অস্ট্রেলিয়ায় ‘ডিম যুদ্ধ’!
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছিলেন অস্ট্রেলীয় সিনেটর ফ্র্যাসার অ্যানিং। তার মন্তব্য প্রকাশের দিনেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার নিন্দা করেছেনে অনেকেই। তাতেই শান্ত হয়নি পরিস্থিতি। বরং ঘটনার পরদিন (১৬ মার্চ) মেলবোর্নে এক সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে কথা বলতে গিয়ে তিনি শিকার হন ‘ডিম হামলার’। সেই হামলা এখন অস্ট্রেলিয়ায় রূপ নিয়েছে ‘ডিম যুদ্ধের’।
সারাবিশ্বের মানুষ ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে দেখেছেন কীভাবে সেই সিনেটরের মাথায় ডিম ফাটিয়েছে এক কিশোর। আরও দেখা গিয়েছে সেই কিশোর প্রতি সিনেটর অ্যানিংয়ের আক্রোশের দৃশ্যও। উপরন্তু, সিনেটরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা হামলে পড়ে কিশোরের ওপর। সেসব দৃশ্য দেখে আরও বিপাকে পড়েছেন অস্ট্রেলীয় রাজনীতিক।
নিউজিল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড আজ (১৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে জানায়, ১৭ বছরের এক কিশোরের ওপর হামলা ও তাকে নোংরা কথা বলার জন্যে সিনেটর ফ্র্যাসার অ্যানিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের দাবি তুলছে অস্ট্রেলিয়ার জনগণ।
এতে আরও বলা হয়- চার্জডটঅর্গের মাধ্যমে অন্তত ৫ লাখ ব্যক্তি আবেদন করেছেন সেই রাজনীতিবিদকে পার্লামেন্ট থেকে বহিষ্কার করার। একই সঙ্গে সেই কিশোরকে দেওয়া হচ্ছে ‘বীরের’ সম্মান। সেই কিশোরের ওপর সিনেটর ও তার লোকদের আক্রমণকে ‘নিষ্ঠুর’ বলে অভিহিত করেছেন অনেকেই।
অস্ট্রেলিয়ার একজন সিনেটর ডেরিন হিঞ্চ এক টুইটার বার্তায় লিখেছেন, “সিনেটর অ্যানিংয়ের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলে তার প্রবৃত্তিগতভাবে। কিন্তু, তার গুণ্ডাদের প্রতিক্রিয়া ছিলো মাত্রাতিরিক্ত।”
ভিক্টোরিয়া প্রদেশের পুলিশ জানিয়েছে তারা পুরো ঘটনাটির তদন্ত করছে।
এদিকে, একটি তহবিল সংগ্রহকারী সংস্থা কিশোরের পক্ষে আইনি লড়াই এবং আরও ডিম কেনার জন্যে অর্থ সংগ্রহ করতে শুরু করেছে।
গত ১৭ ঘণ্টায় ‘গোফান্ডমি’ প্রচারণার মাধ্যমে সংস্থাটি ২ হাজার মার্কিন ডলার সংগ্রহ করতে গিয়ে ১৪ হাজার মার্কিন ডলার হাতে পেয়েছে।
অর্থদানকারীরা ছেলেটির সাহসিকতার জন্যে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। সিনেটর অ্যানিংকে উদ্দেশ্য করে কেউ কেউ বলেছেন, ‘তরুণ প্রজন্ম লড়াইটা চালিয়ে যাবে’।
অস্ট্রেলিয়ার সব রাজনৈতিক দল, মূলস্রোতের গণমাধ্যমের পাশাপাশি দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনও সিনেটর অ্যানিংয়ের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
এদিকে, সিনেটর অ্যানিংয়ের একজন মিডিয়া উপদেষ্টা গতকাল সংবাদমাধ্যম নিউজডটকমডটএইউ-কে বলেন, সিনেটরের মন্তব্য নিয়ে কোনো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হয়নি, শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু সময় হৈচৈ হয়েছে মাত্র।
আরও পড়ুন:
নিউজিল্যান্ডের হামলা নিয়ে মন্তব্য করায় তোপের মুখে অস্ট্রেলীয় সিনেটর
Comments