ওয়াকার বলছেন তাসকিন, তাসকিন বলছেন ওয়াকার
কি বেদম পিটুনিই না খেলেন সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে। টি-টোয়েন্টি, ওয়ানডে কি টেস্টে। বোলিং করাই যেন ভুল গিয়েছিলেন। এর আগে চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও একই অবস্থা। গত দুই বছর যেন দুঃস্বপ্নের মতো স্মৃতি বয়ে বেড়ালেন তাসকিন আহমেদ। চলতি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) তিনিই সেরা বোলার। আর তার কৃতিত্ব তাসকিন দিচ্ছেন গুরু ওয়াকার ইউনুসকে। আর তাসকিনের স্বরূপে ফিরে আসার কৃতিত্ব তাসকিনকেই দিচ্ছেন ওয়াকার।
এ যেন গুরু শিষ্যের হেরাফেরি। একে অপরকে কৃতিত্ব দিয়েই মহানুভবতা দেখাচ্ছেন। তবে বাস্তবতা তাসকিনের স্বরূপে ফিরে আসার জন্য তাকে সঠিক পরামর্শ ও উদ্দীপনা যুগিয়েছেন ওয়াকারই। তবে কাজের কাজটা করেছেন তাসকিন। কারণ এমন পরামর্শ তিনি অনেক বোলারকেই দিয়েছেন। দিয়ে থাকেন। তবে কেউ সেটাকে নিয়েছেন আদর্শ হিসেবে। কেউবা শুনেই খালাস।
তাসকিনের ভাষায়, ‘সিলেটের যে প্রধান কোচ ওয়াকার ইউনুস সে অনেক সাহায্য করছে। মূল জিনিসটা আসলে ছন্দ আর আত্মবিশ্বাস। তিনি আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন আমি ভালো অবস্থায় আছি প্রথম দিন থেকে যখন নেটে বল দেখছিল। দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস রেখে বল করতে বলেছিল। ছোট ছোট ভুলগুলো উনি ধরিয়ে দিয়েছেন। ওইগুলো নিয়ে কাজ করেছি। সবমিলিয়ে ছন্দটা ভালো আছে। লাইন লেংথ ধারাবাহিকতা এগুলো নিয়ে আরেকটু সাবধানী ছিলাম মাঠের মধ্যে।’
ঠিক কি কি কাজ করেছেন তাসকিন। পরিবর্তনের কথাটাও জানালেন এ পেসার, ‘প্রতিনিয়তই আমি সুযোগ পেলে ওয়াকার স্যারের সঙ্গে কথা বলছি উনি আসলে তেমন আহামরি কোন পরিবর্তনের কথা বলেননি। শুধু স্বাভাবিক রাখতে বলেছে। পেসটা যাতে কোনভাবেই না কমে। সেই সঙ্গে লেংথ ও ভেরিয়েশন নিয়ে কাজ করিয়েছে নেটে।’ তবে অভিজ্ঞতাটাও কাজে দিয়েছে তাসকিনের, ‘আগে বাউন্ডারি হলে আরও জোরে বল করার চেষ্টা করতাম। জোর তো আমার শক্তির জায়গা। অবশ্যই আমার ভালো পেসে ভালো লেংথে বল করতেই হবে। সেই সঙ্গে আমি ভেরিয়েশনেরও চেষ্টা করছি।’
আর তাসকিনের হঠাৎ পরিবর্তনের কারণ জানাতে গিয়ে ওয়াকার বললেন, ‘আমি কোন পরিবর্তন করিনি। আমি শুধু মাত্র নিশ্চিত করেছি সে যেন কঠিন পরিশ্রমটা করে। সে তাই করছে যা সে করে অভ্যস্ত। তার কিছু ইনজুরি ছিল এটা ভুলে গেলে চলবে না। তাই ইনজুরি থেকে ফিরে এসে ছন্দ পেতে অনেক সময় নেয়। কিছু দ্বিধা ছিল এবং এ সময়ে কিছু মানুষের সাহায্য প্রয়োজন হয় যা তালে দলে ফিরে আসতে সাহায্য করে। এবং এটাই ঘটেছে।’
মূলত তাসকিনের কঠিন পরিশ্রমই তাকে ফিরিয়ে এনেছে বলে মনে করেন ওয়াকার। তাই এ প্রসঙ্গে আরও বললেন, ‘আমি তাসকিনের ক্ষেত্রে কিছুই করিনি। যা করার তাসকিন নিজেই করেছে। সে খুব পরিশ্রমী এবং খুব ভালো শিক্ষার্থীও। সে বাংলাদেশ জাতীয় দলে ফিরতে চেয়েছিল এবং যদি এটা মনেপ্রাণে চান এবং সে অনুযায়ী কঠিন পরিশ্রম করেন তাহলে অবশ্যই আপনার সুযোগ আসবে। এবং আসলে ঠিক এটাই ঘটেছে।’
চলতি বিপিএলে ১০ ম্যাচে ২০ উইকেট নিয়ে এখন পর্যন্ত সেরা বোলার তাসকিন আহমেদ। সবচেয়ে বেশি ৪ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্বও তার। সব আসর মিলিয়ে পেয়েছেন চারবার। দুইবার পেয়েছেন চলতি আসরে। ২৩ বছর বয়সেই বিপিএলে সর্বাধিক উইকেট শিকারের তালিকায় চলে এসেছেন সেরা পাঁচে। মাত্র ৪৩ ম্যাচেই পেয়েছেন ৬১ উইকেট।
Comments