বাংলাদেশের সামনে পাহাড় ডিঙানোর চ্যালেঞ্জ
শুরুর ধাক্কা সামলে দলকে টানলেন হেনরি নিকোলাস। নিউজিল্যান্ডের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানে পৌঁছানোর দিন রস টেইলর খেললেন দায়িত্ব নিয়ে। এই দুজনের পর ফিফটি পেলেন এই অধিনায়কত্ব করা টম ল্যাথামও। তাদের দেওয়া ভিতের উপর ঝড় তুলেন জিমি নিশাম, শেষটায় তান্ডব চালিয়ে কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম দলকে নিয়ে যান চূড়ায়।
ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভালে আগে ব্যাটিং পেয়ে পুরো ওভার ব্যাট খেলে ৩৩০ রান করেছে নিউজিল্যান্ড। নিউজিল্যান্ডের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে প্রথমবার হারাতে তাই কঠিন চ্যালেঞ্জই পাড়ি দিতে হবে বাংলাদেশকে।
প্রথম দুই ম্যাচে আগে আগে ব্যাট করে ভুগতে হয়েছিল। শুরুর এক ঘন্টাতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছিল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে টস জিতে তাই আগে ফিল্ডিং বেছে পরিস্থিতি বদলাতে চেয়েছিলেন মাশরাফি। তিনি নিজে আর মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন করেন আঁটসাঁটও বোলিং, মাঝের ওভারে রান আটকে দেওয়ার কাজ করেন মিরাজও। তবে বাকি দুই পেসার রুবেল হোসেন আর মোস্তাফিজুর রহমানের দেদারসে রান বিলানোর দিনে ভুগেছে বাংলাদেশ।
মোস্তাফিজ তো ১০ ওভারে ৯৩ রান দিয়ে কাটিয়েছেন ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে দিন। রুবেল ৯ ওভারে দেন ৬৪ রান।
ডানেডিনের ইউনিভার্সিটি ওভাল ছোট মাঠের উইকেট ব্যাটসম্যানদের জন্য অনেক সহায়ক। তবে সকালের আদ্যটা কাজে লাগিয়ে প্রথম দশ ওভারে পেসারদের জন্যও ছিল রসদ। সামর্থ্য অনুযায়ী সেটা করতেও পেরেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শুরুর পাওয়া ছন্দ স্লগ ওভারে গিয়ে হয়েছে মলিন। শেষ ১০ ওভারে নিউজিল্যান্ড তুলেছে ১০৬ রান, শেষ পাঁচ ওভারে ৫৯ রান।
অথচ দিনের শুরুটা ছিল আশা জাগানিয়া। কলিন মনরোকে শুরুতেই ফিরিয়ে দিয়ে অধিনায়কই আনেন প্রথম উইকেট। রাউন্ড দ্য উইকেটে বল করে বাঁহাতি মনরোকে বানান এলবিডব্লিও। ২১ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর ফের দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন মার্টিন গাপটিল। তবে এবার বেশি দূর আগাতে পারেননি। বলা ভালো আগাতে দেননি তামিম ইকবাল। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের বলে লং অন দিয়ে ছক্কা পেটানোর শট মেরেছিলেন আগের দুই ম্যাচেই সেঞ্চুরি করা গাপটিল। বাউন্ডারি লাইনে অসম্ভব ক্ষীপ্রতায়, শরীরের ভারসাম্য রেখে দুই দফায় সেই ক্যাচ হাতে জমান তামিম।
গাপটিল ফিরলেও নিউজিল্যান্ডের ভিত দাঁড়িয়ে যায় পরের দুই জুটিতে। তৃতীয় উইকেট জুটিতে হেনরি নিকোলাস আর রস টেইলর তুলেন ৯২ রান। দুজনেই রান বাড়ান সমান তালে। মেহেদী হাসান মিরাজকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মিড উইকেটে তামিমের কাছে জমা পড়ে বিদায় নেওয়া নিকোলাস করেন ৬৪ রান।
চতুর্থ উইকেটে টেইলরের সঙ্গে এই ম্যাচের অধিনায়ক টম ল্যাথাম গড়েন ৫৫ রানের আরেক জুটি। ডানেডিনের মাঠে বরাবরই ভালো খেলা টেইলর দিচ্ছিলেন বড় কিছুর ইঙ্গিত। ৬৯ রানে তাকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন রুবেল হোসেন।
এরপর কিউইদের রাঙান ল্যাথাম। রুবেলের এক ওভার থেকে দুই ছক্কায় তুলেন ২১ রান। তখন মার খাচ্ছিলেন মোস্তাফিজও। তবে শেষ দিকে ৫১ বলে ৫৯ করা ল্যাথামকে ফেরান তিনিই। এর আগে ২৪ বলে ৩৭ রান করা জিমি নিশামকেও বোল্ড করেন মোস্তাফিজ।
কিন্তু নিজের শেষ দুই ওভারে প্রচুর রান দেন তিনি। ১০ ওভারের স্পেলে দুই উইকেট নিতে খরচ করে ফেলেন ৯৩ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩৩০/৬ (গাপটিল ২৯, মনরো ৮, নিকোলাস ৬৪ , টেইলর ৬৯, ল্যাথাম ৫৯ , নিশাম ৩৭, গ্র্যান্ডহোম ৩৭, স্যান্টনার ১৬ ; মাশরাফি ১/৫১, মোস্তাফিজ ২/৯৩, রুবেল ১/৬৪ , সাইফুদ্দিন ১/৪৮, মিরাজ ১/৪৩, মাহমুদউল্লাহ ০/২৮)
Comments