রিয়ালকে উড়িয়ে দিয়েই শেষ আটে আয়াক্স

দুর্ভাগ্য বোধ হয় একেই বলে। প্রথমার্ধেই দুই দুইবার বার পোস্টে লেগে ফিরে আসে বল। উল্টো মরার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দলের দুই নির্ভরযোগ্য তারকা প্রথম আধা ঘণ্টাতেই ইনজুরি হয়ে মাঠ ছাড়লেন। ভিএআরও এদিন বিপক্ষে গিয়েছে তাদের। তবে তাতে আয়াক্সের কৃতিত্বকে খাট করে দেখার কোন উপায় নেই। দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয় ডাচ দলটি। রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে তারা।

দুর্ভাগ্য বোধ হয় একেই বলে। প্রথমার্ধেই দুই দুইবার বার পোস্টে লেগে ফিরে আসে বল। উল্টো মরার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে দলের দুই নির্ভরযোগ্য তারকা প্রথম আধা ঘণ্টাতেই ইনজুরি হয়ে মাঠ ছাড়লেন। ভিএআরও এদিন বিপক্ষে গিয়েছে তাদের। তবে তাতে আয়াক্সের কৃতিত্বকে খাট করে দেখার কোন উপায় নেই। দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয় ডাচ দলটি। রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে তারা।

সব ধরণের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ঘরের মাঠে টানা চারটি ম্যাচ হারলো রিয়াল। শেষ সাত দিনেই তিনবার। আর এ তিন হারেই চলতি মৌসুমে কোনো শিরোপা জয়ের সব আশাই শেষ হয়ে গেল দলটির। গত বুধবার কোপা দেল রে সেমি-ফাইনালের ফিরতি লেগে বার্সেলোনার কাছে ৩-০ গোলে হেরে বিদায় নেয় তারা। ৭২ ঘণ্টা পর বার্সার কাছেই ১-০ গোলে হেরে লা লিগা থেকে এক প্রকার ছিটকে গেছে তারা। শীর্ষে থাকা কাতালান ক্লাবের চেয়ে ১২ পয়েন্ট পিছিয়ে পড়ে সোলারির শিষ্যরা। অবিশ্বাস্য কিছু না হলে লিগ জেতার কোন সম্ভাবনাই নেই তাদের। আর এদিন বাদ পড়ল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে।

তবে গোল করার সুযোগ প্রথমে মিলেছিল রিয়ালেরই। চতুর্থ মিনিটে ভাগ্য বঞ্চিত হয় দলটি। বাঁ প্রান্ত থেকে দারুণ এক ক্রস করেছিলেন লুকাস ভাসকেস। ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ হেডও দিয়েছিলেন রাফায়েল ভারানে। কিন্তু তার হেড ক্রস বাড়ে লেগে ফিরে আসে। তিন মিনিট পর কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়ে যায় আয়াক্স। ডান প্রান্তে হাকিম জিয়েখকে দারুণ এক পাস দেন দাসুন তাদিচ। বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দারুণ এক কোণাকোণি শটে লক্ষ্যভেদ করেন এ তারকা।

ব্যবধান দ্বিগুণ করতে খুব বেশি সময় নেয়নি আয়াক্স। দাভিদ নেরেসের বুদ্ধিদীপ্ত এক শটে ব্যবধান বাড়ায় দলটি। তবে এ গোলে বড় অবদানটা তাদিচেরই। একক নৈপুণ্যে তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডি বক্সে দারুণ এক পাস দেন তিনি। আর সে বল ধরে গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে চিপ মেরে জালে জড়ান এ ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

২২তম মিনিট ব্যবধান আরও বাড়াতে পারতো আয়াক্স। জিয়েখের পাস থেকে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন নেরেস। কিন্তু তার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরের মিনিটে ব্যবধান কমানোর সহজ সুযোগ পেয়েছিল রিয়ালও। কিন্তু ভাসকেসের শট দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন আয়াক্স গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানা।

২৫তম মিনিটে গোল করার আবারো সহজ সুযোগ পেয়েছিল আয়াক্স। দিলে ব্লিন্দের ক্রস থেকে একবারে ফাঁকায় গোলরক্ষককে পেয়ে গিয়েছিলেন তাদিচ। তবে তার শট রুখে দেন থিবো কর্তুয়া। ২৯তম মিনিটে ইনজুরিতে পোড়ে মাঠ ছাড়েন ভাসকেস। দুই মিনিট পর কাউন্টার থেকে দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন ভিনিসিয়াস। দারুণ গতিতে এগিয়ে গিয়ে ছিলেন তিনি। তবে লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি। উল্টো ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।

৩৪তম আবারো রিয়ালের ত্রাতা কর্তুয়া। জিয়েখের ডান পায়ের শট দারুণ দক্ষতায় সেভ করেন এ বেলজিয়ান গোলরক্ষক। আট মিনিট পর আবারো ভাগ্য বঞ্চিত হয় রিয়াল। মার্কো আসেনসিও শট এক ডিফেন্ডার ফিরিয়ে দিলে ফিরতি বল পেয়ে যান বেল। তার শট আর পোস্টে লেগে ফিরে আসলে হতাশা বাড়ে স্বাগতিকদের। ৪৫ মিনিটে কর্নার থেকে ফাঁকায় হেড দেওয়ার সুযোগ পেয়েও লক্ষ্যে রাখতে পারেননি নাচো।

দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণের ধারা বজায় রাখে আয়াক্স। ৫১ মিনিটে দারুণ সুযোগও পায় দলটি। সে যাত্রা দলকে রক্ষা করেন কর্তুয়া। ডনি ভ্যান ডি বিকের শট দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন তিনি। সাত মিনিট পর এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দুরূহ কোন থেকে শট নিয়েছিলেন বেনজেমা। তবে অল্পের জন্য তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

৬১তম মিনিটে দারুণ এক গোল দেন তাদিচ। বাঁ প্রান্ত থেকে তাদিচকে পাস দেন বনি। সে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডিবক্সের বাইরে থেকে জোরালো এক শটে বল জালে জড়ান এ সার্বিয়ান। কার্যত তখনই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে পড়ে রিয়াল। তবে সে গোলে ভিএআরের সাহায্য নিয়েছিলেন রেফারি। কারণ বল সাইডলাইনের প্রায় বাইরে প্রায় চলে গিয়েছিল। বেশ কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণের পর টিকে যায় সে গোল।

৬৮তম মিনিটে ব্যবধান কমানোর দারুণ সুযোগ মিস করেন বেল। একবারে ফাঁকায় বল পেয়েও লক্ষভেদ করতে পারেননি তিনি। তার শট রুখে দেন গোলরক্ষক ওনানা। ৬৯ মিনিটে আসেনসিওর শট প্রায় গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন এক ডিফেন্ডার। তবে পরের মিনিটেই গোল আদায় করে নেন তিনি। রেগুলনের আড়াআড়ি পাস থেকে দারুণ এক কোণাকোণি শটে ব্যবধান কমান আসেনসিও।

৭৩ মিনিটে অবিশ্বাস্য এক গোল দেন লেসে শোনে। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে ৩০ ডিগ্রি কোণে ফ্রিকিক থেকে দারুণ এক বাঁকানো শটে ৬ফিট ৬ ইঞ্চি উচ্চতার গোলরক্ষক কর্তুয়ার মাথার উপর দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।

৮৩ মিনিটে রিয়ালকে যেন গোল উপহার দিতে যাচ্ছিলেন ফ্রাঙ্কি ডি ইয়ং। রক্ষণভাগে কাটাতে গিয়ে প্রতিপক্ষের পায়ে বল তুলে দেন তিনি। তবে সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি রিয়াল। নিজে শট না নিয়ে বেনজেমাকে পাস দিতে গিয়ে ভুল করে ফেলেন লুকা মদ্রিচ। পেছনের দিকে পাস দিলে তা নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি বেনজেমা। উল্টো নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পরে যান। তবে বল পেয়ে গিয়েছিলেন বেল। কিন্তু তার শট দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক ওনানা।

৮৬ মিনিটে দিনের সেরা সুযোগটি মিস করেন জিয়েখ। তাদিচের ক্রস থেকে ছোট ডিবক্সে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন তিনি। গোলরক্ষকও ছিলেন না। কিন্তু তার শট বার পোস্টের উপর দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। অবশ্য তাতে বড় ক্ষতি হয়নি দলটির। ম্যাচের যোগ করা সময়ে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে বহিষ্কার হন নাচো ফের্নাদেজ। ৪-১ গোলের বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে নেদারল্যান্ডসের দলটি। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৩ গোলের ব্যবধানে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে তারা।

দিনের অপর ম্যাচে ঘরের মাঠে টটেনহ্যামের হটস্পার্সের কাছে ১-০ গোলের ব্যবধানে হেরে গেছে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-০ গোলের ব্যবধানে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে ছিটকে গেল দলটি।

Comments

The Daily Star  | English

How Hasina’s flight was kept off radar

Zgitalyma Islam and Partha Pratim Bhattacharjee.When the air force transporter plane carrying Sheikh Hasina left Dhaka on August 5, it took off as a training flight and turned off its transponders to blur its flightpath and location..The transponders, which transmit location, heading

3h ago