অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ডাকসু নির্বাচন

দেশের সকল নির্বাচনে স্বচ্ছ প্লাস্টিকের ব্যালট বাক্স ব্যবহার করা হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে তার ব্যতিক্রম হতে চলেছে। স্বচ্ছ নির্বাচন নিয়ে যখন ঢাবির বেশিরভাগ ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন আশঙ্কা প্রকাশ করছে তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে নির্বাচন করার প্রায় সব আয়োজন চূড়ান্ত করে ফেলেছে।
সিনেট ভবনের তৃতীয় তলায় ডাকসু নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে স্টিল শিটের তৈরি এই ব্যালট বাক্সগুলো রাখা হয়েছে। ছবি: আশিক আব্দুল্লাহ অপু

দেশের সকল নির্বাচনে স্বচ্ছ প্লাস্টিকের ব্যালট বাক্স ব্যবহার করা হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে তার ব্যতিক্রম হতে চলেছে। স্বচ্ছ নির্বাচন নিয়ে যখন ঢাবির বেশিরভাগ ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন আশঙ্কা প্রকাশ করছে তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে নির্বাচন করার প্রায় সব আয়োজন চূড়ান্ত করে ফেলেছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ডাকসু নির্বাচন সংশ্লিষ্ট একজন শীর্ষ কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনে স্টিলের বাক্সই ব্যবহৃত হয়। দীর্ঘদিন যাবত এই বাক্সগুলোই ব্যবহার হচ্ছে। এটা নতুন কিছু নয়। ঢাবি শিক্ষক সমিতি নির্বাচন ও রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচনে এই বাক্সগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এবার ভোটার সংখ্যা বেশি হওয়ায় নতুন কিছু বাক্স তৈরি করা হয়েছে।”

এ ব্যাপারে চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানকে ফোন করা হলে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট একজন শিক্ষক জানান, যেহেতু ব্যালটগুলো ভাঁজ করা যাবে না এবং ওএমআর মেশিনে ভোট গণনা করা হবে তাই ব্যালট রাখার জন্য এই ধরনের বাক্সই উপযুক্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নির্বাচনেই এই ধরনের বাক্স ব্যবহার হয়ে আসছে কিন্তু নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে কখনওই প্রশ্ন ওঠেনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের তৃতীয় তলায় ডাকসু নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে স্টিল শিটের তৈরি এ ধরনের বেশ কয়েকটি বাক্স এনে রাখা হয়েছে। আগামী ১১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে স্থাপন করা ভোটকেন্দ্রে প্রায় ৪৩ হাজার শিক্ষার্থী এসব বাক্সে ব্যালট পেপার জমা করবেন।

নির্বাচনে অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যাবহারের ব্যাপারে প্রার্থীরা কতটা অবগত? ঢাবিতে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত প্রগতিশীল ছাত্র জোট ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য মনোনীত সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী লিটন নন্দী এবং বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ থেকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন বলেন অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহারের ব্যাপারে তারা আগে থেকে কিছুই জানতেন না।

লিটন নন্দী বলেন, “শুধু ব্যালট বাক্স না পুরো নির্বাচন নিয়ে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হচ্ছে প্রশাসন। নির্বাচনের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ সংগ্রহে আসা সাংবাদিকদের সংখ্যা সীমিত করে দেওয়া এরই একটি অংশ।”

এই অবস্থায় নির্বাচনে অনিয়ম ও ভোট কারচুপির আশঙ্কা করছেন এই ছাত্র নেতা।

আর রাশেদের অভিযোগ, “ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে সুবিধা করে দিতেই অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা প্রতিবাদ জানাব।”

এ বিষয়ে মতামত জানার জন্য ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসু নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদ প্রার্থী গোলাম রাব্বানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ডাকসু নির্বাচনে সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদপার্থী সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

7h ago