নির্দোষ জাহালমের জন্য ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি

জাহালমের প্রতি নির্মম ও অমানবিক কাজের দায় দুর্নীতি দমন কমিশন কিংবা রাষ্ট্র এড়িয়ে যেতে পারে না উল্লেখ করে বিনা দোষে তিন বছর কারাগারে থাকা এই পাটকল শ্রমিককে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি এসেছে। আজ শনিবার ঢাকার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক মানববন্ধন থেকে এই দাবি জানানো হয়।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের এই মানববন্ধন থেকে জাহালমের ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে শাস্তিরও দাবি তোলা হয়, যাতে ভবিষ্যতে তার মতো আর কেউকে বিনা অপরাধে কারাগারে থাকতে না হয়।
সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে আবু সালেক নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা হয়। এর মধ্যে ২৬টিতে জাহালমকে আসামি আবু সালেক হিসেবে চিহ্নিত করে অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
পাঁচ বছর আগে দুদক কার্যালয়ে হাজির হয়ে জাহালম বলেছিলেন, তিনি সালেক নন। বাংলায় লিখতে পারলেও ইংরেজিতে লিখতে জানেন না। কিন্তু, নিরীহ পাটকলশ্রমিক জাহালমের কথা সেদিন দুদকের কেউ বিশ্বাস করেননি।
এরপর, ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের এসব মামলায় জাহালম গ্রেপ্তার হন। পরে দুদকই বলেছে, জাহালম নিরপরাধ প্রমাণিত হয়েছেন। তদন্ত করে একই মত দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও। আদালতের নির্দেশে গত ৪ ফেব্রুয়ারি গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার- ২ থেকে মুক্তি পান জাহালম।
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি জিয়াউদ্দিন তারেক আলী মানববন্ধনে বলেন, “নিরীহ পাটকল শ্রমিক জাহালমকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। আর যেন জাহালমের মতো নির্দোষ কাউকে গ্রেপ্তার করে হয়রানি না করা হয়।”
জাহালম চরম অন্যায়ের শিকার হয়েছেন বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, অসংখ্য জাহালম, বাংলাদেশের কারাগারে পচে মরছেন। জাহালম দিনের পর দিন শুধু কারাগারে কেঁদেছেন। পরিবার থেকে তাকে বিচ্ছিন্ন রাখা হয়। চাকরি থেকে বিযুক্ত রাখা হয়। জাহালমের ক্ষতিপূরণ কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা হওয়া উচিত।”
Comments