অগ্নি দানবের স্বর্গ পুরান ঢাকা
পুরান ঢাকা এতোটাই অগ্নিকাণ্ড প্রবণ যে, গত বছর সেখানে গড়ে প্রতিদিন অন্তত একটি করে অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটেছে। দমকল বিভাগের তথ্য বলছে, পুরান ঢাকার লালবাগ, হাজারীবাগ, সদরঘাট এবং সিদ্দিকবাজার এলাকায় অন্তত ৪৬৮টি অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং এসব এলাকায় অবৈধভাবে পরিচালিত প্রায় পাঁচ শতাধিক রাসায়নিক গুদাম এবং কারখানা রয়েছে।
এসব অগ্নি দুর্ঘটনায় একজন নিহত এবং অপর দুই ব্যক্তি আহত হলেও, সব মিলিয়ে এসব ঘটনায় প্রায় ৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে বলে জানাচ্ছে দমকল বিভাগ।
সার্বোচ্চ ১৬৩টি অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটেছে সিদ্দিকবাজারে। এতে সেখানকার প্রায় ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে। এছাড়া, হাজারীবাগের ১৬০টি অগ্নি দুর্ঘটনার ঘটনায় নষ্ট হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৪২ টাকার সম্পদ।
দমকল বিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান বলেন, “অগ্নিকাণ্ডের এই প্রবণতাই নির্দেশ করে যে পুরান ঢাকা কতোটা নাজুক অবস্থায় রয়েছে।”
দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “আপনি যদি পুরান ঢাকা ঘুরে দেখেন, তাহলে আপনি সেখানকার আবাসিক ভবনগুলোতে রাসায়নিক, প্লাস্টিক, প্রসাধনী, রাবার এবং নেইল পলিশের গুদাম পাবেন। এসব বস্তুই অগুন লাগার জন্য আদর্শ পরিবেশ তৈরি দেয়।”
গত বছর এক জরিপ চালিয়ে পুরান ঢাকায় ৫৩৭টি রাসায়নিকের গুদাম খুঁজে পায় দমকল বিভাগ। এগুলোর সবই লালবাগ, হাজারীবাগ, সদরঘাট এবং সিদ্দিকবাজার এলাকায় অবস্থিত।
এগুলোর মধ্যে সদরঘাটে ৩৭৯টি এবং লালবাগে ৮৭টি রাসায়নিকের গুদাম রয়েছে।
ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার ঝুঁকির ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে।
কিন্তু, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বিরোধের মুখে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করে দিতে হয়েছে বলেও জানান আলী আহাম্মেদ।
২০১০ সালে নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জন মারা যাওয়ার পর ওই এলাকায় কোনো ধরনের রাসায়নিক কারখানা এবং গুদাম স্থাপনে অনুমোদন দেয়নি দমকল বিভাগ।
তাছাড়া, দমকল বিভাগ গত বছর জরিপ চালানোর পর আবাসিক এলাকা থেকে অনতিবিলম্বে এসব রাসায়নিক কারখানা ও গুদাম অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার সুপারিশ করেছিলো।
কিন্তু, পরিস্থিতির যৎসামান্যই উন্নতি হতে দেখা গেছে। উপরন্তু চকবাজার, উর্দু রোড, আগামাসি লেন, শহীদনগর, সিদ্দিকবাজার এবং ইসলামবাগ ঘুরে সেখানকার বহু আবাসিক ভবনে রাসায়নিক সামগ্রীর গুদাম ও কারখানা খুঁজে পেয়েছে দ্য ডেইলি স্টার।
(সংক্ষেপিত, পুরো রিপোর্ট পড়তে নিচের ইংরেজি লিংকে ক্লিক করুন)
Comments