid meat: Stories of sacrifice, sharing and struggle

While the well-off fulfilled their religious duty by sacrificing cows and goats, crowds of people -- less fortunate and often overlooked -- stood patiently outside gates, waiting for a small share of meat they could take home to their families

5h ago