দ্য ডেইলি স্টারের ২৮ বছর পূর্তি: দুই বাতিঘর সম্মানিত
এক বৃদ্ধের উক্তি, “শিক্ষক ছাড়া জাতি গঠন অসম্ভব” প্রমাণ করে যে একটি জাতি গঠনে শিক্ষকের ভূমিকা কতোটা অপরিহার্য। সর্বোপরি তারা জ্ঞানের বাহক এবং বিতরণকারী। এই বাতিঘরদের ছাড়া একটি জাতিকে গড়ে তোলা কখনোই সম্ভব নয়।
অন্য অনেক পেশার মতো এখানেও এমন কয়েকজন আত্ম-উৎসর্গকারী শিক্ষকদের দেখা পাওয়া যায়, যারা নিজ কর্মগুণে অনন্য উচ্চতায় আসীন হয়ে আছেন। যদিও মানব কল্যাণে তাদের এই নিরলস প্রচেষ্টাকে কোনো পরিমাপেই প্রকাশ করা যায় না। উপরন্তু তাদের অনেকের জীবন লোকচক্ষুর অন্তরালেই কেটে যায়।
তাদেরই একজন সত্যজিৎ বিশ্বাস। তিন দশকের শিক্ষকতার জীবনে যিনি একদিনের জন্যও ছুটি নেননি। যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ধোপাদি উচ্চবিদ্যালয়ের গণিত ও বিজ্ঞানের এই শিক্ষকের ক্লাসে দেরি করে ঢোকারও নজির নেই। এমনকি নিজের বিয়ে এবং পিতৃবিয়োগের দিনেও শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেছেন তিনি।
অপর আলোর দিশারী হলেন পাবনার তাহেরুল ইসলাম। অবসরের পর ৭০ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধান শিক্ষক সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জ্ঞান বিতরণের জন্য খুলে বসেছেন বিনামূল্যের স্কুল। ঈশ্বরদীর সারা-গোপালপুর গ্রামের সেই ‘বিনা পয়সার পাঠশালা’-য় এখন প্রায় ৫০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ গতকাল দ্য ডেইলি স্টারের ২৮ বছর পূর্তি উৎসবে এই দুই বাতিঘরকে সম্মাননা জানানো হয়েছে। রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটিতে এই দুই শিক্ষককে সম্মাননা স্মারক ও এক লাখ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়। এর আগে, এই দুই কীর্তিমানকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল দ্য ডেইলি স্টার।
‘ভয় ও অনুগ্রহ বিহীন সাংবাদিকতা’ বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে উদযাপিত অনুষ্ঠানে দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম বলেন, “স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে নিয়ে সরকারকে মাঝে-মধ্যে বিচলিত হতে দেখা যায়। কিন্তু, একটি উন্নয়ন প্রকল্পে যদি কোনো ভুল ধরা পড়ে তাহলে স্বাধীন সাংবাদমাধ্যমের দ্বারা সেগুলো আলোয় চলে আসতে পারে। সুতরাং একটি স্বাধীন সংবাদমাধ্যমই পারে সরকারের সঙ্গে নাগরিকদের যোগাযোগ স্থাপন ও তাদের কর্মশুদ্ধি এবং সম্পদের সুষম বণ্টনের সুযোগ করে দিতে।”
দ্য ডেইলি স্টারের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মিডিয়াওয়ার্ল্ড লিমিটেডের চেয়ারপারসন রোকিয়া আফজাল রহমান বলেন, “গত ২৮ বছরের যাত্রা সবসময় মসৃণ ছিলো না। আর্থিক প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, জোরপূর্বক বিজ্ঞাপন তুলে নেওয়ার মতো ঘটনারও সম্মুখীন হতে হয়েছে।”
Comments