বনানীর আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৯

রাজধানীর বনানীতে বহুতল এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে ১৯ জন নিহত হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে একজন শ্রীলঙ্কার নাগরিক। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৭০ জন।
ছবি: পলাশ খান

রাজধানীর বনানীতে বহুতল এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে ১৯ জন নিহত হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে একজন শ্রীলঙ্কার নাগরিক। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৭০ জন।

হতাহতের খবর জানাতে এফআর টাওয়ারের পাশে মিডিয়া সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। সেখান থেকে সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত করা  হয়েছে।

নিহতদের মধ্যে ছয় জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন, পারভেজ সাজ্জাদ (৪৭), আমিন ইয়াসমিন (৩০), মাসুদ (৩৬), নিরস চন্দ্র (৩০), আব্দুল্লাহ আল ফারুক (৩২), মাকসুদুর (৩৬) ও মনির (৫০)। পুলিশ সূত্রে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এদের মধ্যে নিরস চন্দ্র শ্রীলঙ্কার নাগরিক। আগুন থেকে রক্ষা পেতে লাফিয়ে পড়ে প্রাণ হারান তিনি। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রি. জে. কাজি রশিদ-উন-নবী বলেন, নিরসকে যতক্ষণে হাসপাতালে আনা হয় ততক্ষণে তিনি আর জীবিত ছিলেন না।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারির প্রধান সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আগুনে ফারুকের শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে তিনি মারা যান।

নিহত অন্যদের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

ভবনের কাঁচ ভেঙে ধোঁয়া থেকে বাঁচার চেষ্টা একজনের। ছবি: পলাশ খান

অন্যদিকে, গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনটি মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গুলশান থানা থেকে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে।

দমকল বাহিনীর সদরদপ্তর থেকে ডিউটি অফিসার মোহাম্মদ রাসেল দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, দমকল বাহিনীর ২১টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করেছে। 

আমাদের সংবাদদাতারা জানান, পানির অভাবে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে দমকল বাহিনীর সদস্যদের। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার প্রানান্তকর চেষ্টার পর বিকেল পৌনে ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

হেলিকপ্টার থেকেও ভবনটিতে পানি ঢালা হয় উল্লেখ করে তারা জানান, দমকল বাহিনীর সদস্যরা মই ব্যবহার করে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করার চেষ্টা করেছেন।

এফআর টাওয়ারটি বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউতে অবস্থিত। ২২-তলা ভবনটির অষ্টম তলায় আগুন লাগে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। আগুনের তাপে ভবনের কাঁচ ভেঙ্গে পড়তে দেখা যায়।

ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভবনটিতে অফিস ও রেস্টুরেন্ট আছে। আগুন লাগার সময় ভবনের ভেতরে অনেক লোকজন ছিলেন। আগুন থেকে বাঁচতে একাধিক ব্যক্তিকে ভবনটি থেকে লাফিয়ে পড়তে দেখা গেছে। তবে লাফিয়ে পড়াদের পরিণতির ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ছবি: পলাশ খান

টাওয়ারের ভেতর আটকে পড়া স্বজনদের জন্যে রাস্তায় অপেক্ষারত ব্যক্তিদের আর্তনাদ করতে দেখা যায়।

আজ (২৮ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে এফআর টাওয়ারের ৮ম তলায় আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানা যায়। তবে আগুন লাগার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।

আরও পড়ুন:

বনানীর এফআর টাওয়ারে আগুন

Comments