বাবা ছেলের জড়িয়ে ধরা লাশ

পুরান ঢাকার চকবাজারের আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে গাড়িগুলো। ছবি: আনিসুর রহমান

স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে পুরান ঢাকার চকবাজারের সরু গলিপথে রিকশা নিয়ে যাচ্ছিলেন রশিদুল ইসলাম। চকবাজারের পাশেই তার বড় ছেলে রামিমের বন্ধুর বাসায় সপরিবারে নিমন্ত্রিত ছিলেন তারা। কিন্তু পথিমধ্যে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডে এই পরিবারটির তিন জন পুড়ে মারা গেছেন।

হাতিরপুল এলাকায় একটি চায়ের দোকানে কাজ করতেন রশিদুল। লালবাগের জুরাইনগুল এলাকায় থাকতেন পরিবার নিয়ে। সেখান থেকেই এক রিকশায় চড়ে রওনা হয়েছিলেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাজী ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনে যানজটে আটকে যায় তাদের রিকশা। ঠিক তখনই ঘটে বিস্ফোরণ। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়লে রামিম রিকশা থেকে লাফিয়ে পড়ে। তার শরীরের ১১ শতাংশ পুড়ে গেলেও প্রাণে বেঁচে যায় সে। আর আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে মরে তার বাবা রাশিদুল (৩৯), মা সোনিয়া ইসলাম (৩১) ও ছোটভাই মিহীর (৪)।

আরও পড়ুন: কেমনে দেখিবো মায়ের মুখ!

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তাদের লাশ দেখেই বোঝা যায় মিহীরকে বাঁচাতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে গেছেন রশিদুল। ছেলের গায়ে যেন আঁচ না লাগে তার জন্য জাপটে ধরে রেখেছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি কারও।

ঘটনার এই হৃদয়বিদারক বিবরণ দিয়ে রাশিদুলের নিকটাত্মীয় হানিফ জানান, সোনিয়ার লাশও ওই একই জায়গায় পাওয়া গেছে।

আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া সোনিয়া ইসলামের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি। ছবি: শাহীন মোল্লা

পরিবারটির বেঁচে যাওয়া একমাত্র সদস্য ১১ বছরের রামিমকে গত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বাবা-মা-ভাই হারিয়ে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সে এখন একা।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh tops sea arrivals to Italy

The number of Bangladeshis crossing the perilous Mediterranean Sea to reach Italy has doubled in the first two months this year in comparison with the same period last year.

4h ago