উড়তে থাকা ইউনাইটেডকে মাটিতে নামাল পিএসজি

ছবি: রয়টার্স

নেইমার নেই। নেই এডিসন কাভানিও। অনেকটাই দুর্বল প্যারিস সেইন্ট জার্মেইর (পিএসজি) আক্রমণভাগ। কিন্তু তাই নিয়েই দুর্বার টমাস টুখেলের শিষ্যরা। উড়তে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে মাটিতে নামিয়ে আনে তারা। ওল্ড ট্রাফোর্ড থেকেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে ফ্রান্সের দলটি। ইউনাইটেডকে ২-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল ফরাসী চ্যাম্পিয়নরা।

একে তো ঘরের মাঠে হার, তার উপর মরার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দলের প্রাণ ভোমরা পল পগবা পেলেন লাল কার্ড। ফলে নিশ্চিত ভাবেই ফিরতি পর্ব মিস করছেন এ ফরাসী। তাতে পিএসজির মাঠে জয় নিয়ে ফিরে আসার স্বপ্নে শুরুতেই ধাক্কা খেল ইংলিশ ক্লাবটি। অথচ হোসে মরিনহোকে ছাঁটাইয়ের পর নতুন কোচ ওলে গানার সুলশারের অধীনে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচ হারেনি। ১১ ম্যাচের ১০টিতে জয়, অপরটি ড্র।

শুধু তাই নয়, এর আগে কখনোই ঘরের মাঠে কোনো ফরাসী ক্লাবের কাছে হারেনি ম্যানইউ। এমনকি পিএসজিরও ইংল্যান্ডে মাত্র একবার জয়ের রেকর্ড রয়েছে। এদিন শুরুটাও বাজে করেছিল তারা। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়িয়ে দুর্দান্ত জয় নিয়েই দেশে ফিরছে ফরাসী ক্লাবটি।

এদিন দারুণ খেলেছেন আর্জেন্টাইন তারকা আনহেল দি মারিয়া। দুটি গোলই তৈরি করে দিয়েছেন তিনি। সুযোগ সৃষ্টি করেছিলেন আরও। তবে তা থেকে সুবিধা আদায় করে নিতে পারেননি ফরোয়ার্ডরা। ম্যাচের প্রথম সুযোগটিও পেয়েছিলেন তিনি। ষষ্ঠ মিনিটে দূরপাল্লার দারুণ এক শট নিয়েছিলেন এ আর্জেন্টাইন। কিন্তু অল্পের জন্য তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

দুই মিনিট পর ভালো সুযোগ পেয়েছিল ম্যানইউ। অ্যাশলে ইয়ংয়ের পাস থেকে কোনাকোনি থেকে জোরালো এক শট নিয়েছিলেন মার্কাস রাশফোর্ড। তবে সে শট কর্নারের বিনিময়ে ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফন। ১৫তম মিনিটে একক প্রচেষ্টায় দারুণ চেষ্টা করেছিলে পল পগবা। দুরূহ কোণ থেকে শটও নিয়েছিলেন। তবে ঝাঁপিয়ে পড়ে সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন বুফন। 

২৮ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন কিলিয়েন এমবাপে। হুলিয়ান দ্রেক্সলারের দারুণ ক্রসে গোলরক্ষককে একা পেয়েও লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি এ তরুণ। ফলে গোলশূন্য ভাবেই শেষ হয় প্রথমার্ধ।

তবে দ্বিতীয়ার্ধে শুরু থেকেই দারুণ গোছানো ফুটবল খেলতে থাকে পিএসজি। একের পর এক আক্রমণে দিশেহারা অবস্থা হয়ে যায় স্বাগতিকদের। ৫৩ মিনিটে দ্রেক্সলারের পাস থেকে একেবারে ফাঁকায় হেড নিয়েছিলেন এমবাপে। তার হেড দারুণ দক্ষতায় কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক দাভিদ দি হেয়া। দি মারিয়ার সেই কর্নার থেকেই একেবারে অরক্ষিত অবস্থায় দারুণ এক ভলিতে বল জালে জড়ান প্রেসনেল কিমপেম্বে।

৫৬তম মিনিটে কর্নার থেকে ডি বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক শট নিয়েছিলেন দানিয়েল আলভেজ। পগবার গায়ে লেগে দিক বদলে বার পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে গেলে সে যাত্রা বেঁচে যায় ইউনাইটেড। চার মিনিট পর ঠিকই ব্যবধান দ্বিগুণ করে অতিথিরা। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে বল পেয়ে ডিবক্সের মধ্যে থ্রু বাড়ান দি মারিয়া। সে বল ধরে আলতো টোকায় দিক বদলে বল জাল পাঠাতে কোণ ভুল করেননি এমবাপে।

৬৩তম মিনিটে দি মারিয়ার বাড়ানো ক্রসে আবারো ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন এমবাপে। গোলরক্ষককে একা পেয়ে এবারও বুদ্ধিদীপ্ত শট নিতে পারেননি। গোলরক্ষকের গায়ে মেরে মিস করেন সে সুযোগ। সুযোগ ছিল পরের মিনিটেও। দ্রেক্সলারের পাস থেকে দারুণ শট নিয়েছিলেন হুয়ান বেরনাত। কিন্তু দারুণ দক্ষতায় সে শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক দি হেয়া।

এরপর গোল শোধ করতে বেশ মরিয়া হয়েই খেলতে থাকে ম্যানইউ। কিন্তু অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়েই খেই হারায় তাদের আক্রমণগুলো। ৮২ মিনিটে দূরপাল্লার দারুণ এক শট নিয়েছিলেন হেরেরা। কিন্তু সে শট লক্ষ্যে থাকেনি। ৮৯ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন পগবা। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় দলটিকে।

দিনের অপর ম্যাচে এফসি পোর্তোকে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে স্বাগতিক এএস রোমা।  

Comments

The Daily Star  | English

Please don't resign: An appeal to Prof Yunus

A captain cannot abandon ship, especially when the sea is turbulent

9h ago