রুবেলের ঝলকের পর রনি-রাসেলের ব্যাটে ফাইনালে ঢাকা

Dhaka Dynamites
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

রুবেল হোসেনের তোপে রংপুর রাইডার্সকে দেড়শোর নিচে আটকে রেখেছিল ঢাকা ডায়নামাইটস। মাঝারি লক্ষ্যে ব্যাট হাতে দায়িত্ব নেন রনি তালুকদার। শেষ দিকে ঝড় তুলে দলকে নিরাপদে ফাইনালে পৌঁছে দেওয়ার কাজটা করেছেন আন্দ্রে রাসেল।

বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনালে উঠার লড়াই হয়নি তেমন জম্পেশ। রংপুর রাইডার্সের দেওয়া ১৪৩ রানের লক্ষ্য ২০ বল হাতে রেখেই টপকে যায় ঢাকা। ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে বিপিএলের ৬ষ্ঠ আসরের ফাইনালে এখন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের প্রতিপক্ষ তারা।

শেষ দল হিসেবে ধুঁকে ধুঁকে সেরা চারে উঠেছিল ঢাকা ডায়নামাইটস। তবে এরপরই বদলে যেতে শুরু করেছে তারা। চিটাগং ভাইকিংসকে বিদায় করার পর রংপুর রাইডার্সকে বিদায় করেও আগের আসরের শোধ তুলেছে সাকিব আল হাসানের দল।

শেষ চার ওভারে দরকার ছিল কেবল ১৫ রান। নাজমুল ইসলাম অপুর করা ওই ওভারে টানা তিন ছক্কাতেই ম্যাচ শেষ করে দেন রাসেল। ম্যাচে বেশ আগে থেকেই দোলাচল ছিল না। তবু এরমধ্যে এই ক্যারিবিয়ান দেখান তার রাজকীয় দাপট।

১৪৩ রানের লক্ষ্যে শুরুতেই উপুল থারাঙ্গাকে হারায় ঢাকা। মাশরাফিকে উড়াতে গিয়ে ৪ রান করেই ফেরেন এই লঙ্কান। দ্বিতীয় উইকেটে সুনীল নারাইনের সঙ্গে জুতসই জুটিতে পরিস্থিতি সামলান রনি তালুকদার।

নাজমুল ইসলামকে পেটাতে গিয়ে নারাইন ফিরলেও রনি খেলছিলেন দায়িত্ব নিয়ে। তার সঙ্গে টিকে গিয়ে সাকিবও দলকে দেন স্বস্তি। হাওয়েলের স্লোয়ার পিক করতে দেরি করে সাকিব ফেরার পর কিছুটা ছন্দপতন ঢাকার।

মাশরাফি এসে কাইরন পোলার্ডকে কট বিহাইন্ড করার পরই নুরুল হাসানের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট থিতু ব্যাটসম্যান রনি। তখন ম্যাচ কিছুটা জমে উঠার আভাস মিলেছিল।

তবে আস্কিং রানরেটে বড় কোন তাড়া তৈরি না হওয়ায় কাঁপেনি ঢাকা। উলটো ব্যাটের ঝাঁজ দেখিয়েছেন রাসেল। ১৯ বলে ৫ ছক্কায় ৪০ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে দাপট দেখিয়েছেন এই ক্যারিবিয়ান।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ঝড় তুলার আভাস দিয়েছিলেন ক্রিস গেইল। কিন্তু এদিনও হয়েছে ব্যর্থ। এই ম্যাচেই এবারের আসরে প্রথমবার নামা নাদিফ চৌধুরীর ব্যাটেই রংপুর পায় শুরুর ঝড়।

প্রথম দুই ওভার থেকে মাত্র ৫ রান এলেও পরের দুই ওভারে থেকে ৩৭ রান নিয়ে নেন দুজন। তারমধ্যে শুভাগত হোমের টানা তিন বলে তিন ছক্কা মেরে বড় অবদান নাদিফেরই। ওই ছক্কা উৎসবের পরই অবশ্য অক্কা পান তিনি।

শুভাগতকে আরেকটি মারতে গিয়ে পোলার্ডের হাতে জমা পড়ে শেষ হয় তার ১২ বলে ২৭ রানের ঝড়। রংপুরকে স্তব্ধ করে দিয়ে তার পরের ওভারেই বিদায় গেইলের। রুবল হোসেনের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন।

দারুণ ফর্মে থাকা রাইলি রুশো এসেই রুবেলকে উড়াতে গিয়ে ক্যাচ হয়ে ফেরেন। উড়ন্ত অবস্থা থেকে তখন হুট করেই চরম সংকটে রংপুরের ইনিংস।

সেই অবস্থা থেকে দারুণ জুটিতে দলকে টেনে তুলেন মোহাম্মদ মিঠুন ও রবি বোপারা। দুজনে মিলে পালটা আক্রমণ চালিয়ে এগিয়ে নেন দলকে। বেশি আগ্রাসী থাকা মিঠুন আউট হলে ভাঙ্গে ৬৪ রানের জুটি।

২৭ বলে দুটি করে চার-ছক্কায় ৩৮ রান করে কাজি অনিকের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মিঠুন। এরপর আবারও দ্রুত দুই উইকেট খোয়ায় রংপুর। সাকিব তুলে নেন বেনি হাওয়েলকে। মাশরাফি কাটা পড়েন কাজি অনেকের বলে মারতে গিয়ে। শেষ দিকে রংপুরকে লড়ার মতো পূঁজি এনে দেন বোপারা। কিন্তু রান যে অন্তত ৩০ রান কম হয়েছে তা টের পাওয়া গেছে ইনিংস বিরতীতেই। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রংপুর রাইডার্স:   ১৯.৩ ওভারে ১৪২ (গেইল ১৫ , নাদীফ ২৭, মিঠুন ৩৮, রুশো ০, বোপারা ৪৯ , হাওয়েল ৩, মাশরাফি ০, নাহিদুল ৪, রেজা ২, শফিউল ০, নাজমুল  ; রাসেল ০/,  রুবেল ৪/২৩, শুভাগত ১/১৮ , সাকিব ১/২৯, নারাইন ০/১৮, অনিক ২/২১)

ঢাকা ডায়নামাইটস: ১৬.৪ ওভারে ১৪৭/৫  ( থারাঙ্গা ৪, নারাইন ১৪ , রনি ৩৫, সাকিব ২৩, পোলার্ড ১৪, নুরুল ৯*, রাসেল ৪০* ; মাশরাফি ২/৩২, রেজা ০/১৩, নাজমুল ১/৪৭, শফিউল ০/২০, হাওয়েল ১/১৭)

ফল: ঢাকা ডায়নামাইটস ৫ উইকেটে জয়ী।

Comments

The Daily Star  | English

Smaller in size, larger in intent

Finance Adviser Salehuddin Ahmed has offered both empathy and arithmetic in his budget speech, laying out a vision that puts people, not just projects, at the heart of economic policy.

9h ago