‘স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে সরকার সন্দেহের চোখে দেখে’

সরকার দেশে স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে সন্দেহের চোখে দেখে বলে মন্তব্য করেছেন দ্য ডেইলি স্টারের প্রকাশক ও সম্পাদক মাহফুজ আনাম।
ju lifetime achievement
অধ্যাপক গোলাম রহমান (বামে), মাহফুজ আনাম।

সরকার দেশে স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে সন্দেহের চোখে দেখে বলে মন্তব্য করেছেন দ্য ডেইলি স্টারের প্রকাশক ও সম্পাদক মাহফুজ আনাম।

গতকাল (২৩ জানুয়ারি) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সপ্তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

দেশের মঙ্গলের জন্যে স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে মাহফুজ আনাম বলেন, “পুঁজিবাদের কাছে সমাজতন্ত্রের হেরে যাওয়ার বিভিন্ন কারণের একটি হলো সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোতে স্বাধীন সাংবাদিকতা তথা ব্যক্তি স্বাধীনতা না থাকা।”

তিনি বলেন, “বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশ্ন তোলার মাধ্যমে স্বাধীন সাংবাদিকতা দেশের কল্যাণে কাজ করে থাকে। গণতান্ত্রিক সরকারের সঙ্গে স্বাধীন সাংবাদিকতার একটি প্রতীকী সম্পর্ক রয়েছে।”

“সম্পাদক হিসেবে আমি গত ২৫ বছর, এমনকি, এখনো সরকারকে বোঝাতে পারিনি যে স্বাধীন সাংবাদিকতা রাষ্ট্রের জন্যে মঙ্গলময়। এখনো সরকার আমাদের সন্দেহের চোখে দেখে। তারা স্বাধীন সাংবাদিকতাকে আপদ হিসেবে গণ্য করে।”

“গঠনমূলক সমালোচনাকে সরকারের ইমেজ নষ্ট করার পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হয়। অথচ ভাবা হয় না যে এটি তাদের নিজেদের জন্যেই সুফল বয়ে আনে,” যোগ করেন ডেইলি স্টার সম্পাদক।

JU
২৩ জানুয়ারি ২০১৯, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সপ্তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীপূতি উদযাপন উপলক্ষে বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা র্যা লির আয়োজন করে। ছবি: রাশেদ সুমন

সাংবাদিকতার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তিনি বলেন, “মৌলিক সংস্কার না করলে পত্রিকাগুলো টিকে থাকতে পারবে না। সুখবর হলো প্রথাগত অর্থে পত্রিকাগুলো ভবিষ্যতে টিকে না থাকলেও সাংবাদিকতা টিকে থাকবে।”

গত তিন দশকে বাংলাদেশের সাংবাদিকতায় অসামান্য অবদান রাখার জন্যে মাহফুজ আনাম এবং ‘বাংলাদেশে সাংবাদিকতা শিক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা’ রাখার জন্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক গোলাম রহমানকে ‘লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের পক্ষ থেকে।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক গোলাম রহমান বলেন, “একটি দেশের গণমাধ্যমের দিকে তাকালে সেই দেশের গণতন্ত্রের অবস্থা বোঝা যায়।… যদিও দেশের গণমাধ্যম স্বাধীন তবে তাদের সেলফ-সেন্সরশিপ রয়েছে।”

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সংবাদমাধ্যমগুলোর সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে অধ্যাপক রহমান বলেন, “সংবাদমাধ্যমগুলো শিক্ষার্থীদের জন্যে ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করে দিয়ে তাদেরকে সাংবাদিকতা বিষয়ে ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন করার জন্যে আরও সুযোগ করে দিতে পারে।”

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক গোলাম রহমান সম্পর্কে বলা হয়, তিনি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর চেয়ারম্যান এবং তথ্য কমিশনে প্রধান তথ্য কমিশনার হিসেবে তার প্রজ্ঞার প্রতিফলন ঘটিয়েছিলেন।

মাহফুজ আনাম সম্পর্কে বলা হয়, “একজন সম্পাদক হিসেবে গত ২৫ বছর ধরে ডেইলি স্টারকে দেশের সবচেয়ে বেশি পঠিত ইংরেজি দৈনিক হিসেব প্রতিষ্ঠিত করে রেখেছেন।”

এতে আরও বলা হয়, “দেশে সুবিচার, মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা তুলে ধরার সংগ্রামে এই পত্রিকা নিয়োজিত রয়েছে।”

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago