বিলুপ্তির পথে সুন্দরবনের বাঘ

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে হারিয়ে যাবে বিশ্ব-ঐতিহ্য সুন্দরবনের বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের এই বিলুপ্তি বিশেষভাবে ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানানো হয়েছে এক নতুন গবেষণায়।
royal bengal tiger
রয়েল বেঙ্গল টাইগার। ছবি: এম মনিরুল এইচ খান।

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে হারিয়ে যাবে বিশ্ব-ঐতিহ্য সুন্দরবনের বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের এই বিলুপ্তি বিশেষভাবে ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানানো হয়েছে এক নতুন গবেষণায়।

বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়- বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীদের একটি দল তাদের ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং সাগরের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ অংশে সুন্দরবনের বিপন্ন বাঘ’ শীর্ষক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণায় বলা হয়, ক্রমাগত সাগরের পানি বাড়ার কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত সুন্দরবনের বাসিন্দা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ছে।

এই গবেষণা প্রতিবেদনটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে সায়েন্স অব দ্য টোটাল এনভায়রনমেন্ট।

গবেষণাপত্রটির অন্যতম লেখক এবং জেমস কুক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিল লরেন্স। এতে বলা হয়েছে, “বর্তমানে ৪ হাজারের বেশি বাঘ সুন্দরবনে রয়েছে। এক সময় এই সংখ্যাটি আরও বেশি ছিলো। এখন প্রকৃতপক্ষে সংখ্যায় এটি খুবই কম।”

গবেষণাপত্রের মূল লেখক এবং ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (আইইউবি)-র সহকারী অধ্যাপক ড. শরিফ মুকুল জানান, “বাংলাদেশ এবং ভারত মিলিয়ে সুন্দরবনের ১০ হাজার কিলোমিটারের বেশি এলাকা নিয়ে গঠিত প্যারাবনটি সারাবিশ্বে সুন্দরবন হিসেবে পরিচিত। এটিই পৃথিবীর একক বৃহত্তম প্যারাবন। তবে এখানে বাঘদের টিকে থাকার জন্যে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে,” যোগ করেন তিনি।

“আমাদের পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে আগামী ৫০ বছরে তথা ২০৭০ সালের মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল সুন্দরবন বিলুপ্ত হয়ে যাবে,” যোগ করেন ড. মুকুল।

অধ্যাপক বিল লরেন্সের মতে, বন ধ্বংসের পেছনে জলবায়ু পরিবর্তন ছাড়াও আরও কারণ হলো- বনাঞ্চলের পাশে কলকারখানা স্থাপন, নতুন রাস্তা তৈরি এবং নির্বিচার শিকার। তিনি বলেন, “একদিকে, মানুষের আগ্রাসন এবং অন্যদিকে, জলবায়ু পরিবর্তন বাঘের আবাসস্থলকে সঙ্কটাপন্ন করে ফেলেছে।”

তবে বন ও বাঘ রক্ষার ক্ষেত্রে এখনো আশা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণাটিতে। অধ্যাপক লরেন্স বলেন, “শিকার বন্ধ করার পাশাপাশি সুন্দরবনকে সংরক্ষণ করলে সেখানকার প্রাণিগুলো পরিবর্তিত পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে পারবে।” আর এসবের মাধ্যমেই বাঘসহ বনের অন্যান্য প্রাণিদের অস্তিত্ব বা জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Ban on plastic bags a boon for eco-friendly sacks

Availability of raw materials now a challenge

3h ago