ইতিহাস বিকৃতি: ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ বাজার থেকে তুলে নেওয়ার আদেশ
‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ বইয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অন্তর্ভুক্ত না করে ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে মর্মে বইটি অবিলম্বে বাজার থেকে তুলে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত এই বইয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথাও সবিস্তারে উল্লেখ নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও এই বইয়ের সম্পাদক শুভঙ্কর সাহাকেও তলব করেছেন আদালত। আগামী ১২ মার্চ হাইকোর্টে হাজির হয়ে বইয়ে ইতিহাস বিকৃতির ব্যাপারে তাকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে এই ইতিহাস বিকৃতিকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না—সে ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাব চাওয়া হয়েছে।
‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ বইয়ে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে অভিযোগে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট কমিশন এর চেয়ারম্যান ড. কাজী এরতাজা হাসান একটি রিট আবেদন করেছিলেন। রিটের শুনানি নিয়ে গত বছর ২ অক্টোবর ইতিহাস বিকৃতির বিষয়টি তদন্ত করতে একটি কমিটি করার জন্য অর্থ সচিবকে আদেশ দেন আদালত। ‘বইয়ে ইতিহাস বিকৃতি হয়েছে’ মর্মে গতকাল ১৮ ফেব্রুয়ারি কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার পর আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বই প্রত্যাহার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দিল।
অতিরিক্ত অর্থ সচিব ড. মোহাম্মদ জাফর উদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত চার সদস্যের কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বইটি প্রণয়নে সম্পাদনা কমিটির কাজের মধ্যে অসংগতি ছিল। এছাড়া, গবেষণা কমিটি ও সম্পাদনা কমিটির মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ছিল মর্মে প্রতীয়মান হয়।
বইটির সম্পাদক শুভঙ্কর সাহা ভুল স্বীকার করে এই তদন্ত কমিটিকে বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ছবি অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি সম্পাদক মণ্ডলীর কারও মাথাতেই আসেনি। সেই সঙ্গে বইয়ে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর আব্দুল মোনেম খানের ছবি অন্তর্ভুক্ত না করা হলেই ভালো হতো।
রিট আবেদনকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আইয়ুব খান ও মোনেম খানের ছবি অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের অবমাননা করা হয়েছে।
শুনানির সময় আদালতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন এডভোকেট জুবায়ের রহমান ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল আল আমিন সরকার।
Comments