বড় লিডের পথে নিউজিল্যান্ড

ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিলেন জিত রাভাল। টম লাথাম তো গেলেন দেড়শ পেরিয়ে। আর এ দুই ওপেনারের জোড়া সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে গড়লেন রেকর্ড ওপেনিং জুটি। এরপর এ দুই ব্যাটসম্যানকে থামানো গেলেও আবার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন কেন উইলিয়ামসন ও হেনরি নিকোলসরাও। ফলে টাইগারদের ভোগান্তি যেন থামছেই না। ধারহীন নির্বিষ বোলিংয়ে চলছে স্বাগতিকদের রান উৎসব। এর মধ্যেই লিড ছাড়িয়েছে ২১৭ রানে।
ছবি: এএফপি

ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিলেন জিত রাভাল। টম লাথাম তো গেলেন দেড়শ পেরিয়ে। আর এ দুই ওপেনারের জোড়া সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে গড়লেন রেকর্ড ওপেনিং জুটি। এরপর এ দুই ব্যাটসম্যানকে থামানো গেলেও আবার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছেন কেন উইলিয়ামসন ও হেনরি নিকোলসরাও। ফলে টাইগারদের ভোগান্তি যেন থামছেই না। ধারহীন নির্বিষ বোলিংয়ে চলছে স্বাগতিকদের রান উৎসব। এর মধ্যেই লিড ছাড়িয়েছে ২১৭ রানে।

দ্বিতীয় দিন শেষে ৪ উইকেটে ৪৫১ রান তুলেছে নিউজিল্যান্ড। লিড বাড়িয়ে নিতে লম্বা সময়ই পাচ্ছে তারা। টেস্টের এখনও বাকী তিনদিন। হাতে রয়েছে ছয় উইকেট। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন এবং নাইটওয়াচম্যান নিল ওয়াগনার রয়েছেন উইকেটে।

দিনের শুরু থেকেই কিউই ব্যাটসম্যানদের বড় কোন ভোগান্তিতে ফেলতে পারেননি টাইগার বোলাররা। তিন পেসারের কারো বলেই ছিল না গতি। এমনকি সঠিক লাইন ও লেংথে টানা বল করে যেতে পারেননি। পারেননি স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজও। দিনের শেষ বেলা কেবল হেনরি নিকোলসকে আউট করার বলটিতেই যেন নিজেকে খুঁজে পেলেন এ স্পিনার।

টাইগারদের মূল ভোগান্তির শুরুটা দুই ওপেনারের সেঞ্চুরিতে। অথচ এ ম্যাচের আগে ১৬ টেস্টে সাতবার পঞ্চাশোর্ধ রান করেছেন রাভাল। কিন্তু তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছানো হয়নি। কিন্তু প্রথম সেঞ্চুরির জন্য বাংলাদেশ তো বরাবরই প্রতিপক্ষের পছন্দের দল। এদিনও তাই করলেন রাভাল। ৩২তম ব্যাটসম্যান হিসেবে টাইগারদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিলেন এ ওপেনার। অথচ প্রথম ফার্স্ট ক্লাস সেঞ্চুরিটা পেয়েছিলেন ঠিক ১০ বছর আগে।

এদিন ইবাদত হোসেনের করা ইনিংসের ৭০তম ওভারে টানা দুটি চার মারেন রাভাল। তাতে দুই দুইটি মাইলফলকে পৌঁছান এ কিউই ব্যাটসম্যান। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিটি পেলেনই, টেস্ট ক্রিকেটে নিজের এক হাজার রানও পূরণ করলেন। মজার ব্যাপার এক হাজার রানে ছিল না কোন ছয়ের মার। সেঞ্চুরি করার পর মেহেদী হাসান মিরাজকে পুল করে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ছয়টি পান তিনি।

প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার দিনে লাথামের ওপেনিং জুটিতে ২৫৪ রান করেছেন রাভাল। অথচ ৮৯ বছরের টেস্ট ইতিহাসে নিউজিল্যান্ডের ওপেনিং জুটিতে মাত্র পাঁচবার এসেছে দুইশর বড় জুটি। বাংলাদেশের বিপক্ষে এদিনের জুটিটি তাদের তৃতীয় সেরা ওপেনিং জুটি। এমনকি সব উইকেট মিলিয়ে ১২তম সর্বোচ্চ। এর আগে ২০০১ সালে করা ম্যাট হর্ন ও মার্ক রিচার্ডসনের ১০৪ রানের জুটিটি ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে কিউইদের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি।

০ রানেই সৌম্য সরকারের হাতে জীবন পাওয়া লাথাম এদিন আউট হয়েছেন সেই সৌম্যর হাতেই। তবে এ আউটে কৃতিত্বটা বেশি মোহাম্মদ মিঠুনেরই। স্লিপে ঝাঁপিয়ে পরে দারুণ ক্যাচ লুফে নিয়েছেন তিনি। এ অঞ্চল থেকে এমনতেই টাইগাররা মুড়িমুড়কির মতো ক্যাচ মিস করে থাকেন। তবে এর আগেই কাজের কাজটা করে গেছেন লাথাম। খেলেছেন ১৬১ রানের ইনিংস। ২৪৮ বলের এ ইনিংসে ১৭টি চার ও ৩টি ছক্কা মেরেছেন তিনি। আর ৪৭ রান করার পথে টেস্ট ক্যারিয়ারের তিন হাজার রানের মাইলফলকেও পৌঁছান এ ওপেনার। ক্যারিয়ারের নবম টেস্ট সেঞ্চুরিটি তার টানা তৃতীয়ও বটে।

এর আগে টাইগারদের প্রথম সাফল্যটা এনে দিয়েছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহই। লাথাম ও রাভালের ব্যাটিং দেখে এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল এ জুটি যেন ভাঙবেই না। তবে পার্ট টাইম ওই মাহমুদউল্লাহই স্বস্তি এনে দেন। হয়তো পার্ট টাইম বোলার দেখেই নিজেকে আটকাতে পারেননি রাভাল। তার বলে চড়াও হতে গিয়ে মিড উইকেটে ধরা পড়েছেন সৈয়দ খালেদ আহমেদের হাতে। ২২০ বলে ১৩২ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন রাভাল। ১৯টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি।

দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর রস টেইলরকেও স্থায়ী হতে দেননি সৌম্য। তাকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেছেন তিনি। কিন্তু এরপর আবারও সংগ্রাম করতে থাকে টাইগাররা। সেঞ্চুরির পথে আছেন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও। অসাধারণ ব্যাটিং করে ৯৩ রানে অপরাজিত আছেন তিনি। ১৩২ বলের ইনিংসে ৯টি চার মেরেছেন অধিনায়ক। হাফসেঞ্চুরি তুলেন নেন হেনরি নিকোলসও। ৫৩ রান করে মিরাজের শিকার হয়েছেন তিনি। চতুর্থ উইকেটে এ দুই ব্যাটসম্যান গড়েছেন ১০০ রানের জুটি।

নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৩৪ রান করে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ২৩৪

নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস: ১১৮ ওভারে ৪৫১/৪ (আগের দিন ৮৬/০) (রাভাল ১৩২, ল্যাথাম ১৬১, উইলিয়ামসন ৯৩*, টেইলর ৪, নিকোলস ৫৩, ওয়াগনার ১*; আবু জায়েদ ০/৬৫, ইবাদত ০/৭৭, খালেদ ০/৮৪, সৌম্য ২/৫৭, মিরাজ ১/১৪৯, মাহমুদউল্লাহ ১/৩, মুমিনুল ০/১১)।

 

Comments

The Daily Star  | English

Banks mostly gave loans to their owners rather than creditworthy borrowers

Bangladesh’s banking sector was not well-managed in recent years. Banks mostly gave loans to their owners, rather than to creditworthy entities. Consequently, several banks are now in difficulty.

11h ago