কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা মামুন ‘ছাত্রলীগের হামলায়’ আহত

ছাত্রলীগের হামলায় আহত কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা হাসান আল মামুনকে ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভোট কেন্দ্র হলের বাইরে একাডেমিক ভবনে করার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন।

আজ সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলায় তিনি আহত হন।

মামুনের ওপর হামলায় সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাইসুল ইসলামের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন অংশ নেয় বলে জানা গেছে। তারা সবাই ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

হামলার এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আমি লাইব্রেরিতে পড়ছিলাম। এমন সময় শুনি কেউ একজন ‘বাঁচাও’, ‘বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা হাসান আল মামুন আহত অবস্থায় পড়ে আছে।

এই ঘটনার কিছুক্ষণ পরই কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেন, মামুনকে ধানমন্ডিতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। তার পায়ে ও মেরুদণ্ডে আঘাত লেগেছে। এছাড়াও তার সারা শরীরেই লাথি মেরেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। 

হাসান আল মামুন বলেন, ডাকসু নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র হলের বাইরে করার দাবিতে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি ছিল আমাদের। সবাই মিলে একসঙ্গে যাওয়ার কথা ছিল। আমি আগে চলে আসায় গ্রন্থাগারের সামনে অপেক্ষা করছিলাম।

এমন সময় হঠাৎ করেই সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাইসুল ইসলামের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন অতর্কিতভাবে আমার ওপর হামলা করে।

তিনি বলেন, কী উদ্দেশ্যে এ হামলা হয়েছে, তা পরিষ্কার। আমরা যখনই ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছি, তখন থেকেই কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা শুরু হয়। আমরা যেন নির্বাচনে অংশ না নেই সেজন্য ভয়-ভীতি সৃষ্টি করতেই হামলা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, আমার নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে মধুতে আছে। তারা হামলা করেনি। তাদের নিজেদের মধ্যে ঝামেলা হতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী  বলেন, আমরা বিষয়টি অবহিত হয়েছি। আমাদের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা সেখানে গেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।

আগেও বিভিন্ন সময় কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের ওপর ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ উঠেছিল। সর্বশেষ গত ২৪ জানুয়ারি বাংলা একাডেমি এলাকায় ছাত্রলীগ তাদের মারধর করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে রাশেদ খান দ্য বলেন, বিভিন্ন সময় হামলা নিয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আজকের হামলার কথাও উপাচার্য ও প্রক্টরকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। কিন্তু হামলাকারীরা একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হওয়ার পরও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। এ কারণেই তারা বার বার হামলা করতে উৎসাহ পাচ্ছে।

আরও পড়ুন: ডাকসু নির্বাচন: ‘পরিবেশ আছে’, ‘পরিবেশ নেই’

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh asks India to halt border push-ins, cites security concerns

The move follows reports that BSF pushed in around 300 people into Bangladesh between May 7 and May 9

31m ago