ইমরুল-জহুরুলের সেঞ্চুরিকে ম্লান করে দিলেন মাশরাফি
সাভারের বিকেএসপিতে আগে ব্যাট করে ২৮৬ রান। ব্যাটিং স্বর্গে এ আর এমন কি? স্বাভাবিক ব্যাট করলেই হয়ে যেত গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের। কিন্তু তার আর হতে দিলেন কই মাশরাফি বিন মুর্তজা। বল হাতে আগুন ঝরালেন। তাতেই পুড়ে ছাই গাজী গ্রুপ। ২৯ রানের দারুণ এক ম্যাচ জিতে নেয় আবাহনী লিমিটেড। ফলে শীর্ষেই রইল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
এদিন দারুণ এক সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন গাজী গ্রুপের ইমরুল কায়েস। সেঞ্চুরি করেছিলেন আবাহনীর জহুরুল ইসলামও। কিন্তু এ দুই ব্যাটসম্যানের কীর্তিকে ছাপিয়ে ম্যাচের সব আলো কেড়ে নেন মাশরাফি। দারুণ বোলিং করে ৪৬ রানের খরচায় একাই তুলে নিয়েছেন ৬টি উইকেট। লিস্ট এ ক্রিকেটে এ নিয়ে ষষ্ঠবার পাঁচ উইকেট পেলেন তিনি। এরমধ্যে চারবার নিয়েছেন ছয়টি করে উইকেট।
আবাহনীর দেওয়া ২৮৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই রনি তালুকদারকে তুলে নেন মাশরাফি। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ৫৩ রানের জুটিতে প্রতিরোধ। সে জুটিও ভাঙেন মাশরাফি। তবে তৃতীয় উইকেটে শামসুর রহমানের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়েন ইমরুল কায়েস। ৯৩ রানের জুটিতে দলকে জয়ের পথেই রাখেন তারা। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউটে কাটা পড়েন শামসুর। তাতেই দারুণভাবে ম্যাচে ফেরে আবাহনী। এরপর আবারো তোপ দাগান মাশরাফি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নিয়ে ২৯ রান দূরে থাকতে গাজী গ্রুপকে অলআউট করে দেন ৪৮.৪ ওভারে।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১২৬ রানের ইনিংস খেলেন ইমরুল। ১১৮ বলে ১৫টি চার ও ৫টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। তবে দলের অন্যান্য ব্যাটসম্যানদের সমর্থন তেমন পাননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৯ রান করেন তৌহিদ আজিজ। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন পান ২টি উইকেট।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালোই করে আবাহনী। ৬৬ রানের ওপেনিং জুটি এনে দেন সৌম্য সরকার ও জহুরুল ইসলাম। এরপর সৌম্যর বিদায়ে কিছুটা ধাক্কা। তবে চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সঙ্গে জহুরুলের দারুণ এক জুটি। ১৪৫ রান করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। তবে রানের গতি সে অর্থে বাড়াতে পারেননি। ফলে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৮৬ রানের বেশি করতে পারেনি আবাহনী।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১৩০ রানের ইনিংস খেলেন জহুরুল। ১৩৮ বলে ১৪টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন তিনি। এছাড়া মোসাদ্দেকের ব্যাট থেকে আসে ৭১ রান। ৭৬ বলে ৮টি চারে এ রান করেন এ অলরাউন্ডার। গাজী গ্রুপের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন কামরুল ইসলাম রাব্বি ও নাসুম আহমেদ।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের অপর ম্যাচে দারুণ জয় পেয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবকে ৭২ রানে হারিয়ে আবাহনীর সঙ্গেই রইল দলটি। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে শাহরিয়ার নাফীস ও পাকিস্তানি আকবর-উর-রেহমানের হাফসেঞ্চুরিতে ৯ উইকেটে ২৬৫ রান করে রূপগঞ্জ। জবাবে মোহাম্মদ শহীদের বোলিং তোপে ২৪ বল বাকী থাকতেই ১৯৩ রানে অলআউট হয়ে যায় দোলেশ্বর।
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে দিনের অপর ম্যাচে জয় পেয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতিকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে তারা। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ১৮৩ রান করে খেলাঘর। জবাবে ৮ ওভার হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় শেখ জামাল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আবাহনী: ৫০ ওভারে ২৮৬/৬ (জহুরুল ১৩০, সৌম্য ২৯, ওয়াসিম ১৯, শান্ত ১১, মোসাদ্দেক ৭১, সাব্বির ১, সাইফউদ্দিন ০*, মিরাজ ৬*; আবু হায়দার ১/৬১, কামরুল রাব্বি ২/৭০, মেহেদি ০/৫১, মাইশুকুর ০/১০, রসুল ১/৩৪, সাজ্জাদুল ০/৮, নাসুম ২/৪৭)।
গাজী গ্রুপ: ৪৮.৪ ওভারে ২৫৭ (রনি ০, মাইশুকুর ১৫, ইমরুল ১২৬, শামসুর ৩০, রসুল ১, তৌহিদ ৩৯, মেহেদি ১০, সাজ্জাদুল ১৪, আবু হায়দার ১৬*, কামরুল রাব্বি ১, নাসুম ০; মাশরাফি ৬/৪৬, সাইফউদ্দিন ২/৬৩, মিরাজ ০/৫৪, নাজমুল অপু ০/৩১, সৌম্য ০/৩৮, সানজামুল ১/১৭, শান্ত ০/৭)।
ফলাফল: আবাহনী লিমিটেড ২৯ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মাশরাফি বিন মুর্তজা
Comments