ইয়াসিরের মাঝে ‘টি-টোয়েন্টির পরিপূর্ণ ব্যাটসম্যানের’ ছবি
যার জায়গায় দলে আসলেন তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা একটি নাম। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক। অভিষেক টেস্টের সর্ব কনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ানও বটে। যদিও ক্যারিয়ারের মাঝপথে ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে হয়েছেন বিতর্কিত। কিন্তু তার সামর্থ্যের প্রশংসা না করে পারবেন না নিন্দুকরাও। সেই আশরাফুলের জায়গায় খেলতে নামা মানে রাজ্যের চাপ। আর সে চাপ কি অবলীলায় না কাটিয়ে উঠলেন চিটাগং ভাইকিংস তরুণ ইয়াসির আলী রাব্বি।
এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। ধারাবাহিকভাবেই ভালো খেলছেন ইয়াসির। খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে সুযোগ পেয়েই খেলেন ৪১ রানের ইনিংস। অল্পের জন্য হাফসেঞ্চুরির দেখা পেলেন না। আফসোস কিছুটা নিয়েই মাঠ ছাড়লেন। কিন্তু সে অতৃপ্তি ঘুচিয়েছেন এক ম্যাচ পড়েই। খুলনার বিপক্ষে ফিরতি খেলেন ৫৪ রানের ইনিংস। স্থানীয় খেলোয়াড়দের হয়ে চলতি আসরে প্রথম হাফসেঞ্চুরি। এরপর ঢাকা-সিলেট-ঢাকা পর্ব ঘুরে বিপিএল চট্টগ্রামে আসাতে যেন আরও জ্বলে উঠলেন। এই চট্টগ্রামের ছেলেই যে ইয়াসির। টানা দুই ম্যাচেই ফিফটি।
শুধু পরিসংখ্যানেই ইয়াসিরকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন না ক্রিকেটবোদ্ধারা। তার ব্যাটিং কারিশমাও চোখে পড়ার মতো। চিটাগং ভাইকিংস কোচ সাইমন হেলমটও বলছেন সে কথাই। ইয়াসিরকে তিনি দেখছেন একাডেমীতে থাকা অবস্থা থেকেই। তাকে একজন পরিপূর্ণ টি-টোয়েন্টি খেলোয়াড় মনে করছেন অস্ট্রেলিয়ান, ‘সে (ইয়াসির) কাট করেছে, পুল করেছে, ড্রাইভ করছে, সোজা খেলছে, দরকার হলে মিড উইকেট বা এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে খেলছে। টি–টোয়েন্টির জন্য যা দরকার সবই করছে। আমরা তো ওকে নিয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত, বাংলাদেশের ক্রিকেটে এমন খেলোয়াড় আসছে যে সামনে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারে।’
শুরুর দিকে ফিটনেসটা খুব একটা ভালো ছিল না ইয়াসিরের। সাম্প্রতিক সময়ে ওজন অনেক কমিয়েছেন। তার ফিল্ডিংয়ে কিছুটা হলেও ধার বেড়েছে। হেলমটের ভাষায়, ‘একাডেমিতে আমি যখন ওকে দেখেছি ও তখন একদম তরুণ একজন খেলোয়াড়। ওর নিজের কন্ডিশন নিয়ে একটু কাজ করতে হবে। ওর স্কিল আছে, ফিল্ডিং আর ফিটনেসে উন্নতি করার দরকার ছিল। সেটা সে করেছে। এখন দেখুন সে নিজেকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে গেছে। শুধু ব্যাটিং নয়, এখন ওর ফিটনেস আর ফিল্ডিংয়েও অনেক উন্নতি হয়েছে। এটা ওকে আরও বেশি আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। তার ওপর কিন্তু আমাদের চোখ রাখতে হবে।’
তবে বাংলাদেশ ক্রিকেটে ইয়াসির নাম অবশ্য এ বিপিএল দিয়ে নয়। বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটের আবিষ্কার তিনি। খেলেছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। যেখানে তার সতীর্থ ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, লিটন কুমার দাস, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আবু হায়দার রনি, সাদমান ইসলামের মতো খেলোয়াড়রা। যেভাবে খেলছেন তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে খুব শীগগিরই হয়তো জাতীয় দলের তাঁবুতেও তাদের সতীর্থ হতে পারবেন।
Comments