মিজোরামে হাজারো মানুষের মিছিলে চীনের পক্ষে স্লোগান

ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে মিজোরামের স্থানীয়রা বিক্ষোভে নেমেছেন। গতকাল ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যটির রাজধানী আইজলে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ এই দাবিতে রাজপথে পা মিলিয়েছেন। সেই মিছিলেই স্লোগান উঠেছে ‘চীন জিন্দাবাদ’।
মিছিলে পোস্টার: হ্যালো চায়না, বাই বাই ইন্ডিয়া’। ছবি: ইয়াং মিজো এসোসিয়েশন

ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে মিজোরামের স্থানীয়রা বিক্ষোভে নেমেছেন। গতকাল ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যটির রাজধানী আইজলে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ এই দাবিতে রাজপথে পা মিলিয়েছেন। সেই মিছিলেই স্লোগান উঠেছে ‘চীন জিন্দাবাদ’।

ভারতের গণমাধ্যমগুলোর খবরে প্রকাশ, শুক্রবার আইজলে নেসো, এমজেডপি, ইয়ং মিজো অ্যাসোসিয়েশন (ওয়াইএমএ) নামের তিনটি সংগঠনের যৌথ মিছিল বের হয়। সেখানে অনেকের হাতে ছিল ‘হ্যালো চায়না,  বাই বাই ইন্ডিয়া’ লেখা পোস্টার। বেশ কিছু পোস্টারে ছিল চীনা হরফে লেখা।

গত ৮ জানুয়ারি দেশটির লোকসভায় পাস হওয়া নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে এভাবেই ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ ক্ষোভ বেরিয়ে এলো মিজোরামে।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নেসো’র এক নেতা বলেন, নাগরিকত্ব বিল নিয়ে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। তাই কেউ কেউ হয়তো মনে করেছেন, ভারত সরকার যখন আমাদের কথা শুনছে না, তখন চীনের প্রতি হাত বাড়ানোই ভালো।

যে কারণে নাগরিকত্ব বিল নিয়ে ভারতে অসন্তোষ

ধর্মীয় সহিংসতার শিকার হয়ে প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে ভারতের লোকসভায় যে বিল পাস করেছে বিজেপি সরকার শুরু থেকেই তা নিয়ে তীব্র আপত্তি তুলেছে দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে একে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ মিছিল পর্যন্ত গড়িয়েছে।

বিতর্কিত এই বিল আইনে পরিণত হলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ভারতে যাওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, শিখ এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারবে ভারত সরকার।

বিলটির সমালোচকদের দাবি, এমন আইন হলে প্রতিবেশী দেশগুলোর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভুল বার্তা দেওয়া হবে। এমনকি দলে দলে লোক ভারতে গিয়ে নাগরিকত্ব দাবি করতে পারেন বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।

মিজোরামের মানুষ যা চাইছেন

মিজোরামে চাকমাদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় মিজোদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। কয়েক দশক ধরে সেখানে বসবাস করলেও চাকমারা ভারতের নাগরিকত্ব পায়নি। তবে তাদের জন্য “চাকমা অটোনোমাস ডিসট্রিক্ট কাউন্সিল” নামের একটি স্বশাসিত পরিষদ গঠন করা হয়েছে। মিজোরামে চাকমাদের সংখ্যা এখন প্রায় লাখ খানেক। যা রাজ্যের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ।

মিজোরামের স্থানীয় সংগঠনগুলোর আশঙ্কা, নাগরিকত্ব সংশোধন বিল আইনে পরিণত হলে এই চাকমারাও ভারতের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে যাবে। ফলে কর্মঠ চাকমাদের কারণে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হবে।

যেসব চাকমা মিজোরামে বসবাস করছেন তারা বাংলাদেশ থেকে যাওয়া বলে মনে করে সংখ্যাগুরু মিজোরা। সে কারণেই তারা চাকমাদের জন্য গঠন করা “চাকমা অটোনোমাস ডিসট্রিক্ট কাউন্সিল” বিলুপ্ত করারও দাবি তুলেছেন।

স্থানীয় ছাত্র সংগঠন এমজেডপি’র সাধারণ সম্পাদক লালমাউয়া পাউতু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, “প্রচুর চাকমা এখানে অবৈধভাবে বসবাস করছেন। নাগরিকত্ব বিল কার্যকর হলে তারা সবাই নাগরিকত্ব পেয়ে যাবে যেটা মিজোরাম ও পুরো উত্তর পূর্বাঞ্চলের মানুষের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে। তিনি হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, এমনটা হলে ৬০’র দশকের মতো ফের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন শুরু হতে পারে এই অঞ্চলে।

Comments

The Daily Star  | English

Abu Sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

12h ago