কেন বোলিং করলেন না তাইজুল?
বেদম পিটুনি খেয়ে যাচ্ছেন বোলাররা। চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছুটিয়ে সেঞ্চুরির দেখা মিলল এভিন লুইসের। মাঝে হ্যামস্ট্রিংয়েও টান পড়ে তার। তাতে কোন সমস্যা হয়নি। আর কোন বোলার তো নুন্যতম বাধা সৃষ্টি করতে পারলেন না। অথচ দলে ছিলেন বিশেষজ্ঞ একজন স্পিনার। যিনি কি না আগের দুই ম্যাচেই পেয়েছেন ৩টি করে উইকেট। তার হাতে বলই তুলে দিলেন না খুলনা টাইটান্সের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য ঠেকতেই পারে। কোন ইনজুরি নেই, নেই অন্য কোন সমস্যাও। দিব্যি ব্যাটিং করতে আসলেন। ক্ষিপ্র গতিতে রান নিতেও ছুটতে দেখা গেলো তাকে। কিন্তু তারপরও এদিন বোলিং করলেন না তাইজুল। করলেন না বলে বলা উচিৎ তাকে দিয়ে করানো হলো না। কারণ চাইলেই বল হাতে নিতে পারতেন না এ স্পিনার। অধিনায়ককেই তো ডাকতে হবে তাকে বল করানোর জন্য।
এমন না যে দলের অন্যান্য বোলাররা ভালো করছেন। কম বেশি সবাই মার খেলেন। একজন তো রান দেওয়ার রেকর্ডই নিজের করে নিলেন। বিপিএলের সর্বোচ্চ খরুচে বোলিং ফিগারের তালিকায় নাম লেখালেন নূর আলম সাদ্দাম। ৪ ওভারে রান দিয়েছেন ৫৭। কম যাননি আরেক তরুণ শরিফুল ইসলামও। ৪ ওভারে তিনি দিয়েছেন ৫৩ রান।
কিন্তু এতো কিছুর পরও ডাকা হয়নি তাইজুলকে। সংবাদ সম্মেলনে এদিন আসেননি মাহমুদউল্লাহ। পাঠিয়েছেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকে। তার কাছেই জানতে চাওয়া হলো তাইজুলকে বোলিং না করানোর কারণ। কিন্তু সে প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টাই করলেন এ অলরাউন্ডার, ‘আমি এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব না কারণ আমি দলের অধিনায়ক নই। কে বল করল কে করল না এটা অধিনায়কই বলতে পারবে।’
এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেও একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করানোর চেষ্টা অবশ্য করেছেন ব্র্যাথওয়েট, ‘রিয়াদ চার ওভার করেছে এবং সে ভালো বল করেছে। তাদের দুইজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যানই ইনিংসের অধিকাংশ সময় জুড়ে ব্যাটিং করেছে। ডান হাতি ব্যাটসম্যানরা খুবই কম ব্যাটিং করেছে। এনামুল প্রথম বলেই আউট হয়ে গেছে। আফ্রিদি চারে খেলেছে এরপর শামসুর বাকিটা খেলেছে। তাই আমি বলতে পারছি না সে কেন বল করেনি। হয়তো ছোট বাউন্ডারি আর দুই বাঁহাতি ব্যাটিংয়ে থাকলে স্পিনারদের দিয়ে বল করানো কঠিন।’
তবে এমন ধারণাটা নতুন নয় বাংলাদেশের অধিনায়কদের। এর আগে বাংলাদেশ জাতীয় দলেও এমনটা দেখা গিয়েছে। নিদাহাস ট্রফিতে দলের থাকার পরও বল পান নাজমুল ইসলাম অপু। এছাড়া সাকিব আল হাসানও অনেক ম্যাচেই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের সামনে বোলিং করতে আসেন না। গত বিপিএলের ফাইনালেও একই ঘটনা ঘটেছে।
মূলত বাঁহাতিদের বিপক্ষে বাঁহাতি স্পিনার আনা যাবে না এমন তত্ত্বটা শুরু হয়েছে সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের আমল থেকেই। অন্যথায় দীর্ঘদিন থেকেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের মূল স্তম্ভই ছিলেন বাঁহাতি স্পিনাররা। আর তার সময় থেকেই দেশে বাঁহাতি স্পিনারেরও সংকট দেখা গিয়েছে। তবে হাথুরুসিংহে চলে যাওয়ার পরও তার শেখানো তত্ত্ব থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি তার শিষ্যরা।
Comments