জিদান বোঝালেন তিনিই রিয়ালের আসল ‘বস’
১. ম্যাচের ১৬তম মিনিটে পিছিয়ে পড়তে পারতো রিয়াল মাদ্রিদ। মাক্সি গোমেজের হেড অবিশ্বাস্য দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে পাঞ্চ দিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক কেইলর নাভাস।
২. প্রথমার্ধে ভালো খেলেও গোলের দেখা মেলেনি রিয়ালের। ৬২তম মিনিটে ইসকোর গোলে অপেক্ষার অবসান হয় দলটির। প্রতিপক্ষের একাধিক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে বাঁ প্রান্তে ডি-বক্সের মধ্যে পাস দেন মার্কো আসেনসিও। বল ধরে গোলমুখে বল বাড়ান করিম বেনজেমা। ছুটে এসে আলতো টোকায় লক্ষ্যভেদ করেন ইসকো।
৩. ৭৭তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে রিয়াল। গোল করলেন গ্যারেথ বেল। তবে এ বলের জোগান দিয়েছেন মার্সেলো। তার পাস পেয়ে প্লেসিং শটে বল জালে পাঠান এ ওয়েলস তারকা।
ম্যাচের অন্যতম সেরা তিনটি মুহূর্ত। আর এ তিনটি মুহূর্তের নায়ক এমন তিনজন যারা কিনা আগের কোচের অধীনে খেলার সুযোগই পাচ্ছিলেন না। এক প্রকার বাতিলের খাতাতেই পড়েছিলেন। এমনকি দল ছাড়তে দলও খুঁজছিলেন তারা। রিয়ালের অন্যতম সফল কোচ জিনেদিন জিদানের ফেরাতেই যেন বদলে গেল সব। অফফর্মের ট্যাগ যাদের গায়ে লাগানো হয়েছে তারা বুঝিয়ে দিয়েছেন আস্থা রাখলে তারাই হতে পারেন অপ্রতিরোধ্য।
আড়াই বছরে তিন তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন। সব মিলিয়ে জিতেছেন নয়টি শিরোপা। এমন কীর্তি নেই ফুটবল ইতিহাসে আর কারোরই। অথচ সেই কোচকেই ধরে রাখতে পারেনি রিয়াল। মাঝে জুলেন লোপেতেগির পর সান্তিয়াগো সোলারিও দায়িত্ব নিয়েছেন। কিন্তু রিয়ালের সংগ্রাম থামেনি। একের পর এক ম্যাচ হেরেছেন। এমনকি ঘরের মাঠেও পাত্তা পায়নি। ফিরলেন জিদান, আগের মতো করেই। আগের দিনের ফলাফলটা হয়তো ২-০ গোলের, তবে ম্যাচ জিতেছে তারা দাপটের সঙ্গেই।
জিদান ফিরছেন বলে যে দলে পরিবর্তন আসবে তা এক প্রকার অনুমিতই ছিল। এদিন প্রথম একাদশে ফিরেছেন মার্সেলো, মার্কো আসেনসিও, গ্যারেথ বেল ও কেইলর নাভাসরা। আর তারাই ম্যাচের গল্পটা বদলে দিলেন। আর তাদের ফেরানোর যুক্তি যতো না কাজ করেছে তার চেয়ে বেশি কাজ করেছে বিশ্বাস। কারণ মার্সেলো ও নাভাস যে জায়গা হারিয়েছেন রিগুলন ও থিবো কর্তুয়ার কাছে। দুই জনই নিজেদের প্রমাণ করেছিলেন। আর শুধু খেলোয়াড় বদলও নয়। নিজের পছন্দের ৪-৪-২ ফরমেশনের বদলে জিদান আগের দিন খেলিয়েছেন ৪-২-৩-১ ফরমেশনে।
আর তাতেই বুঝিয়ে দিয়েছেন রিয়ালের আসল বস জিদানই। দলের এমন সময়ে কোথায় কি করতে হবে তা তার ভালোই জানা আছে। আর তাতে আক্ষেপে পুড়তে পারেন সমর্থকরা। ইশ! আর কয়টা দিন আগে ফিরলে কি হতো? তাহলে হয়তো তিনটি শিরোপা জয়ের স্বপ্নই টিকে থাকতো। এখন তো কেবল আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা ধরে রাখাই লক্ষ্য।
Comments