চিটাগংকে হারিয়ে আসর শেষ করল সিলেট
সুপারম্যানের উড়ে ক্যাচ ধরলেন জেসন রয়। দারুণ ক্যাচ ধরলেন আফিফ হোসেনও। ঝাঁপিয়ে দৃষ্টিনন্দন রানআউট করলেন জাকের আলী অনিক। সব মিলিয়ে ফিল্ডিংয়ে দুর্দান্তই ছিল সিলেট সিক্সার্স। অপর দিকে সহজ বেশ কিছু ক্যাচ মিস করলেন চিটাগং ভাইকিংসের খেলোয়াড়রা। আর তার ফলাফলও পেয়েছে তারা। সিলেটের বিপক্ষে ২৯ রানে গ্রুপ পর্ব শেষ করেছে দলটি। তবে আগেই শেষ চার নিশ্চিত করেছে মুশফিকুর রহিমের দল।
চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে এদিন ২৯ রানে জয় তুলে টুর্নামেন্ট শেষ করল সিলেট। দারুণ এ জয়েও আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাদের। আসরের মাঝ পথে ছন্দ খুঁজে না পাওয়া দলটি আগের ম্যাচেই গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে। ১২ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ১০ পয়েন্ট। আর সমান সংখ্যক ম্যাচে চিটাগংয়ের সংগ্রহ ১৪ পয়েন্ট।
লক্ষ্য তাড়ায় এদিন শুরু থেকেই ব্যাকফুটে ছিল চিটাগং। প্রথম দুই ম্যাচে সুবিধা করে না উঠতে পারায় তৃতীয় ম্যাচ থেকেই একাদশের বাইরে ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। এদিন ফিরলেও বিভীষিকাময় একটি দিন কাটিয়েছেন এ ব্যাটসম্যান। ফিল্ডিংয়ে মিস করেছেন দুটি সহজ। ব্যাট করতে নেমে খুলতে পারেননি রানের খাতা। তাসকিন আহমেদের বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে খোঁচা দিতে গিয়ে আউট হয়েছেন উইকেটরক্ষক জাকের আলী অনিকের হাতে।
ফলে শুরুতেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে চিটাগং। সে চাপ আরও বাড়িয়ে তোলেন আরেক ওপেনার ক্যামেরুন ডেলপোর্ট। ৩ রানেই নেই ২ উইকেট। এরপর ইনফর্ম ইয়াসির আলী রাব্বিকে নিয়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ৪২ রানের জুটিও গড়েন। তবে অবিশ্বাস্য এক ক্যাচে মাঠ ছাড়তে হয় ইয়াসিরকে। বাউন্ডারি লাইনে বাজপাখির মতো উড়ে অবিশ্বাস্য এক ক্যাচ ধরেন ইংলিশ তারকা জেসন রয়।
এরপর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে নিয়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক। ৪৫ রানের জুটি গড়ে চাপ সামলে নেন তিনি। কিন্তু মোসাদ্দেকের আউটের পর দ্রুত সিকান্দর রাজাকে হারিয়ে আবারও চাপে পড়ে দলটি। তবে বড় ধাক্কাটা খায় মুশফিকের রানআউটে। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা এ ব্যাটসম্যানকে আউট করেই ম্যাচের মোর ঘুড়িয়ে দেন জাকের আলী অনিক। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি চিটাগং। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে শেষ দিকে ৭ রান তুলেতেই চার উইকেট হারায় দলটি। ফলে ৯ বাকী থাকতেই ১৩৬ রানে গুটিয়ে যায় তারা। ফলে ২৯ রানের হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় মুশফিকের দলকে।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৮ রানের ইনিংস খেলেন মুশফিক। ৩২ বলে সমান ৩টি করে চার ও ছক্কায় এ রান করেন তিনি। এছাড়া ইয়াসির ২৭ ও মোসাদ্দেক হোসেন ২৫ রান করেন। সিলেটের পক্ষে মাত্র ১৭ রানের খরচায় ৪টি উইকেট নিয়েছেন ইবাদত। এছাড়া ২টি উইকেট নেন ওয়েন পারনেল।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি সিলেটও। হার্ডাস ভিলিয়নের তোপে দলীয় ৩৭ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দলটি। তবে তৃতীয় উইকেটে সাব্বির রহমানকে সঙ্গে নিয়ে ৬৫ রানের জুটিতে সে চাপ সামলে নেন ওপেনার আন্দ্রে ফ্লেচার। এরপর চতুর্থ উইকেটে মোহাম্মদ নাওয়াজের সঙ্গেও ৫১ রানের জুটি গড়েন ফ্লেচার। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬৫ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় দলটি।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৬ রানের ইনিংস খেলেন ফ্লেচার। ৫৩ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেছেন এ ক্যারিবিয়ান। ১৯ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৪ রান করেন নাওয়াজ। এছাড়া ২৫ বলে সমান ২টি করে চার ও ছক্কায় ৩২ রান করেছেন সাব্বির। চিটাগংয়ের পক্ষে ২৯ রানের খরচায় ৪টি উইকেট পেয়েছেন আজই প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা ভিলিয়ন। এছাড়া নাঈম হাসান পেয়েছেন অপর উইকেটটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিলেট সিক্সার্স: ২০ ওভারে ১৬৫/৫ (ফ্লেচার ৬৬, আফিফ ১, জেসন ১১, সাব্বির ৩২, নাওয়াজ ৩৪, জাকের ৮*, পারনেল ২*; রাহী ০/৪৮, ভিলিয়ন ৪/২৯, খালেদ ০/২০, শানাকা ০/২৩, ডেলপোর্ট ০/২৬, নাঈম ১/১৪)।
চিটাগং ভাইকিংস: ১৮.৩ ওভারে ১৩৬ (ডেলপোর্ট ২, আশরাফুল ০, ইয়াসির ২৭, মুশফিক ৪৮, মোসাদ্দেক ২৫, রাজা ৫, শানাকা ৭, ভিলিওন ১৫, নাঈম ০*, রাহী ৫, খালেদ ০; তাসকিন ১/১০, ইবাদত ৪/১৭, পারনেল ২/২২, নাওয়াজ ১/৩৪, কাপালী ১/২৫, নাবিল ০/২৮)।
ফলাফল: সিলেট সিক্সার্স ২৯ রানে জয়ী।
Comments