১ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ: ক্রিসেন্ট গ্রুপ ও জনতা ব্যাংকের ২২ জনের বিরুদ্ধে দুদকের ৫ মামলা
জনতা ব্যাংকের ১ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ কাদের ও জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ মোট ২২ জনের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এর আগে, গত ৩০ জানুয়ারি ৯১৯ কোটি টাকা পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে রাজধানীর চকবাজার থানায় দায়ের করা অপর তিন মামলায় কাদেরকে গ্রেফতার করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
গতকালের মামলাগুলো ওই একই থানায় করা হয়। অভিযুক্ত ২২ জনের মধ্যে জনতা ব্যাংকের সাবেক জেনারেল ম্যানেজার ফখরুল আলম এবং জাকির হোসেনসহ প্রতিষ্ঠানটির ১৫ কর্মকর্তার নাম রয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, মামলায় অপর অভিযুক্তরা হলেন- ক্রিসেন্ট লেদার এবং ক্রিসেন্ট ট্যানারিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতানা বেগম, পরিচালক রেজিয়া বেগম, রিমেক্স ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক লিটুন জাহান মীরা, রূপালী কম্পোজিট লেদারওয়্যারের পরিচালক সামিয়া কাদের নদী এবং লেসকো লিমিটেডের পরিচালক মো. হারুন-অর-রশীদ।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দুদকের সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান এবং নেয়ামুল আহসান গাজী এই আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্ত শুরু করেন।
দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, জনতা ব্যাংকের ইমামগঞ্জ শাখা থেকে ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস লিমিটেড প্রায় ৫০০ কোটি টাকা, ক্রিসেন্ট ট্যানারিজ প্রায় ৬৮ কোটি ৩৪ লাখ, লেসকো লিমিটেড প্রায় ৭৪ কোটি ৩৮ লাখ, রূপালী কম্পোজিট লেদারওয়্যার লিমিটেড প্রায় ৪৫৪ কোটি এবং রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড প্রায় ৬৪৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।
ব্যাংকের কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দুদক কর্মকর্তারা জানতে পারেন যে, এসব কোম্পানি মিথ্যা তথ্য জমা দিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিলো। এমনকি ব্যাংক কর্মকর্তারাও এসব তথ্য সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে দেখেনি।
গত বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর এই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে দুদক এবং শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর (সিআইআইডি)। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রপ্তানির নাম করে জনতা ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কমপক্ষে ৭৬৫ কোটি টাকা বের করে নিয়েছে ক্রিসেন্ট গ্রুপ।
গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত জনতা ব্যাংক থেকে ক্রিসেন্ট গ্রুপের নেওয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪শ’ ৪৩ কোটি টাকা।
Comments